|
|
|
|
নেতার বাড়ির লোকেদের টিকিট পাওয়ার রীতি পাল্টাতে চান রাহুল |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি
২৫ ফেব্রুয়ারি |
কংগ্রেসকে পাল্টাতে চান রাহুল গাঁধী। তিনি চান, ভোটের ময়দানে প্রার্থী কারা হবেন, তা ঠিক করুক মানুষই। আজ অসমে এক জনসভায় এমনই জানালেন দলের সহ-সভাপতি।
রাহুলের কথায়, “সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজনীতির পরিকাঠামো পাল্টাতে হবে। বদলাতে হবে কংগ্রেসকেও। সেটাই করার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি, নিজেদের হাতেই তাঁদের ভালমন্দ বিচারের ক্ষমতা পেতে চান মানুষ।” তাঁর বক্তব্য, এর মধ্যেই দেশের কয়েকটি প্রান্তে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের ভোটের মাধ্যমে দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও বেশি জায়গায় ওই প্রক্রিয়া ছড়িয়ে যাবে। রাজনৈতিক নেতাদের পরিজনদের ভোটে লড়ার ‘টিকিট’ পাওয়ার রীতিও তাঁর পছন্দ নয় বলে মন্তব্য করেন সনিয়া-তনয়। তাঁর কথায়, “আমি কংগ্রেস নেতাদের পরিবারের লোকজনকে এ ভাবে দলের টিকিট দেওয়ার বিপক্ষে। এ সবের বদল হওয়া উচিত।” সমাবেশে হাজির দলীয় সমর্থকরা ‘বিজেপি মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিলে, তাঁদের নিষেধ করেন রাহুল। তিনি বলেন, “মুর্দাবাদ কথাটা ব্যবহার করবেন না। উন্হে (বিজেপি) গুস্সা করনে দিজিয়ে, কংগ্রেস প্যার কা পার্টি হ্যায়।” রাজ্য জুড়ে বন্ধের আবহে আজ দু’দিনের সফরে অসমে পৌঁছন রাহুল। গত কাল কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভে এক ব্যক্তির আত্মহত্যার জেরে গুয়াহাটিতে বন্ধ ডাকা হয়েছিল। অন্য দিকে, পৃথক রাজ্যের দাবিতে কার্বি আংলং-এ বন্ধ ডাকে সেখানকার দু’টি সংগঠন। কোচ-রাজবংশীরাও অসম বন্ধের আহ্বান করেছিল। |
|
গুয়াহাটির জনসভায় রাহুল গাঁধী। উজ্জল দেবের তোলা ছবি। |
রাহুলের সফর বয়কট করে রাজ্যব্যাপী বন্ধ ডেকেছিল আদিবাসী সংগঠনগুলি। পুলিশ সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সভায় যোগ দিতে যাওয়া কয়েকটি বাস ও গাড়িতে হামলা হয়। যোরহাট, গোহপুর, ধেমাজি, গোরেশ্বর, শিবসাগর, নগাঁও, মরিগাঁওতে কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগায় বন্ধ সমর্থকরা। অবরোধ হয় রেল লাইনেও।
বিমানবন্দরে নেমেই ডিফুতে যান রাহুল। সেখানে পৃথক রাজ্য দাবি কমিটির প্রতিনিধি ও স্বশাসিত পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। কংগ্রেস নেতা বলেন, “তৃণমূল স্তর, দরিদ্র ও মহিলাদের হাতে বেশি ক্ষমতা এলে তবেই সমাজের উন্নয়ন সম্ভব।” উপজাতিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শুধু বিধায়কই নয়, এলাকার সাংসদ কে হবেন, তা-ও ঠিক করুন আপনারাই।”
কয়েক দিন আগে অসমে এক জনসভায় বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রে ক্ষমতা পেলে ৬০ মাসের মধ্যে অসমের ভোল বদলে দেবেন। আজ গুয়াহাটির সমাবেশে তার রেশ টেনে রাহুল বলেন, “এ সব প্রতিশ্রুতি মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। রাজনৈতিক নেতারা কখনও দিন বদলাতে পারেন না। নিজেদের দিন বদল করতে পারেন মানুষই। তাঁর মন্তব্য, “১০ বছরে আমরা ১৫ কোটি পরিবারকে দারিদ্রসীমার উপরে নিয়ে গিয়েছি। পরের বার দেশের ৭০ কোটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারকেও সেই ধাপে পৌঁছে দিতে চাই।” দিল্লিতে নিদো টানিয়ার হত্যাকাণ্ড নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে এ বিষয়ে নতুন আইন প্রণয়নের উপর গুরুত্ব দিলেও, সরাসরি ‘জাতিবিদ্বেষ বিরোধী আইন’-এর নাম তিনি তোলেননি। গত কালের আত্মহত্যার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করলেও, ভূমিহীনদের পাট্টা দেওয়ার প্রসঙ্গও তিনি এড়িয়ে যান। |
|
|
|
|
|