সাধু সাবধান!
বাড়িওয়ালা আর ভাড়াটিয়ার মধ্যে আইনি চুক্তিপত্র বলতে আমরা সাধারণত বুঝি দু’পক্ষের সইসাবুদ করা একখানা কাগজ। সাধারণত স্ট্যাম্প পেপারে (সাদা কাগজেও হয়) যা করে নিয়ে আসেন বাড়ির মালিক। একটি কপি নিজের কাছে রেখে অন্যটি ধরিয়ে দেন ভাড়াটিয়ার হাতে।
এই চুক্তি ‘টেনান্সি এগ্রিমেন্ট’ বা ‘লিভ ও লাইসেন্স এগ্রিমেন্ট’ হতে পারে। যা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রেমিসেস টেনান্সি’ আইন বা ‘ট্রান্সফার অব প্রপার্টি অ্যাক্ট’, ‘ইজমেন্ট অ্যাক্ট’ এবং ‘স্পেসিফিক রিলিফ অ্যাক্ট’-এর অধীনে পড়ে। ‘টেনান্সি এগ্রিমেন্ট’-এ দু’পক্ষের নাম ল্যান্ডলর্ড (মালিক) ও টেনান্ট (ভাড়াটিয়া)। আর ‘লিভ ও লাইসেন্স এগ্রিমেন্ট’-এ দু’পক্ষ হলেন লাইসেন্সর ও লাইসেন্সি।
মনে রাখবেন, এই দু’টির মধ্যে যে চুক্তিই আপনি করুন না-কেন, তা খেলাপ করলে, অন্য পক্ষের একশো শতাংশ অধিকার থাকবে আদালতের দরজায় কড়া নাড়ার। যে কোনও আইনি চুক্তিপত্রের মানেই তো তাই।

ভাড়াটিয়া আইন
কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার আওতাধীন এলাকায় যদি আপনি বসবাসের জন্য মাসে ৬,৫০০ টাকা বা তার কমে বাড়ি ভাড়া নেন, তা হলে এই আইনে চুক্তির সুবিধা নিতে পারেন। বাণিজ্যিক কাজে ভাড়া নিলে এই ঊর্ধ্বসীমা মাসে ১০ হাজার টাকা। কলকাতা-হাওড়ার বাইরে রাজ্য সরকার নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আর যেখানে এই আইনের পরিধি বিস্তার করবে, সেখানে ওই দুই অঙ্ক যথাক্রমে ৩,০০০ এবং ৫,০০০ টাকা।

আইনটি কী?
১৯৯৭ সালের ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রেমিসেস টেন্যান্সি অ্যাক্ট বছর চারেক আগে সংশোধিত হয়। নতুন নাম হয়:- ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রেমিসেস টেন্যান্সি অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (২০১০)।

এই আইনে চুক্তিপত্র তৈরি হলে—
• তাতে দু’পক্ষের নাম হবে ল্যান্ডলর্ড (মালিক) ও টেন্যান্ট (ভাড়াটিয়া)।
• ইচ্ছেমতো যখন খুশি ভাড়া বাড়ানোর কথা বলা যায় না। নিয়ম হল, প্রতি তিন বছর অন্তর তা আপনিই ৫% বাড়বে। কিন্তু তার বেশি বাড়াতে হলে, তা করতে হবে আইন মেনে। অথবা কথা বলতে হবে দু’পক্ষকে।
• ভাড়াটিয়া (যাঁর নামে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল) মারা গেলে, আরও পাঁচ বছর পর্যন্ত ভাড়াটিয়ার স্বত্ব ভোগ করবেন উত্তরাধিকারীরা। সঙ্গে সঙ্গে তা খালি করে দিতে হবে না। তবে হ্যাঁ, ভাড়া অবশ্যই দিতে হবে।
• কোনও কারণে দু’পক্ষের বনিবনা না-হলে, বাড়ির মালিক রাতারাতি ভাড়াটিয়াকে তুলে দিতে পারবেন না। এর জন্য তাঁকে উচ্ছেদ (এভিকশন) নোটিস জারি করতে হবে। সেখানে বলতে হবে, কেন তিনি ভাড়াটিয়াকে তুলতে চান। এবং সেই কারণ/ প্রয়োজন অবশ্যই আইনের চোখে যুক্তিগ্রাহ্য হতে হবে। যেমন, অনেকে বলেন ছেলের বিয়ে দেওয়ার পরে বাড়তি ঘর দরকার। কেউ দেখান ঘর মেরামতির প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি। কিন্তু শুধু বললেই হবে না, আইনের চোখে তা যুক্তিগ্রাহ্য হতে হবে।
• শুধু উচ্ছেদ নোটিস দিলে হবে না। বাড়ি বদলানোর জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হবে ভাড়াটিয়াকে।
• আজকাল বাড়িভাড়া ছাড়াও বিপুল টাকা অগ্রিম হিসেবে নেওয়ার চল হয়েছে। তিন মাস, ছ’মাস, কোথাও-কোথাও এক বছরের ভাড়ার সমান অঙ্কও অগ্রিম হিসেবে নেওয়া হয়। কিন্তু এই আইন অনুযায়ী, তা করা যায় না। বড়জোর এক মাসের ভাড়া আগাম হিসেবে নেওয়া চলে।

