পুলিশের উপর হামলায় অভিযুক্ত এক যুবককে গ্রেফতার না করে ৪৮ ঘণ্টা জেলা হাসপাতালের লক-আপে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জ থানার এক সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে। শাহ আলম মর্তুজা নামে ওই সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে গত শনিবার বিকালে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন রায়গঞ্জের পানিশালা এলাকার বাসিন্দা ওই যুবকের কাকা নীহারচন্দ্র সরকার। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম সীমান্ত সরকার। ২০১২ সালে তিনি রায়গঞ্জ ইনির্ভাসিটি কলেজের স্নাতক স্তরের প্রথম বষের্র ছাত্র ছিলেন। ওই বছর তিনি পরীক্ষায় পাশ করতে না পারায় এ বছর ফের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় বসার কথা। বর্তমানে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পুলিশ লকআপে চিকিৎসাধীন তিনি।
পুলিশের দাবি, পুলিশের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে শনিবার দুপুরে তাঁকে রায়গঞ্জ হাসপাতাল চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সুস্থ বলে তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশ সুপার অমিত জাভলাগি বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ওই সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই যুবকের নামে পুলিশকে মারধর করার অভিযোগে মামলা রয়েছে।” অভিযুক্ত ওই সাব ইন্সপেক্টর আলম মর্তুজা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পুলিশ সূত্রের খবর, সাত বছর আগের এক চুরির মামলায় অভিযুক্ত হন সীমান্তবাবুর বাবা পেশায় হিমঘর কর্মী নির্মলচন্দ্র সরকার। আদালতের নির্দেশে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে মর্তুজাবাবু সহ কয়েকজন পুলিশকর্মী নির্মলবাবুকে গ্রেফতার করতে যান। কিন্তু ওই দিন নির্মলবাবু বাড়িতে ছিলেন না। মর্তুজাবাবু দায়ের করা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, ওই দিন তিনি নির্মলবাবুর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করতেই তাঁর ছেলে সীমান্তবাবু ও পরিবারের কয়েক জন সদস্য তাঁদের ঘিরে মারধর করে রিভলবার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত নির্মলবাবুকে পুলিশ অবশ্য গ্রেফতার করে। জেলা হাসপাতালের পুলিশ লকআপে দাঁড়িয়ে সীমান্তবাবু বলেন, “আমরা কেউ হামলা করিনি। বাবাকে না পেয়ে ওই দিন মর্তুজাবাবু আমার মা সহ পরিবারের অন্যা সদস্যদের সঙ্গে অভব্য আচরণ ও গালাগালি করেন।” গত বৃহস্পতিবার সাইকেলে চেপে তিনি কলেজে যাচ্ছিলেন। সেইসময় রায়গঞ্জের আশা টকিজ মোড়ের কাছে মর্তুজাবাবু তাঁকে আটক করেন। মারধর করেন। মুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। বেগতিক বুঝে মর্তুজাবাবুই পুলিশ কর্মীদের সহযোগিতায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান।” তাঁর কাকা নীহারবাবু বলেন, “ভাইপোকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার না করে ৪৮ ঘণ্টা হাসপাতাল লক-আপে আটকে রাখা হয়েছে। পুলিশ সুপার ও মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানাই। তার পরে ভাইপোকে ওই দিন দুপুরে হাসপাতাল চত্বর থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করায় পুলিশ।” জেলা হাসপাতাল সুপার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নথি না দেখে কিছু বলব না।” |