পূর্ত দফতরের জমি নিয়ে জটিলতা
ধাবা নয়, বনগাঁ চায় বাস টার্মিনাস
ত্তর ২৪ পরগনার সীমান্তবর্তী মহকুমা শহর বনগাঁয় যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। যার অন্যতম প্রধান কারণ এখানে কোনও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস না থাকা। ফলে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে বাসস্ট্যান্ড। বনগাঁ শহরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন একটি কেন্দ্রীয় বাস টামির্নাসের। নির্বাচন এলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে এ ব্যাপারে বহু প্রতিশ্রুতিও পেয়েছেন এখানকার মানুষ। কিন্তু বাস্তবে বাস টার্মিনাস আর পাওয়া যায়নি।
রাস্তার উপর এ ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে বাস।
রাজ্যে সরকার বদলের পর বহু পুরনো এই দাবি নিয়ে ফের সরব হয়েছেন বনগাঁর মানুষ। ২০১০ সালে বনগাঁয় পুরনির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোট। পুরসভার চেয়ারম্যান হন তৃণমূলের জ্যোৎস্না আঢ্য। ক্ষমতায় আসার পরে বাস টার্মিনাস তৈরি নিয়ে উদ্যোগী হয় পুর কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন তৃণমূলের বিশ্বজিৎ দাস। তিনিও এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন। কিন্তু যাবতীয় উদ্যোগ সত্ত্বেও মূল সমস্যা জমির কারণে বাস টার্মিনাস তৈরির কাজ এতটুকু এগোয়নি। স্থানীয় চাঁপাবেড়িয়া এলাকায় পূর্ত দফতরের একটি জমি রয়েছে। সেখানে বাস টার্মিনিাস তৈরির প্রাথমিক পরিকল্পনা করে পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই জমিতে বাস টার্মিনাস তৈরির বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসকের দফতরে বৈঠক হয়েছিল। জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, “বনগাঁর তদানীন্তন মহকুমাশাসক অভিজিৎ ভট্টাচার্য পূর্ত দফতরের ওই জমিতে বাস টার্মিনাস তৈরির আবেদন জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠিও দেন। কারণ ওই জমি ছাড়া বনগাঁ শহর লাগোয়া আর কোনও জমি নেই। অথচ ওই জমিতে এখন ধাবা তৈরির পরিকল্পনা করছে পূর্ত দফতর।”
পূর্ত দফতরের এ হেন পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই জমিতে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস তৈরির দাবিতে একটি নাগরিক মঞ্চ গড়ে আন্দোলনও শুরু করেছেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তাঁরা গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন বনগাঁর মহকুমাশাসকের কাছে। জমির সামনে বাস টার্মিনাসের দাবিতে টাঙানো হয়েছে ব্যানার, পোস্টার। দাবির সপক্ষে বিরাম নেই মিছিল, প্রতিবাদ সভারও।
বাস টার্মিনাসের দাবিতে বনগাঁ নাগরিক মঞ্চের পোস্টার।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, সীমান্তবর্তী এই শহরে রয়েছে দেশের অন্যতম প্রধান আন্তর্জাতিক স্থলবাণিজ্যকেন্দ্র। সে জন্য শহরের উপর দিয়ে নিত্য শ’য়ে শ’য়ে পণ্যবোঝাই ট্রাক চলাচল করে। পাশাপাশি কলকাতা ও জেলার অন্যান্য অংশের সঙ্গে যোগাযোগকারী প্রচুর বাসও চলাচল করে। কিন্তু নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাস না থাকায় রাস্তার উপরেই যেখানে সেখানে বাস দাঁড়িয়ে থাকায় দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। তাই পূর্ত দফতরের ওই জমিতে বাস টার্মিনাস হবে জেনে তাঁরা আশান্বিত হয়েছিলেন। কিন্তু পরে শোনেন সেখানে ধাবা তৈরি হবে। তাঁদের পাল্টা প্রস্তাব, ওই জমিতে বাস টার্মিনাস তৈরি করে তার উপরে ধাবা তৈরি করা যেতে পারে। তাতে যেমন বাস টার্মিনাসের সমস্যা মিটবে, তেমনই ধাবাও তৈরি হবে। এ নিয়ে তাঁরা স্মারকলিপিও দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক এবং জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ সংস্থায় সরকারি সদস্য গোপাল শেঠের কাছে।
বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তবে ওখানে বাস র্টামিনাস হবে না কি ধারা, সে ব্যাপারে সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে।” পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, হাইওয়ের ধারে যাত্রীদের সুবিধার্থে ধাবা বা মোটেল তৈরির বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর ‘ড্রিম প্রজেক্ট’। ওখানে জমির পরিমাণ তিন একরেরও বেশি। তবে ওই জায়গায় বাস টার্মিনাস হবে না কি ধাবা তা সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে জ্যোৎস্নাদেবীর পাল্টা প্রস্তাব, “পূর্ত দফতরের ওই জমির পাশেই পুরসভার একটি জমি রয়েছে। সেখানেও ধাবা তৈরি হতে পারে। বিষয়টি জেলাশাসককেও জানানো হয়েছে।” তা হলে ওই জমিতেই বা কেন তাঁরা বাস চার্মিনাস তৈরি করছেন না? এর উত্তরে জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, “ওই জমির পরিমাণ বেশি নয়। তাই ওখানে বাস টার্মিনাস করা যাবে না।”

ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.