সম্পদের হাতবদল আইন
ভাড়ার অঙ্ক (কলকাতা-হাওড়ায়) ৬,৫০০ ও ১০,০০০ টাকা ছাড়ালেই কিন্তু তা আর টেনান্সি আইনের আওতায় পড়ে না। বরং তখন তা পড়ে ‘প্রপার্টি ট্রান্সফার’-এর শ্রেণিতে।

লিভ ও লাইসেন্স চুক্তি
ভাড়া দেওয়ার সময় বহু বাড়িওয়ালাই সম্পত্তি জবরদখলের ভয় পান। তাই সেই ঝক্কি এড়াতে ও ভবিষ্যতে আসতে পারে, এমন অনেক সমস্যা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জন্য লিভ ও লাইসেন্স এগ্রিমেন্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে তাঁদের কতকগুলি সুবিধা আছে। যেমন, এই আইন অনুযায়ী, ভাড়াটিয়া কোনও কারণে মারা গেলে, ওই চুক্তিও শেষ। সম্পত্তির উপর ভাড়াটিয়ার উত্তরাধিকারীর কোনও অধিকার থাকে না। ভাড়া বা অগ্রিমের অঙ্ক নিয়ে কড়াকড়িও এখানে অনেক কম। এই সব কারণে বেশির ভাগ বাড়ির মালিক এখন লিভ ও লাইসেন্স চুক্তির পথে হাঁটেন।

