এলাকা দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও বোমাবাজির জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বোলপুর থানার বাহিরী-পাঁচশোয়া পঞ্চায়েতের বড় শিমুলিয়া গ্রাম। অভিযোগ, একটি গোষ্ঠীর দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরের ওই ঘটনায় দুই তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। লাঠি ও শাবলের ঘায়ে জখম হয়েছেন আরও এক জন। আহতরা প্রত্যেকেই বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। সংঘর্ষের খবর পেয়ে বোলপুর থানার আইসি দেবকুমার রায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ওই এলাকায় যায়। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনায় কোনও পক্ষই এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেনি। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার দখলকে ঘিরে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সঙ্গে বিরোধী গোষ্ঠীর লড়াই দীর্ঘ দিনের। বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, দিন দু’য়েক আগে গ্রাম ছাড়া কয়েক জন সমর্থককে এলাকায় ফেরানোর চেষ্টা করে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। তার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। অভিযোগ, এ দিন দুপরে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বিরোধী গোষ্ঠীর লোকেরা বড় শিমুলিয়া এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি আরম্ভ করে। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীও। স্থানীয় বাসিন্দা চানোয়ারা বিবি, জাহানারা বিবিরা বলেন, “দুপুর দুটো নাগাদ আচমকা গ্রামে বোমাবাজি শুরু হয়। খেতের কাজে মাঠে থাকা মানুষজন ছুটে আসতে থাকেন। ওই সময় কয়েক জন গুলি চালায়।” গুলিবিদ্ধ হন এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত গ্রামের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব শামসুল হাজারি। তাঁর দাবি, “দুপুরের নমাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলাম। আচমকা আমাকে লক্ষ্য করে বিরোধী গোষ্ঠীর লোকেরা বোমা গুলি ছোড়ে।” তাঁর পায়ে একটি গুলি লেগেছে। আর এক গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী নৌসাদ শেখ বলেন, “দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ির পাশে পায়চারি করছিলাম। ওই সময়ে আচমকা গুলি এসে আমার পায়ে এবং জঙ্ঘায় লাগে।” ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর তৃণমূল কর্মী রবু শেখকে লাঠি, শাবল দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। তাঁর স্ত্রী চানোরা বিবির অভিযোগ, “স্থানীয় কাল শেখ, সামাদ শেখ, হাকু শেখ, আমির শেখের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের দুষ্কৃতী দল গ্রামে ঢুকে তছনছ করেছে। লুঠপাট করেছে। পার্টি অফিসে আগুনও ধরিয়ে দিয়েছে।” |