এক সপ্তাহ আগে এই মাঠেই কেটেছিল তেতাল্লিশ বছরের খরা। আর সেই ঐতিহাসিক শিল্ড জয়ের যুবভারতীতেই নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে মহমেডান। শনিবার আই লিগ যুদ্ধে সঞ্জয় সেনের টিম বনাম ডুডুর সালগাওকর। মোহনবাগানকে গোয়ায় হারানোর পর ডুডু হাজির শহরে। মহমেডানকে ‘দেখে’ নিতে।
শুক্রবার সালগাওকরের অনুশীলন শেষে নাইজিরিয়ান এই স্ট্রাইকার হুঙ্কারও দিয়ে রাখলেন সাদা-কালো ব্রিগেডকে। শিল্ড জয়ের পর লুসিয়ানো সাব্রোসাদের
‘উই আর ব্ল্যাক, উই আর হোয়াইট
উই আর ইন্ডিয়ান ডিনামাইট’
স্লোগানের গর্জন বেশ কিছুটা এখন স্তিমিত। পুণের কাছে জোড়া গোলে হার। সামনে এ বার ডুডু, যিনি নিজে খুনে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ঘুরছেন, টিমকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলে। কথাবার্তায় যাঁর স্পষ্ট প্রতিফলন, “হ্যাঁ, আমি ভাল ফর্মে আছি। আশা করছি এই ফর্ম ধরে রাখব। মহমেডান ম্যাচের আগে আমি নিজেকেই অল দ্য বেস্ট জানাতে চাই।” সঙ্গে আরও সংযোজন, “আমি চাপ নিতে ভালবাসি। কলকাতার উন্মাদনা অন্য রকমের। প্রচুর সমর্থকের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে খেলাটার সঙ্গে।” |
আজ যুযুধান। সঞ্জয় ও ডুডু। |
কে এই ডুডু? ভারতে আগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। স্পোর্টিং ক্লুবে খেলে গেছেন কয়েক বছর আগে। তাঁর বায়োডেটা বলছে, ২০০৯ সালে হাঙ্গেরির ক্লাব ডেব্রেসেনির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলেছেন। চোটের জন্য মূলপর্বে খেলতে না পারলেও, যোগ্যতা অর্জন পর্বে প্রথম দলে ছিলেন কালমারের বিরুদ্ধে। যে অভিজ্ঞতা আজও উদ্বুদ্ধ করে নাইজিরীয় এই স্ট্রাইকারকে। পুরনো স্মৃতি টেনে এনে বলে দেন, “ওই অভিজ্ঞতাটা কোনও দিন ভুলব না। হয়তো তখন ভাল ফর্মে ছিলাম না। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা একটা স্মরণীয় মুহূর্ত।” এ দিন অনুশীলন ম্যাচে গোলের পর গোল করে যাচ্ছিলেন সালগাওকরে যোগ দেওয়া নতুন এই বিদেশি। যা দেখলে হয়তো লুসিয়ানো-মেহরাজদের রাতের ঘুম ঠিকঠাক হত না।
মহমেডান কোচ সঞ্জয় তো বলেই দিলেন, “ডুডুর উপরে আলাদা করে নজর থাকবে। জোনাল মার্কিং ছকেই আটকাব। ওদের বাকি বিদেশিরাও ভাল।” যদিও মহমেডান অধিনায়ক লুসিয়ানো মনে করছেন, ডুডুর মতো বিশ্বমানের স্ট্রাইকারকে আটকাতে গেলে এমনিই তাঁর দলের সেরা খেলাটা বেরিয়ে আসবে। “আমি অনেক বিশ্বমানের প্লেয়ারের বিরুদ্ধে খেলেছি। ডুডু খুব ভাল স্ট্রাইকার। কড়া নজর রাখতে হবে ওর উপরে।” ডুডুকে আটকাতে শনিবার মেহরাজ-লুসিয়ানো জুটিকেই ব্যবহার করছেন সঞ্জয়। দুই উইং ব্যাকে নির্মল ছেত্রী ও ধনরাজন। রাকেশ মাসির চোট থাকায় ডিফেন্সিভ স্ক্রিনে মণীশ মৈথানি।
মহমেডান শিবিরে যখন ডুবে ডুডু-র চিন্তায়, তখন সালগাওকর কোচ ডেরিক পেরিরা-র গলায় দলের মূল অস্ত্র নিয়ে আত্মবিশ্বাস। “ডুডুর অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। ও ভারতে খেলেছে এর আগে। অনুশীলন খুব ভাল করছে। গোলের মধ্যেও আছে। আশা করছি কাল ও নিজের ফর্ম ধরে রাখবে।” ডুডু-চিকাওয়ালিরা অনুশীলন করলেও অসুস্থ থাকায় এ দিন মাঠে আসতে পারেননি ডারেল ডাফি।
শুধু ডুডু নয়, সঞ্জয়ের চিন্তার তালিকায় রয়েছে নিজের দলের স্ট্রাইকার সমস্যাও। চোটের জন্য অসীম নেই। জোসিমারও অনুশীলন করতে পারেননি এ দিন। সাদা-কালো কোচ বলছেন, “আমার হাতে বিকল্প স্ট্রাইকার কম। মেডিক্যাল পরীক্ষা হবে জোসিমারের। ম্যাচের দিন সকালে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।” যা পরিস্থিতি, তাতে নবিকেই সেন্টার ফরোয়ার্ড খেলাবেন সঞ্জয়। শ্যাডো স্ট্রাইকারে তারো হাসিগাওয়া। মাঝমাঠে পেন, স্যামসন ও ইসফাক। তিন দিনে দুটো ম্যাচ খেলে ক্লান্তি সমস্যাও রয়েছে। “পুণেতে দ্বিতীয়ার্ধে ফুটবলাররা হাঁফিয়ে উঠেছিল। কিন্তু অজুহাত দিলে হবে না। কাল জিততে হবে,” বলে দিলেন মহমেডান কোচ। |
শনিবারে আই লিগ
মহমেডান: সালগাওকর (যুবভারতী ৬-০০)। |