আদিবাসী এক যুবককে খুন করার অভিযোগ উঠল সিউড়িতে। রবিবার সকালে স্থানীয় বাঁশজোড় গ্রামের একটি মাঠ থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, নিহত যুবকের নাম সুবল মাড্ডি (২৩)। বাড়ি একই থানা এলাকার দুর্গাপুর গ্রামে। এ দিনই ওই যুবকের দাদা সিউড়ি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আজ, সোমবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃতদেহটির ময়না-তদন্ত হবে। জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মা মারা যাওয়ার পরে সুবলের বাবা ও দাদা দূরের বাতাসপুর গ্রামে চলে যান। ওই যুবক দুর্গাপুর গ্রামের বাড়িতে একাই বসবাস করতেন। সুবলের দাদা বড়কা মাড্ডি জানান, তাঁর ভাই দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবেশী গ্রাম বাঁশজোড়ের বাসিন্দা শেখ ববির ইটভাটা ও জমিতে দিনমজুরের কাজ করতেন। রোজ দিনের মতো শনিবারও তিনি সেখানেই কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাতে বাড়ি ফেরেননি। এ দিন সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ সুবলের অস্বাভাবিক মৃতদেহ দেখতে পান। বীরভূম অদিবাসী গাঁওতা সংগঠনের স্থানীয় নেতা সর্বেশ্বর হাঁসদা বলেন, “শনিবার বিকেলেও ছেলেটা বাঁশজোড়ের শেখ ববির জমিতে ধান রোয়ার কাজ করেছে। এ সকালে স্থানীয় বাসিন্দারাই ওর ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।” পরে পুলিশ এসে ওই দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ দিন বড়কা মাড্ডি বলেন, “ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ভাইয়ের গলায় ফাঁস লাগানো। ওর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমাদের দৃঢ় ধারণা, কেউ বা কারা ওকে খুন ওই মাঠে ফেলে দিয়ে গিয়েছে।” তবে, এলাকায় নির্বিবাদী ছেলেকে কারা এমন ভাবে খুন করল তা নিয়ে ধন্দে ওই যুবকের পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। দুর্গাপুর গ্রামেরই বাসিন্দা সুবলের জ্যাঠামশাই সুকুমার মাড্ডি বলেন, “সুবল অত্যন্ত ভাল ও সহজ সরল ছেলে ছিল। ওকে যারা এ ভাবে খুন করল, তাদের কঠোর শাস্তি চাই। পুলিশ অবিলম্বে খুনের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের খুঁজে বের করুক।” একই দাবি করেছেন গ্রামের গাঁওতা নেতাও। এ দিকে, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশেরও মনে হয়েছে, সুবলকে খুনই করা হয়েছে। তবে, খুনের কারণ ও ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা নিয়ে পুলিশ এখনও ধন্দে। ইতিমধ্যেই তারা শেখ ববি এবং সুবলের পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেছে। |