|
|
|
|
![](27khela1-logo.jpg) |
কোহলি ব্যাটিংয়ের আগ্রাসনটা
আমদানি করেছে নেতৃত্বেও
অশোক মলহোত্র |
|
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ছাড়া টুর্নামেন্ট জেতা যায় কি না, তা এই এশিয়া কাপেই বোঝা যাবে। কিন্তু ধোনি ছাড়া যে ওরা ম্যাচ জিততে পারে, তার প্রমাণ বুধবারই পাওয়া গেল। যখন বাংলাদেশকে অনায়াসে ছ’উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপ অভিযান শুরু করল বিরাট কোহলির ভারত।
কিন্তু এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জেতা আর পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে হারানো কি এক জিনিস? অবশ্যই নয়।
বাংলাদেশকে ছোট করতে চাইছি না। তবে সত্যি বলতে, সাকিব, তামিম ছাড়া ওদের ব্যাটিংয়ে সে রকম কিছু নেই। বোলিংও খুবই সাধারণ মানের। জিজ্ঞাসা করতে পারেন, তা হলে এতগুলো রান ওরা তুলল কী করে? উইকেটটা যে ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ। এমন উইকেটে বিশাল রান তুলতে খুব একটা কষ্ট করতে হয় না বোধহয়। তার উপর মুশফিকুর ও রকম একটা ক্যাপ্টেন’স নক খেলে দেওয়ায় বাংলাদেশ বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে গেল।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের এই জয় নিঃসন্দেহে টিমের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। কিন্তু পাশাপাশি আসল পরীক্ষার টেনশন একটা রয়েই গেল।
টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটা খারাপ নয়। কারণ, বিরাট জানে, ওর দল রান তাড়া করায় ওস্তাদ। এ রকম উইকেটে তো আরওই। কিন্তু বরুণ অ্যারনকে আরও বুদ্ধি করে বল করতে হবে। যে দ্বিতীয় বিমারটা দিয়ে মুশফিকুরকে আঘাত করে সাসপেন্ড হল, সেটা ওর বুদ্ধির অভাবেই। এই ব্যাপারে মহম্মদ শামির কাছে ওর শেখা উচিত। কী অসাধারণ বোলিং করে চলেছে আমাদের ছেলেটা। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ডে ভাল বল করার পর অনেকে মনে করেছিলেন উপমহাদেশের উইকেটে ও আটকে যেতে পারে। তেমন কোনও লক্ষণ দেখতে পেলেন? চার-চারটে উইকেট নিয়ে বুঝিয়ে দিল, ওর ক্লাসটা ঠিক কেমন। |
![](27khela1.jpg)
১২২ বলে ১৩৬। ছবি: এএফপি। |
এ বার আসি কোহলির কথায়।
ব্যাটসম্যান কোহলি সম্পর্কে বেশি কিছু বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। একটা ‘ওয়ান লাইনার’-এ কাজটা সেরে ফেলা যায়। ২৫ বছর বয়সে ওয়ান ডে-তে ব্যাটসম্যান কোহলি সচিন তেন্ডুলকরকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে। আঠাশ বা তিরিশেও ওর সম্পর্কে একই কথা বলা যাবে কিনা জানি না, তবে এখন এটাই সত্যি। এখনই ১৯টা ওয়ান ডে সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে। এই দাপট ভারতের আর কোনও ব্যাটসম্যানের নেই।
কিন্তু ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি সম্পর্কে এতটা দরাজ হব কী করে? প্রথম ভুলটাই তো ও করল চেতেশ্বর পূজারাকে প্রথম এগারোয় না রেখে। এই দলে পূজারার না থাকার কোনও যুক্তি নেই। যেখানে অজিঙ্ক রাহানে ভারতীয় মিডল অর্ডারের বাঁধনকে দৃঢ় করেছে, সেখানে ওর সঙ্গে পূজারা থাকলে এই জায়গাটা আরও শক্তিশালী হবে। বুধবারের ম্যাচে দরকার হয়নি ঠিকই, তবে পরের ম্যাচে হতেও পারে। তা ছাড়া এখন থেকেই তো বিশ্বকাপ দল নিয়ে ভাবা শুরু করার সময়। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের উইকেটে পূজারাকে লাগবে। ওকে এখনই পরিকল্পনার মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। হয়তো সিদ্ধান্তটা কোহলির একার নয়। তবে মনে হচ্ছে ভারতের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি এখনও শুরু হয়ে ওঠেনি।