আসল কথা
মনে রাখবেন, যে-ধরনের চুক্তিই করুন না-কেন, তা মানার কিন্তু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এমনটা নয় যে, ট্রান্সফার অব প্রপার্টি বা লাইসেন্সি চুক্তি করা মানে আপনি মালিক বা ভাড়াটিয়া হিসেবে যা খুশি করতে পারেন, বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করতে পারেন অপর পক্ষকে।
তাই যে-চুক্তিই করুন, নীচের বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখুন—
• বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়ার মধ্যে চুক্তি স্ট্যাম্প পেপারেই হতে হবে, এমন কোনও কথা নেই। তা সাদা কাগজেও হতে পারে। টাইপ করা হলে চলবে, আবার হাতে লেখা হলেও অসুবিধা নেই। তবে অনেকেই মনে করেন, স্ট্যাম্প পেপারে টাইপ করা হলে বিষয়টি পাকাপোক্ত হয়। আমার মতে, দু’পক্ষের সুসম্পর্ক থাকাটাই আসল কথা।
• মালিক-ভাড়াটিয়া বিরোধ হলে, তবেই চুক্তির প্রয়োজন পড়বে। প্রয়োজন হবে তার শর্তগুলি পর্যালোচনা ও ব্যাখ্যার। ভাল বনিবনা থাকলে, চুক্তির প্রয়োজন প্রায় বোঝাই যায় না। এবং সেটাই কাম্য। খামোখা আইনি ঝামেলায় কেই বা জড়াতে চায়।
• লিখিত চুক্তি থাকা মানে, মালিক যেমন যখন খুশি ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করতে পারেন না, তেমনই মেয়াদ শেষে সেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকতে পারেন না ভাড়াটিয়াও। উভয় পক্ষেরই স্বার্থরক্ষায় সেখানে উচ্ছেদ এড়ানোর কথা যেমন আছে, তেমনই উল্লেখ আছে বাড়িওয়ালার সত্যিকারের দরকারে ভাড়াটিয়াকে উঠতে হওয়ার কথাও।
• দু’পক্ষের সমস্যা হলে, আলাপ-আলোচনায় তা মেটানোর চেষ্টা করুন। কিন্তু আইন নিজের হাতে নেবেন না। অনেকে ভাড়াটিয়াকে হেনস্থা করতে জল, বিদ্যুৎ ইত্যাদি বন্ধ করে দেন। মনে রাখবেন, কখনওই এই সব অত্যাবশ্যক পরিষেবা বন্ধ করা যায় না। এগুলি অন্যায় ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হলে, ভাড়াটিয়াও মালিকের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন। ঠিক তেমনই মালিকের উপর রাগবশত ঘরদোর ভাঙচুর করতে পারেন না ভাড়াটিয়াও। কথা বলে মীমাংসা না-হলে, আদালতে যান।
• এই চুক্তিপত্র কেমন হওয়া উচিত, বিভিন্ন আইনের বইয়ে সে সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা আছে। তবে আপনাকে যে তেমনটাই অক্ষরে অক্ষরে লিখতে হবে, এমন নয়। আমার মতে, চুক্তিপত্র লেখার আগে দু’পক্ষ নিজেদের মধ্যে কথা বলুন। দেখুন, কোন কোন বিষয়ে আপনারা সহমত। যে-বিষয়গুলি নিয়ে আপত্তি আছে, তার জন্য আলোচনায় আর একটু সময় দিন। তার পর চুক্তিপত্র তৈরি করুন। দেখবেন, তাতে আখেরে ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট অনেক কম হবে।
• আপনি ভাড়াটিয়া হলে, চুক্তিপত্রে লেখা দিনের মধ্যে ভাড়া দিতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন, সময়ে ভাড়া না- দেওয়া মানে বাড়িওয়ালার হাতে শক্তিশালী অস্ত্র তুলে দেওয়া। উচ্ছেদের জন্য যা তিনি ব্যবহার করতে পারেন। ভাড়ার রসিদ ছাপানো হলে ভাল।
• এমন হতে পারে যে, আপনি ভাড়া দিতে চান। কিন্তু আপনাকে তোলার জন্য বাড়িওয়ালা তা নিচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে প্রথমে মানি অর্ডার করে ওই ভাড়া বাড়ির মালিকের কাছে পাঠান। তার রসিদ যত্ন করে রাখুন। এর পর তিনি তা ফিরিয়ে দিলে সেই প্রমাণপত্র টাকা ফেরানোর প্রমাণ হিসেবে নিয়ে রেন্ট কন্ট্রোলারের কাছে যান, সঙ্গে নিয়ে যান শেষ জমা দেওয়া ভাড়ার রসিদ। তাঁর কাছেই ভাড়া জমা দিতে পারেন।
ভাড়া সংক্রান্ত যে-কোনও সমস্যা নিয়ে এই ট্রাইব্যুনালের কাছে যেতে পারেন। দায়ের করতে পারেন মামলা। এ বিষয়ে বিশদ জানতে আপনার এলাকার নির্ধারিত আদালতে/ ট্রাইব্যুনালে খোঁজ নিন। এ ছাড়া, দেওয়ানি আদালতের দরজাও সব সময়েই খোলা। তবে হ্যাঁ, আবার বলছি, এ ধরনের সমস্যা আপসে মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করাই ভাল।
• মনে রাখবেন, একবার চুক্তি করলে, সেই মেয়াদের মধ্যে আর ভাড়া বাড়ানো চলে না। মেয়াদ শেষ হলে এ নিয়ে দু’পক্ষ কথা বলতে পারেন।

