|
|
|
|
বনধ ডাকলেন নীতীশ, বিজেপির রেল অবরোধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা
২১ ফেব্রুয়ারি |
বিশেষ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে ভোটের আগে আন্দোলনের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ল জেডিইউ এবং বিজেপি। আজ মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ১ মার্চ বিহার বনধের ডাক দিলেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিজেপি নেতা সুশীল মোদী ২৮ ফেব্রুয়ারি ডাক দিলেন রেল রোকো-র। বিহারে পরপর দু’দিন এই কর্মসূচি রূপায়িত হলে শুধু বিহার নয়, বিপর্যস্ত হবে সারা ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
আজ বিধানসভার লবিতে নীতীশ কুমার বলেন, “সীমান্ধ্রের বিশেষ মর্যাদা পাওয়ার মধ্যে দিয়ে এটা স্পষ্ট যে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক কারণে বিহারকে নিয়ে ধোঁকাবাজি করেছে। সনিয়া গাঁধী বলার পরে এক দিনের মধ্যে সীমান্ধ্রকে বিশেষ মর্যাদা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।” সীমান্ধ্রের এই বিশেষ সুবিধা পাওয়া নিয়ে তাঁদের যে কোনও আপত্তি নেই তা জানিয়ে নীতীশ এ দিন বলেন, “সীমান্ধ্র পাওয়ায় আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু বিহারের দীর্ঘদিনের দাবিকে যে ভাবে নস্যাৎ করে দেওয়া হচ্ছে, তার জন্য রাজ্যের মানুষের কাছে আহ্বান ১ মার্চ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে হরতাল পালন করুন।”
নীতীশের ঘোষণার পরে বিজেপিও এই দাবিকে সামনে রেখে লড়াইয়ে নেমে পড়েছে। কাল রাজ্যসভায় তেলঙ্গানা বিল পাশ হওয়ার সময় বিজেপি এবং জেডিইউ একযোগে বিহারের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে লড়াই করে। সেই কারণে ভোটের আগে জেডিইউযাতে এই নিয়ে একা কৃতিত্ব না নিতে পারে, তার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি রেল রোকোর সিদ্ধান্ত নেন বিজেপি নেতৃত্ব।
সুশীল মোদী এ দিন বলেন, “নীতীশের উচিত ছিল সকলের সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। এই নিয়ে বিধানসভায় সর্বদলীয় সিদ্ধান্ত হয়েছিল।”
নীতীশ দাবি করেন, বিশেষ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে বিহারের ১ কোটি ১৮ লক্ষ মানুষের স্বাক্ষর-সম্বলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা পড়েছে। পটনা এবং দিল্লিতে এই নিয়ে বড় সভা করা হয়েছে। দিল্লির সভায় দু’কিলোমিটার জুড়ে মানুষের জমায়েত হয়েছিল। তার পরে প্রধানমন্ত্রীর গঠিত রঘুরাজন কমিটি সাতটি রাজ্যকে পিছিয়ে পড়া হিসেবে চিহ্নিত করে। তার পরেও কেন্দ্র বিহারের দাবিকে মানেনি।
রাজনৈতিক শিবিরের অনেকেই নীতীশের এই অবস্থানকে কংগ্রেসের উপর পুঞ্জীভূত রাগের প্রকাশ হিসেবে দেখছেন। গত বছর নরেন্দ্র মোদীকে কেন্দ্র করে এনডিএ-র সঙ্গে নীতীশের সম্পর্ক আলগা হতে শুরু করার পরে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে নীতীশের যথেষ্ট হৃদ্যতা তৈরি হয়েছিল। ‘পিছিয়ে পড়া’র সংজ্ঞা পরিমার্জন করার দাবি নীতীশই তুলেছিলেন। তার পরেই রঘুরাজন কমিটি গঠন করা হয়। তখন মনে করা হয়েছিল, নীতীশ এনডিএ ছাড়লে ইউপিএ তাঁর সঙ্গেই হাত মেলাবে। নীতীশ পরে এনডিএ ছাড়লেনও।
তখনও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাঁকে তুষ্ট করার অনেক রকম চেষ্টাই জারি ছিল। কিন্তু পাশাটা উল্টে গেল লালুপ্রসাদ যাদব জেল থেকে বেরনোর পরেই। লালু ফের কংগ্রেসের কাছাকাছি চলে এলেন। লোকসভা নির্বাচনে লালুর সঙ্গে কংগ্রেসের জোট-সম্ভাবনা এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে গেল। তার জেরেই নীতীশের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্বও নতুন করে বেড়ে গেল। |
|
|
|
|
|