টিএমসিপির কোন্দল
অনাস্থা আনতে চেয়ে চিঠি বিদ্যাসাগরে
গোষ্ঠী কোন্দলের আবহেই ছাত্র সংসদ গড়া হয়েছিল। এক মাস পেরোনোর আগেই ফের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) কোন্দল প্রকাশ্যে এল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ছাত্র সংসদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে টিএমসিপির এক গোষ্ঠী। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ বিভাগের প্রধান জয়ন্তকিশোর নন্দীর দফতরে ওই চিঠি জমা দেওয়া হয়েছে। অনাস্থা-চিঠিতে সই রয়েছে টিএমসিপির বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি তথা সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি বিশ্বনাথ দাসের। তাঁর দাবি, “সংসদে নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীরা বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষকে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে।” জবাবে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ সরকারের মন্তব্য, “এক মাসও হয়নি সংসদ গঠন হয়েছে। এ ভাবে অনাস্থা আনা যায় বলে কখনও শুনিনি। কয়েকজন ছাত্র বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে।” টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “বিষয়টি জানি। ছাত্রছাত্রীরা আমাকেও চিঠি দিয়েছে। তাদের দাবি নিয়ে সংগঠনে আলোচনা হবে।”
গত ২৭ জানুয়ারি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের মোট আসন সংখ্যা এ বার ছিল ১৪৫টি। এর মধ্যে ২টি আসনে কোনও প্রার্থী ছিল না। ১২১টি আসনে টিএমসিপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিশ্চিত করে। অর্থাৎ ভোট হওয়ার কথা ছিল ২২টি আসনে। এর মধ্যে গণিত বিভাগের ৪টি আসনে নির্বাচনের দিন একজনও ভোটার না আসায় ভোটগ্রহণ হয়নি। যে ১৮টি আসনে ভোট হয়, তার মধ্যে ডিএসও দখল করে ৮টি, টিএমসিপি ৬টি এবং নির্দল ৪টি। ৩ জন নির্দল এসএফআই সমর্থিত। ভোটের ফল পর্যালোচনা করতে বসে টিএমসিপি-র অন্দরে কোন্দল শুরু হয়। গত ২৮ জানুয়ারি ছাত্র সংসদ গঠনের দিন চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় টিএমসিপি নেতৃত্বকে। দু’টি প্যানেল জমা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসাও হয়। শেষমেশ অবশ্য একটি প্যানেলই জমা পড়ে। ১৯ জন সদস্যের ছাত্র সংসদে সাধারণ সম্পাদক হন স্বদেশ। সংগঠন সূত্রে খবর, গোড়ায় যে দু’টি প্যানেল জমা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল তার একদিকে ছিলেন টিএমসিপির জেলা সভাপতির অনুগামীরা। অন্য দিকে, বিক্ষুব্ধরা।
জেলা সভাপতির অনুগামীরা যে প্যানেল তৈরি করেছিলেন, তাতে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে টিএমসিপি-র বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট সভাপতি বিশ্বনাথের নাম প্রস্তাব করা হয়। আর বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম ছিল স্বদেশের। স্বদেশ সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরপরই বিশ্বনাথকে টিএমসিপির জেলা সহ-সভাপতি করা হয়। রাজ্য নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে তাঁর নাম জেলা সহ-সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন সংগঠনের জেলা সভাপতি।
সংসদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে ৭২ জন ছাত্রছাত্রীর সই রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, সংসদ গঠন হওয়ার ছ’মাস আগে অনাস্থা আনা যায় না। এ ক্ষেত্রে বিশ্বনাথ অনুগামীদের বক্তব্য, বর্তমান বোর্ড দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। ছাত্রছাত্রীরা তার প্রতিবাদ শুরু করেছেন। ছাত্রছাত্রীদের দাবি মেনেই অনাস্থা-চিঠি দেওয়া হয়েছে। স্বদেশ অনুগামীরা অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেও টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি গোষ্ঠী কোন্দলের কথা মানতে রাজি নন। তাঁর বক্তব্য, “এটা গোষ্ঠী কোন্দলের ব্যাপার নয়। আমি তো বলছি, কিছু আধিকারিক বর্তমান বোর্ডের কয়েকজনকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রাজনীতি করছেন! তার ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।” রমাপ্রসাদ আরও বলেন, “আমি সংসদের সাধারণ সম্পাদক এবং ইউনিট সভাপতি, দু’জনকেই বৈঠক ডাকার নির্দেশ দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে আমি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে একটি রিপোর্টও পাঠিয়েছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.