পরামর্শ
লেখার সঙ্গের সারণিতে দেওয়া বিষয়গুলি চুক্তিপত্রে তো উল্লেখ করবেনই। সঙ্গে আরও কিছু পছন্দসই শর্ত থাকলে, তা-ও উল্লেখ করতে পারেন। চুক্তির মেয়াদ, ভাড়ার অঙ্ক ইত্যাদি লেখার আগে দু’পক্ষই কথা বলে নিন। যাতে পরে এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি না হয়।
গোড়া থেকেই যে কথা বলে আসছি, সেটাই আর এক বার মনে করিয়ে দিয়ে শেষ করি। তা হল, যত্ন করে চুক্তিপত্র তৈরি করা অবশ্যই উচিত। কিন্তু আখেরে তা কাজে না-লাগাই ভাল। শুধু শুধু আইনি ঝামেলায় কেই বা জড়াতে চায়?
আর একটা কথা জানাই, আপনার এবং আপনার এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে, ভাড়াটিয়ার সচিত্র পরিচয়পত্র বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্রের সঙ্গে, স্থানীয় থানায় জমা দিয়ে রাখা ভাল। এতে ভবিষ্যতে বিপদ এড়াতে পারবেন।
‘আদর্শ’ চুক্তিপত্র
অনেকেই জানতে চান, বাড়িভাড়ার আদর্শ চুক্তিপত্র কেমন হওয়া উচিত? সত্যি বলতে কী, তেমন ধরাবাঁধা কোনও নিয়ম নেই। তবে চুক্তিপত্রে নীচের বিষয়গুলি স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা থাকলে, তা আইনি ভাবে মোটামুটি পোক্ত হওয়ার কথা—
• বাড়িওয়ালার (প্রথম পক্ষ) নাম, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি।
• ভাড়াটিয়ার (দ্বিতীয় পক্ষ) নাম-ঠিকানা-পেশা।
• চুক্তির মেয়াদ (সহজ কথায়, কত দিনের)।
• ভাড়ার অঙ্ক (প্রতি মাসে ভাড়া কত)।
• অগ্রিম নিচ্ছেন কি না। নিলে কত?
• মূল ভাড়ার সঙ্গে অগ্রিম কী ভাবে ‘অ্যাডজাস্ট’ হবে? তা কি মাসে-মাসে কাটা যাবে? না কি বাড়ি ছাড়ার সময়ে ভাড়াটিয়া তা ফেরত পাবেন?
• ভাড়ার বাইরে রক্ষণাবেক্ষণের আলাদা কোনও খরচ (মেনটেন্যান্স ফি) আছে কি না। থাকলে, তা কে দেবেন?
• প্রতি মাসের কত তারিখের মধ্যে ভাড়া দিতে হবে?
• বিদ্যুতের মিটার আলাদা তো? বিল দেওয়ার দায়িত্ব কার?
• বাড়ি বা ফ্ল্যাটের বিশদ বর্ণনা। যেমন এলাকা, ঠিকানা, ক’টি ঘর-রান্নাঘর-বারান্দা-ব্যালকনি-বাথরুম ইত্যাদি। সঙ্গে সঠিক মাপের উল্লেখ থাকা ভাল (কত বর্গ ফুট)।
• শুধু বসবাসের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে? না কি ব্যবহার করা যাবে ব্যবসায়িক স্বার্থেও?
• ভাড়াটিয়া আবার ফের কাউকে ভাড়া দিতে পারবেন কি না।
• একে-অন্যের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করার মতো কিছু করা চলবে না।
• ভাড়া নেওয়া ঘরে কোনও বিস্ফোরক কিংবা সহজদাহ্য পদার্থ মজুত করা চলবে না। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার কিংবা স্টোভ জ্বালানোর কেরোসিন অবশ্যই থাকতে পারে। কিন্তু তা বলে তা বিপুল পরিমাণে জমিয়ে রাখা যাবে না।
• ছাদ (সিলিং), দেওয়াল, রান্নাঘর-বাথরুমের ‘ফিটিংস’ ইত্যাদির ক্ষতি করা চলবে না।
• মেয়াদ শেষের আগেই ভাড়াটিয়া ঘর ছাড়তে চাইলে, অন্তত দু’মাস বাকি থাকতে নোটিস দিতে হবে। একই ভাবে মেয়াদের মধ্যে ভাড়াটিয়াকে তুলতে চাইলে, তাঁকে অন্তত দু’মাস আগে নোটিস দেবেন বাড়িওয়ালা।
• পর পর দু’মাস ভাড়া না-দিলে, বাড়িওয়ালা উচ্ছেদের নোটিস পাঠাতে পারবেন।
• দু’পক্ষের সই। সইয়ের সঙ্গে তারিখ কিন্তু দিতেই হবে।
• অন্তত দু’জন সাক্ষীর সই। তাঁদের ঠিকানাও উল্লেখ করতে ভুলবেন না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.