দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কোচবিহারের শীতলখুচি। দু’পক্ষই তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বলে অভিযোগ। শনিবার রাত থেকে শীতলখুচির আখরারহাট এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়ে, রবিবারও কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয় বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের ১০ জন জখম হয়েছেন। ২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শীতলখুচি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধক্ষ্য তৃণমূলের কৃষক সংগঠনের ব্লক সভাপতি সাহের আলি মিয়াঁর অভিযোগ, তাঁর অনুগামীদের উপরে তৃণমূল ব্লক সভাপতি আবেদ আলির অনুগামীরা হামলা চালায়। সমর্থকদের লক্ষ করে গুলিও ছোড়া হয় বলে তাঁদের দাবি। আবেদ আলি মিয়াঁ অবশ্য পাল্টা হামলার অভিযোগ তুলেছেন। দু’পক্ষই বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশের অবশ্য দাবি, দু’দলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও, গুলি চালানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি। মাথাভাঙার এসডিপিও গণেশ বিশ্বাস এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় বলে এলাকাবাসীর দাবি। সংঘর্ষে এলাকার একাধিক বাড়ি ভাঙচুরেরও অভিযোগ ওঠে। এলাকার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছেন একাধিকবার। গত শনিবার রাত থেকে দু’পক্ষের কয়েক দফায় সংঘর্ষ হওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আজ, সোমবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ায় উদ্বেগে প্রশাসনও। গোষ্ঠী সংঘর্ষেঅস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতারাও। প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি হিতেন বর্মন বলেন, “কী ঘটেছে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।” দলীয় সূত্রের খবর, শীতলখুচি ব্লকের ছোট শালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোডর্র্ গঠন হওয়ার সময় থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। ১৮ আসনের ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৬টি আসন দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। গ্রাম পঞ্চায়েত পরিচালনায় আবেদ আলির অনুগামীরা মূল ভূমিকা নেয়। তার পরেই এলাকার মূল বাজার আখরারহাট বাজারের কর্তৃত্ব নিয়ে দুই নেতার অনুগামীর মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। আবেদ আলি অভিযোগ করে বলেন, “সাহের আলির অনুগামীরা বেশ কিছু তৃণমূল নেতাকে বাজারে যেতে দিচ্ছিলেন না। বহুদিন ধরেই এমনটা চলায় মানুষ প্রতিবাদ করেছে। বাসিন্দারা তৃণমূল নেতাদের নিয়ে আখরার হাট বাজারে গেলে সাহের আলির অনুগামীরা বাধা দেয়।” ওই এলাকার অঞ্চল সভাপতি সামাদ মিয়াঁর বাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের কৃষক সংগঠনের ব্লক সভাপতি সাহের আলি মিয়াঁর পাল্টা দাবি, “বাজারের দখল নিতে আবেদ আলির লোক সেখানে থাকা দলীয় অফিসে হামলা চালায়। পার্টি অফিসে থাকা নেতা কর্মীদের লাঠি, রড দিয়ে মারধর করা হয়। গুলি চালিয়েও ভয় দেখানো হয়েছে।” |