শহরে উচ্চ আলোকস্তম্ভ বসানো নিয়ে বিতর্কে জড়াল বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদ ও বর্ধমান পুরসভা।
ছ’টি বাতি লাগানো, ১২.৫ মিটার উচ্চতার প্রায় ১৫টি বাতিস্তম্ভ শহরে বসাতে চাইছে উন্নয়ন পর্ষদ। তার মধ্যে অন্তত চারটি বসিয়েও ফেলা হয়েছে জিটি রোডের নানা জায়গায়। কিন্তু তার মাঝেই আলো বসাতে বারণ করে পর্ষদের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার অমিত দত্তকে চিঠি দিয়েছেন বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত। গত ৮ ফেব্রুয়ারি লেখা ওই চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, আলো বসানো নিয়ে পুরসভাকে কার্যত কিছুই জানানো হয়নি। এমনকী পুলিশকে চিঠি দিয়ে নার্স কোয়ার্টার মোড়ে ওই আলোকস্তম্ভ বসানোর কাজ বন্ধ করতে বলেছেন পুরপ্রধান।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার শহরের জিটি রোড সংলগ্ন বীরহাটা, পাকার্স রোড, মেহেদিবাগান ও গোলাপবাগ মোড়ে বসে যাওয়া নতুন আলোকস্তম্ভের উদ্বোধন করেছেন বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আপাতত শহরের নানা জায়গায় ও তার পরে উন্নয়ন পর্ষদের এলাকায় ওই আলোকস্তম্ভ বসানো হবে।” কিন্তু পুরসভাকে না জানিয়ে কেন ওই বিশাল উঁচু ও দামি একএকটি আলোকস্তম্ভ বসানো হল? |
রবিরঞ্জনবাবুর জবাব, “সন্ধ্যার পরে শহরের অনেক এলাকাতেই আলো থাকেনা। অন্ধকার আচ্ছন্ন এলাকাগুলিতে যাতে মানুষের চলাচলে অসুবিধা না হয়, তাই বিধায়ক তহবিলের টাকা থেকে আলো বসাচ্ছি। এক একটি আলোকস্তম্ভের দাম তিন লক্ষ টাকা।” তাঁর আরও সংযোজন, “বিধায়ক তাঁর এলাকায় বাতি বসাবেন তাতে পুরসভা আপত্তি করবে কেন?” মন্ত্রীর দাবি, “ওই আলো বসানোর জন্য আগেই পুরসভাকে চিঠি লিখে অনুমতি দিতে বলা হয়েছে। এমনকী কিছুদিন আগে জেলাশাসকের ঘরে বৈঠক করে আমি পুরপ্রধানের কাছে জানতে চাই, কোন সংস্থা কোন কাজ শহরের বুকে করবে। তিনি কিছুক্ষণ মাত্র বৈঠকে থেকে কাউকে কিছু না বলে চলে যান। তা ছাড়া আমরা এলাকার কাউন্সিলরদের নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট নিয়ে ওই আলোকস্তম্ভ বসাব।”
পুরপ্রধানের অবশ্য দাবি, “ওই দামি বাতি স্তম্ভের কথা আমাদের পুরসভাকে একবারও জানানো হয়নি। অথচ পুর এলাকায় কোনও কাজ যে দফতরই করুক না কেন, তাদের পুরসভার অনুমতি নিতে হবে, এটাই আইন। তাছাড়া ওই দামি আলো জ্বেলে প্রচুর বিদ্যুতের বিল আসবে। সেই বিল কে মেটাবে তাও জানিনা।” তাঁর আরও দাবি, “শহরের অপরিসর জায়গায় ওই বাতি বসালে যাতায়াতে যথেষ্ট সমস্যা হবে। তাই আপত্তি করেছি আমরা।’’ তবে মন্ত্রী জানান, ওই আলোর জন্য যে বিদ্যুতের বিল আসবে তা পুরসভা না মেটালে আমি বিধায়ক তহবিলের টাকা থেকে মিটিয়ে দেব।” পর্ষদের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার অমিত দত্ত বলেন, “দুই সংস্থার মধ্যে বাতিস্তম্ভ বসানো নিয়ে একটু গোলমাল হচ্ছে। তবে তা অবিলম্বে মিটে যাবে। শহরের বুকে আলো তো দরকার।” |