এগারো দলের পয়লা সভাই এড়িয়ে গেল দুই
তৃতীয় বিকল্পের আত্মপ্রকাশের শুরুতেই ভাঙা সংসার! আজ বাম নেতৃত্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি এগারো দলের বিকল্প জোটের প্রথম বৈঠকেই অনুপস্থিত রয়ে গেল দুই সদস্য দল। আসেননি বিজু জনতা দল (বিজেডি) এবং অসম গণ পরিষদ (অগপ)-এর শীর্ষ দুই নেতা।
নরেন্দ্র মোদীকে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মনোনীত করার পর সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে গত অক্টোবরে দিল্লিতে ১৪টি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ হয়েছিল। বামেরাই ছিলেন তার উদ্যোক্তা। এর পর সেই দলগুলিই দিল্লিতে ৫ ফেব্রুয়ারি ফের বৈঠকে বসে। আজ তৃতীয় দিনের বৈঠকে ১৪ থেকে কমে ৯টি দল বৈঠকে বসল।
বৈঠকের পর সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাট অবশ্য এই দুই নেতার অনুপস্থিতির কারণ দর্শিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ব্যক্তিগত কারণে না আসতে পারলেও বিজেডি-র নবীন পট্টনায়ক এবং অগপ-র প্রফুল্ল মহন্ত এই তৃতীয় বিকল্প শক্তির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।
কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তাঁদের তাৎপর্যপূর্ণ অনুপস্থিতি নিয়ে। যাঁদের উদ্দেশে তোপ দেগে আজ সাংবাদিক বৈঠক করলেন কারাট, নীতীশকুমার, মুলায়ম সিংহ যাদব, শরদ যাদবরা সেই বিজেপি নেতৃত্ব উল্লসিত গোড়ার দিনেই তৃতীয় বিকল্পের এই ভাঙা চেহারা দেখে। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের কথায়, “বরাবরই তৃতীয় মোর্চার পরীক্ষা বিফল হয়েছে। আজ তাদের জন্মলগ্নের ফাটল থেকেই স্পষ্ট যে, এরা কোনও ভাবেই দেশের স্থায়ী বিকল্প হতে পারে না। শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদীকে ঠেকানোর জন্যই এরা কংগ্রেসের হাতে তামাক খাচ্ছে।”
কারাট অবশ্য বলেছেন, “অগপ নেতা প্রফুল্ল মহন্তর মা খুব অসুস্থ। তিনি আমাদের জানিয়েছেন যে, সেই কারণে আজ বৈঠকে হাজির থাকতে পারলেন না। তবে তাঁর পূর্ণ সমর্থনের কথাও তিনি আমাদের জানিয়েছেন।” একই ভাবে বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়কও গরহাজির থেকেছেন রাজ্যে কাজ রয়েছে বলে। কিন্তু সেই কাজটি ঠিক কী, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি কারাট।
কিন্তু নিজেরা আসতে না পারলেও দলের তরফে অন্তত এক জন করে প্রতিনিধিও কেন পাঠাতে পারল না বিজেডি এবং অগপ? এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি কারাট বা তৃতীয় জোটের বৈঠকে উপস্থিত কোনও নেতা। নিজে থেকে কোনও ব্যাখ্যাও দেননি নবীন বা প্রফুল্লকুমার।
আজকের বৈঠকের পর কংগ্রেস এবং বিজেপি-র সঙ্গে সমদূরত্বের কথা বলে কারাট, শরদ যাদব, মুলায়ম সিংহরা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সেই সঙ্গে একটি বিষয়ও কিন্তু স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, নির্বাচনের আগে আসন সমঝোতার মাধ্যমে কোনও রাজনৈতিক জোট গঠনের পথে কিন্তু হাঁটছেন না এই নেতারা। প্রত্যেকেই নিজ রাজ্যে নিজস্ব শক্তি অনুযায়ী লড়বেন। যেমন, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির ৪০টি আসনের জন্য ইতিমধ্যেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা। ভোটের পরে বিকল্প শক্তি গঠন করে অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি সরকারের কথা ভাবতে চাইছেন কারাটরা।
ভোট পরবর্তী সেই জোটের বা সরকারের নেতৃত্ব দেবেন কে, সেটিও স্থির হবে ভোটের পরে। কারাটের কথায়, “আমরা কোনও আসন সমঝোতা বা ভাগাভাগি করছি না। প্রত্যেকেই নিজের এলাকায় নিজের মতো করে লড়বে। তার পর সম্মিলিত ভাবে জাতীয় স্তরে আমরা নিজেদের তুলে ধরব।”
কারাটের কথায়, “কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার দুর্নীতি এবং অনিয়মের নজির গড়েছে। মানুষকে দুর্বিষহ মূল্যবৃদ্ধির সামনে পড়তে হয়েছে। কৃষকদের দুর্দশা বেড়েছে। অন্য দিকে বিজেপি-র মূল নীতি কংগ্রেসের থেকে আলাদা কিছু নয়। তারা যে যে রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে সেখানে দুর্নীতির চূড়ান্ত চলছে। পাশাপাশি, মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি, দেশের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোটাকেই আঘাত করে চলেছে।”
আসন সমঝোতার পথে না হাঁটলেও শরদ যাদব, নীতীশ, মুলায়ম, জয়ললিতা অথবা বাম নেতারা সকলেই বোঝাতে চাইছেন, জাতীয় রাজনীতিতে তাঁরা যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। আর সে কথা বলেই নিজের নিজের রাজ্যে ভোট চাইছেন আঞ্চলিক দলের নেতারা। এঁদের দাবি, লোকসভা ভোটের পরে কেন্দ্রে অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি সরকার হলে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.