|
|
|
|
রাজীবের অন্য ৪ খুনির মুক্তিতেও স্থগিতাদেশ |
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৭ ফেব্রুয়ারি |
মৃত্যুদণ্ড মকুব হওয়া রাজীব গাঁধীর তিন হত্যাকারীর মুক্তি আগেই স্থগিত করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আজ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অন্য চার জনের মুক্তির উপরেও স্থগিতাদেশ দিল তারা। এখনই এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকতে তামিলনাড়ু সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৬ মার্চ শীর্ষ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারের আবেদন শুনবে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছিলেন, রাজীব হত্যায় দোষী সাত জনকেই মুক্তি দিতে চায় রাজ্য সরকার। এ জন্য কেন্দ্রের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তবে অনুমতি না মিললেও তিন দিনের মধ্যে বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল কেন্দ্র। জয়ললিতার ঘোষণার পর দিনই রাজীবের তিন হত্যাকারী মুরুগন, শান্তন এবং পেরারিবালনের মুক্তিতে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
তবে কেন্দ্রের আবেদনের পাল্টা তামিলনাড়ু সরকার জানিয়েছিল, এই বিষয়ে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতেই পারে না।
রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীদের মুক্তির বিরোধিতা করে কেন্দ্র কেন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে, সে ব্যাপারেও প্রশ্ন তুলেছে তামিলনাড়ু। “রাজ্যের চিঠির জবাব না দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কেন সুপ্রিম কোর্টে দৌড়ল?” এ দিন আদালতে প্রশ্ন ছিল রাজ্য সরকারের। যার জবাবে বিচারপতি সদাশিবমের বেঞ্চ উল্টে তাদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলেছে, “কেন্দ্র দৌড়চ্ছে না আপনারা দৌড়চ্ছেন?” পরে বেঞ্চ জানায়, আবেদনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের এক্তিয়ারের বিষয়টি কোর্টই খতিয়ে দেখবে।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে কংগ্রেসে এক বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং সহ-সভাপতি রাহুল-সহ দলের শীষর্স্থানীয় নেতারা। তামিলনাড়ু সরকারের ঘোষণার পরে রাহুল প্রকাশ্যে তার সমালোচনা করে বলেছিলেন, “আমার বাবা শহিদ হয়েছিলেন। তবু ব্যক্তিগত ভাবে আমি মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে নই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকারীদের যদি মুক্তি দেওয়া হয়, তা হলে সাধারণ মানুষ কী বিচার প্রত্যাশা করবেন?” সেই প্রসঙ্গে এ দিন পুদুচেরির কংগ্রেস নেতা নারায়ণস্বামী বলেন, রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীদের ছেড়ে দেওয়ার মতো বিতর্কিত বিষয়ে আরও জোরদার প্রচার চালানো উচিত। তাঁর মতে, রাজীব গাঁধীকে নিয়ে গোটা দেশেই অন্য রকম ভাবাবেগ কাজ করে। লোকসভা ভোটের আগে সেই ভাবাবেগ কাজে লাগিয়ে কিছুটা সহানুভূতি পেতে পারে কংগ্রেস। নারায়ণস্বামীর প্রস্তাবে সায় দেন সব নেতা।
তবে অনেকের ধারণা, কংগ্রেস যেমন সর্বভারতীয় স্তরে রাজীব-প্রশ্নে সহানুভূতি পেতে চাইছে, তেমনই জয়ললিতাও লোকসভা ভোটের আগে তামিল আবেগকে উস্কে দিতেই হত্যাকারীদের মুক্তির কথা ঘোষণা করেছেন। এবং তাঁরা মনে করছেন, যা ফায়দা তোলার, তা ইতিমধ্যেই তুলে নিয়েছেন তিনি। ভোটের মুখে রাজীবের খুনিদের মুক্তির কথা ঘোষণা করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যেটুকু ফায়দা তোলার, তা জয়ললিতা হাসিল করেই নিয়েছেন। |
|
|
|
|
|