গণধর্ষণ করে খুন, যুবককে ফাঁসির সাজা
বিচার পেলেন আর এক নির্ভয়া। প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছিলেন। এর পরে ‘প্রেমিক’ এক বন্ধুকে নিয়ে ওই তাঁকে গণধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে খুন করে। দেহ ফেলে দেওয়া হয় নদীর চরে। বৃহস্পতিবার ‘প্রেমিকে’র ফাঁসির সাজা শোনাল কোচবিহার জেলা আদালত। আর তার বন্ধুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তের নাম অমল বিশ্বাস। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তের নাম নিবারণ মণ্ডল। বাড়ি ঘোকসাডাঙা থানার খুট্টিমারি এলাকায়। সরকারি আইনজীবী নকুলচন্দ্র দে এ দিন বলেন, “ভালবাসার টোপ দিয়ে ওই তরুণীকে বাড়ির বাইরে এনে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। প্রচারের আলোয় না আসায় এ নির্ভয়ার কথা অনেক জানেন না।”
আদালত সূত্রের খবর, ফালাকাটার ধনীরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘাটপাড় সরুগ্রামের ওই তরুণীর সঙ্গে অমলের ‘প্রেমের সম্পর্ক’ ছিল। ২০১০ সালের ৪ নভেম্বর সকালে অমলের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন তিনি। মেয়ে বাড়ি না ফেরায় ওই দিন রাতে তাঁর বাবা ফালাকাটা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। মেয়ে আর ফেরেনি। পরে তোর্সার চর থেকে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মতিলাল মণ্ডল ওই তরুণীকে খুন করা হয়েছে বলে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ওই তরুণীর মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড ঘেঁটে দুই দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করে। অমলের কাছ থেকে ওই তরুণীর মোবাইল ফোনটিও ঊদ্ধার হয়।
নভেম্বর অমল তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যায়। সেই সময় অমলের বন্ধু নিবারণও সঙ্গে ছিল। কলকাতা দু’জনে ওই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরের দিন ৮ নভেম্বর কলকাতার থেকে তারা রওনা হয়। ওই তরুণী যাতে কাউকে কিছু না বলে, সে জন্য তাঁকে ভয় দেখানো হয়। ৯ নভেম্বর সকালে কোচবিহারে ফিরে কিশোরীকে কালারুইয়ের কুঠিতে একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায় দু’জনে। সেখানে ওই কিশোরীকে দু’জনে ফের ধর্ষণ করে। তার পরে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা। ১০ নভেম্বর এলাকার এক বাসিন্দা মাছ ধরতে গিয়ে দেহটি নদীর চরে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু হয়। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালত ওই তরুণীর বাবা সহ ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। এ দিন অতিরিক্ত দায়রা জজ সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওই রায় ঘোষণা করেন। এদিন ওই রায় ঘোষণার পরে আদালত চত্বরে থাকা বাসিন্দারা খুশির কথা গোপন করেননি। তাঁরা জানান, এই নির্ভয়াও বিচার পেল।
খুশি সরুগ্রামের বাসিন্দারাও। ওই এলাকার প্রধান মুক্তা দত্ত বলেন, “এ রকম ভাবে এক তরুণীকে হত্যা করা যায়, ভাবতেই শিউরে উঠছি। আমরা বিচার চেয়েছিলাম, পেয়েছি। দৃষ্টান্ত হয়ে থাক। যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।” রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন সাজাপ্রাপ্তের আইনজীবী শিবেন রায়। তিনি বলেন, “আমরা উচ্চ আদালতে যাব।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.