আরও একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম কোহলির ক্যাপ্টেনশিপে। দলের অনেকেই এসে দফায় দফায় ওকে পরামর্শ দিচ্ছে। যেটা ধোনি থাকলে হয় না। হয়তো কোহলি দলের মধ্যে নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চাইছে। কিন্তু ক্যাপ্টেনের মাঠে দাঁড়িয়ে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাঠিন্যটা থাকা উচিত। প্রয়োজনে কখনও হয়তো ওকে দলের একজন বা দু’জন সিনিয়রের সঙ্গে পরামর্শ করতে হতেই পারে। কিন্তু সব সময়ই কেউ না কেউ এসে ওকে কিছু বলে যাচ্ছে, এটা বোধহয় ঠিক না।
ধোনির টিম ইন্ডিয়ার চেয়ে কোহলির টিম ইন্ডিয়ার ‘অ্যাপ্রোচ’ কিছুটা অন্য রকম। কোহলির ফিল্ড প্লেসিং ও বোলার পরিবর্তনের মধ্যে একটা আগ্রাসী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, ইদানীং ধোনির ক্যাপ্টেনশিপে যা ছিল না। ব্যাটিংয়ের আগ্রাসনটা কোহলি বোধহয় ওর নেতৃত্বেও আমদানি করছে। ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে এটা ভাল খবর। আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজানো, স্লগ ওভারের জন্য পেসারদের ওভার বাঁচিয়ে রাখার প্রবণতা এ সব দেখেই বোঝা যাচ্ছে ব্যাপারটা।
সব মিলিয়ে দলটার মধ্যে আগের চেয়ে আরও বেশি প্রাণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। সব সময় একটা কুঁকড়ে থাকা বা ইতস্তত করা, এ সব নেই কোহলির টিম ইন্ডিয়ার মধ্যে।
|
• বাংলাদেশের মাঠে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি (৫) করলেন বিরাট কোহলি।
• রোহিত শর্মার চেয়ে এগারোটা বেশি ওয়ান ডে ইনিংস খেলেছেন কোহলি। ম্যাচের ব্যবধান কম হলেও দু’জনের রান পার্থক্য ২২৪১। রোহিত ১২০ ম্যাচে ৩৩৪০ রান, কোহলি ১৩১ ম্যাচে ৫৫৮১।
• কোহলির পর দ্রুততম ১৯ সেঞ্চুরির তালিকায় থাকা ক্রিস গেইল তাঁর চেয়ে ৬৫টা ইনিংস বেশি খেলে ১৯ সেঞ্চুরি করেছেন। তালিকায় প্রথম চারে কোহলি (১২৪ ইনিংস), গেইল (১৮৯), সচিন তেন্ডুলকর (১৯৪) ও সইদ আনোয়ার (২০৮)। |
বিদেশে শেষ ১০ ওয়ান ডে ইনিংসে মোট রান ৫৪০। গড় ৬০। সেঞ্চুরি ২। হাফসেঞ্চুরি ৩।
যখনই ভাল কিছু করি, সেটা আমার বাবাকে উৎসর্গ করি। আজ আমি যেখানে দাঁড়িয়ে, সেখান পর্যন্ত আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবা কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন... টিমের পারফরম্যান্সে আমি খুব খুশি। আমরা ভাল বল করেছি। ডেথ বোলিংয়েও উন্নতি হয়েছে। ধোনির অনুপস্থিতিতে সবাইকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে দেখে ভাল লাগল। দক্ষিণ আফ্রিকা আর নিউজিল্যান্ডের পর এখানেও দারুণ খেলল অজিঙ্ক। ও খুব পজিটিভ থাকে।
বিরাট কোহলি |
অশোকের স্কোরশিট |
ব্যাটসম্যান কোহলি
১০/১০ এগারো দিতে পারলে ভাল হত। ওয়ান ডে-তে এ রকম ধারাবাহিকতা, বিশ্বের যে কোনও উইকেটে এত সহজে রান করার ক্ষমতা এই বয়সে সচিনের মধ্যেও দেখিনি।
অধিনায়ক কোহলি
৮/১০ প্রথম বড় টুর্নামেন্ট বলে হয়তো পুরোপুরি স্বচ্ছন্দ ছিল না। পূজারাকে না খেলানোটাও ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু আক্রমণাত্মক মেজাজটা ধরে রেখেছিল। |
|
বাংলাদেশ |
আনামুল বো অ্যারন ৭৭
শামসুর ক ও বো শামি ৭
মোমিনুল স্টাঃ কার্তিক বো অশ্বিন ২৩
মুশফিকুর ক রোহিত বো শামি ১১৭
নইম ক অশ্বিন বো শামি ১৪
নাসির ক কার্তিক বো শামি ১
জিয়াউর ক অ্যারন বো ভুবনেশ্বর ১৮
সোহাগ নঃআঃ ৩
মোর্তুজা নঃআঃ ১
অতিরিক্ত ১৮
মোট ৫০ ওভারে ২৭৯-৭।
পতন: ১৬, ৪৯, ১৮২, ২৩১, ২৪১, ২৭০, ২৭৬।
বোলিং: ভুবনেশ্বর ৮-১-৪১-১, শামি ১০-১-৫০-৪, অ্যারন ৭.৫-০-৭৪-১
অশ্বিন ১০-১-৫০-১, জাডেজা ১০-০-৩৭-০, রায়ডু ৩-০-১৭-০, কোহলি ১.১-০-৬-০
|
ভারত |
রোহিত বো জিয়াউর ২১
শিখর এলবিডব্লিউ রজ্জাক ২৮
কোহলি বো রুবেল ১৩৬
রাহানে ক অতিরিক্ত (কায়েস) বো সোহাগ ৭৩
রায়ডু নঃআঃ ৯
কার্তিক নঃআঃ ২
অতিরিক্ত ১১
মোট ৪৯ ওভারে ২৮০-৪।
পতন: ৫০, ৫৪, ২৬৭, ২৭২।
বোলিং: মোর্তুজা ৯-১-৪৪-০, রুবেল ১০-১-৬৩-১, রজ্জাক ১০-০-৫৫-১, জিয়াউর ৫-০-২০-১
সোহাগ ৮-০-৪৯-১, মোমিনুল ২-০-১৩-০, নইম ১-০-১৫-০, নাসির ৪-০-২০-০ |
|
|
|
|
![](https://archives.anandabazar.com/newimages/blank.gif) |
|
|