নিকাশি নালা নেই, জল জমেও নষ্ট অনেক আলু
কে তো নিচু এলাকায় চাষের জমি, তার উপর স্থায়ী নিকাশি নালাও নেই। ফলে বৃষ্টি হলেই ফসল নিয়ে মুশকিলে পড়ছেন কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের পাঁচ গ্রামের চাষিরা। তার মধ্যে আলু চাষের মরসুমে নাবিধসার প্রকোপ আর আবহাওয়ার তারতম্য দুইয়ের মিলিত প্রভাবে হৃদয়পুর মৌজার প্রায় একশো বিঘে জমির আলু পচে গিয়েছে বলেও চাষিদের দাবি। ক্ষতি হয়েছে বেশ কিছু সর্ষে জমিতেও। ক্ষুব্ধ চাষিরা নিকাশি নালার দাবিতে পঞ্চায়েতে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
এভাবেই জমির মাঝে অস্থায়ী নালা কেটে জল বের করা হচ্ছে হৃদয়পুরে। —নিজস্ব চিত্র।
ওই পঞ্চায়েত এলাকার হৃদয়পুর, ভৈরবনালা, বেলের হল্ট, উপলতি ও তেতুঁলপুকুর গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হাজার বিঘেরও বেশি চাষের জমি রয়েছে। চাষিদের দাবি, এলাকা নিচু হওয়ায় চাষের মাঠটিকে নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। টানা কয়েকঘণ্টা বৃষ্টি হলেই মাঠটি জলে ডুবে যায় বলে তাঁদের দাবি। নিকাশি নালা না থাকায় সহজে জল বের করাও যায় না। ফলে ধান, আলু, সর্ষে থেকে অন্যান্য সব্জি সবই তলিয়ে যায় জমা জলে। চাষিদের দাবি, বর্ষায় বহুবার ধানের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। জল বের করার পরে দেখা গিয়েছে অধিকাংশ চারাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বছর ছয়েক আগে অবশ্য সমস্যাটা এতটা ছিল না। চাষিরা জানান, প্রথমে উঁচু জমি পরে নিচু জমির পাশ দিয়ে জমা জল পড়ত কাছাকাছি ভল্লুকা নদীতে। কিন্তু জনাকয়েক চাষি চাষের স্বার্থে জমি উঁচু করতেই সমস্যা বড় আকার নিয়েছে। দীর্ঘক্ষণ ধরে মাঠেই জমে থাকছে জল।
সম্প্রতি দিন তিনেকের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে যায় হৃদয়পুর মৌজার ওই জমি। ওই মৌজায় হৃদয়পুর ছাড়াও উপলতি, বেলেরহাট ও ভৈরবনালা গ্রামের বেশ কিছু চাষির জমি রয়েছে। জল বের করার জন্য চাষিরা নিজেরাই অস্থায়ী নালা তৈরি করেন। নদীমুখী ওই নালা দিয়ে কিছুটা জল বের করা গেলেও আলু চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে চাষিদের দাবি। এলাকার হরিসাধান ঘোষ, আশিস ঘোষ, রণজিৎ প্রামাণিক, মহানন্দ ঘোষদের দাবি, জল জমে থাকায় প্রায় একশো বিঘা জমির আলু মাঠেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। উপরে সবুজ গাছ দেখা গেলেও আলু তুলতে গেলেই দেখা যাচ্ছে তা পচা। আলু চাষি সুজিত ঘোষ, বংশী ঘোষদের কথায়, “খেতমজুর থেকে চাষের সরঞ্জাম সবেরই দাম বেড়েছে। তার উপর নাবি ধসার প্রকোপ বাড়ায় চাষিদের বাড়তি টাকা দিয়ে ওষুধও কিনতে হয়েছে। এখন যদি সব আলু পচে যায় তাহলে ভাবতেই পারছি না কি হবে।” সম্প্রতি এলাকার প্রায় দু’শও চাষির সাক্ষর করা স্মারকলিপি জমা পড়ে সুলতানপুর পঞ্চায়েতে। চাষিদের দাবি, নালা না থাকায় ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। অবিলম্বে পঞ্চায়েত পদক্ষেপ করুক। পঞ্চায়েতের পাশাপাশি ব্লক অফিস, কৃষি দফতর, পঞ্চায়েত সমিতি ও এলাকার বিধায়ক তথা ক্ষুদ্র, কুটির ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকেও বিষয়টি জানিয়েছেন তাঁরা।
সুলতানপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুর আলি শেখ বলেন, “চাষিদের দাবি অনুযায়ী ওই মাঠে একটি নিকাশি নালা খুবই দরকার। আমরা একশো দিনের প্রকল্পে তা করার চেষ্টা করছি।” কালনা মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হৃদয়পুর মৌজায় আলু চাষে কতটা ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে ওই এলাকার কৃষি প্রযুক্তি সহায়ককে একটি রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। তবে কর্তাদের ধারণা, ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.