শীর্ষ বাছাইকে উড়িয়ে দিল্লির বাদশা সোমদেব
চেন্নাই এবং কলকাতায় পরপর দুই টুর্নামেন্টে শেষ চার থেকে ছিটকে যাওয়ায় তাঁর মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছিল। এ দিন মাত্র ৫৯ মিনিটের অনবদ্য টেনিসে যার জবাব দিয়ে গেলেন সোমদেব দেববর্মন। এক লক্ষ মার্কিন ডলার পুরস্কার মূল্যের দিল্লি চ্যালেঞ্জারের ফাইনালে শীর্ষ বাছাই আলেকসান্দার নেদোভয়েসভকে ৬-৩, ৬-১ চুরমার করতে পুরো এক ঘণ্টাও লাগল না ভারতীয় ডেভিস কাপ তারকার।
শনিবার সেমিফাইনালে বারবার নেটে উঠে রুশ দনস্কয়কে যে দাপটে হারিয়েছিলেন, এ দিন তার থেকেও বেশি আত্মবিশ্বাস আর অসাধারণ সার্ভিসের জোরে ম্যাচের গতি নিয়ন্ত্রণ করে গেলেন সোমদেব। নিজের তৃতীয় চ্যালেঞ্জার ট্রফি হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত নায়ক বললেন, “শেষ কবে নিজের সার্ভিসে মাত্র দশ পয়েন্ট হারিয়ে ম্যাচ জিতেছি মনে পড়ছে না। আর সেট না হারিয়ে তো এর আগে কখনও জিতিনি। তাই বলতেই হবে এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স। আরও ভাল লাগছে ভারতের মাটিতে জিতলাম বলে।”

ট্রফির মালিক সোমদেব। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির আর কে খন্না স্টেডিয়ামের কোর্টে দুরন্ত ফর্মে থাকা সোমদেবের প্রথম সার্ভের কোনও জবাব ছিল না নেদোভয়েসভের কাছে। ভারতীয় তারকার ৯০ শতাংশ পয়েন্টই এল ওই ক্ষুরধার প্রথম সার্ভিসে। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে নিজের থেকে চার ধাপ এগিয়ে থাকা সাতাশ বছরের কাজাখের বিরুদ্ধে বিশ্বের ৯৬ নম্বর সোমদেবের শুরুটা সমানে সমানে হলেও ৩-৩ হওয়ার পর সপ্তম গেম থেকে ভারতীয়ের কর্তৃত্ব স্পষ্ট হয়ে উঠতে থাকে। সোমদেব অবশ্য বলছেন, “শুরুতে কিন্তু ও আমার কালঘাম ছুটিয়ে দিচ্ছিল। ভাগ্গিস প্রথম সার্ভটা ফস্কাল আর আমি সুযোগটা নিলাম! জানি আলেকসান্দারের চোট আছে। ওর জন্য শুভেচ্ছা রইল।”
আটটি সার্ভিস গেমে সোমদেব প্রতিপক্ষকে কাড়তে দেন মাত্র দশটা পয়েন্ট। প্রথম সেটে একটাও ব্রেক পয়েন্ট পাননি নেদোভয়েসভ। দ্বিতীয় সেটে তিনটি পেয়েছিলেন। কিন্তু সোমদেব তিনটি-ই বাঁচিয়ে দেন। এবং নিজে চারটি ব্রেক পয়েন্টের মধ্যে দু’টি কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে একটার বেশি গেম জিততে দিলেন না। সোমদেবের মতে, প্রথম থেকেই আক্রমণে যাওয়া এবং এই কোর্টে আগে খেলার অভিজ্ঞতা তাঁর পক্ষে গিয়েছে।
দেশের এক নম্বর সিঙ্গলস প্লেয়ারকে সমর্থন করতে এ দিন গ্যালারিতে হাজির ছিলেন তিন হাজারের বেশি দর্শক। গোটা ম্যাচে হাততালিতে আর চিৎকারে যাঁরা তাতিয়ে গেলেন নিজেদের নায়ককে। আপ্লুত সোমদেব তো বলেই ফেললেন, “কোনও চ্যালেঞ্জারে এত দর্শক ভাবাই যায় না। অবিশ্বাস্য লাগছে। আমার খেলা দেখতে আসার জন্য আপনাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ।”
২০০৮-এ যুক্তরাষ্ট্রের লেক্সিংটনে নিজের প্রথম চ্যালেঞ্জার জিতেছিলেন সোমদেব। তার পরে ২০১০-এ জেতেন তুরস্কে। মাঝে আরও একটার ফাইনালে উঠলেও তৃতীয় খেতাবটার জন্য দিল্লি পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকতে হল তাঁকে। অন্য দিকে, আজ নিজের চতুর্থ চ্যালেঞ্জার জেতার আশায় নেমেছিলেন নেদোভয়েসভ। কিন্তু কোনও কিছুই তাঁর পক্ষে গেল না। টুর্নামেন্টে পরপর তিনটি তিন সেটের ম্যাচ খেলার ক্লান্তি ফাইনালে পেয়ে বসেছিল জানিয়ে কাজাখস্তানের প্লেয়ার বললেন, “কোনও অজুহাত দিতে চাই না। কিন্তু এটা ঠিক যে আজ খুব ক্লান্ত ছিলাম। তবে সোমদেব আজ অবিশ্বাস্য খেলেছে। ও দারুণ প্লেয়ার। বাকি মরসুম ওর জন্য শুভেচ্ছা রইল।”
দিল্লির সাফল্যের পর সোমদেব এ বার দুবাই যাবেন। যেখানে দুবাই ডিউটি ফ্রি চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম রাউন্ডেই আর্জেন্তিনার মহাতারকা খুয়ান মার্টিন দেল পোত্রোর সামনে পড়েছেন তিনি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.