|
|
|
|
লোকসভার লক্ষ্যে কাল দিল্লির বাইরে অরবিন্দ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২১ ফেব্রুয়ারি |
দিল্লির কুর্সি ছেড়ে এ বারে দিল্লির বাইরে পাড়ি দিচ্ছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। লোকসভায় নিজেদের শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে। রবিবার দিল্লির বাইরে প্রথম জনসভা করবেন তিনি। হরিয়ানার রোহতকে। সেখান থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে আম আদমি পার্টি তথা আপ-এর লোকসভা ভোটের প্রচার। এর মোকাবিলায় বিজেপি চাইছে, কেজরীবালকে দিল্লি-প্রসঙ্গেই আবদ্ধ করে রাখতে। তাদের বক্তব্য, দিল্লির জনতাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না রেখে যিনি ময়দান ছেড়েছেন, তিনি এখন ভিন্ রাজ্যের মানুষকে বোকা বানাতে চান। দুর্নীতিগ্রস্ত কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়া এই মানুষটির মুখোশ খুলে দেওয়া হবে ঘোষণা করেছে বিজেপি।
গোড়া থেকেই কেজরীবালের আশঙ্কা ছিল, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হয়ে থাকলে তিনি শুধু রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবেন। সেই পদ ছাড়ার পরপরই তাই নেমে পড়েছেন গোটা দেশে শাখা-প্রশাখা বিস্তারের কাজে। লোকসভা ভোটে দলের প্রথম প্রার্থী-তালিকাও প্রকাশ করেছেন ইতিমধ্যে। এ বারে নিজে বেরোচ্ছেন গোটা দেশে ঘুরে দলের জন্য সমর্থন আদায়ে। কেজরীবাল আজ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর আমি এখন লোকসভা ভোটের জন্য গোটা দেশেই যথেষ্ট সময় দিতে পারব। তবে আমি নিজে লড়ব কি না, তা এখনও ঠিক করিনি।”
ঘরোয়া আলোচনায় অবশ্য আপ নেতারাও মানছেন যে, কেজরীবালকে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইলেও এ বারের নির্বাচনে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে গোটা দেশে যদি কয়েক ডজন আসনও বের করে আনা যায়, তাতে আপ-এর শক্তি বাড়বে। কোনও দলের পক্ষেই আপ-কে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না তখন। কে বলতে পারে, কংগ্রেস বা বিজেপি ছাড়া যদি কোনও জোট সরকার হয় কেন্দ্রে, লোকসভায় শক্তি থাকলে কেজরীবালের ভাগ্যও খুলে যেতে পারে!
আপ-এর এক নেতার কথায়, “এখন তো সব আঞ্চলিক দল দিল্লিতে এসে জাতীয় স্তরে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা জাহির করতে ব্যস্ত। ভিন্ রাজ্যে প্রার্থী দিচ্ছে তারা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপ-এর আন্দোলন গোটা দেশে ছাপ ফেলেছে। এর রেশ থাকতে থাকতেই গোটা দেশে নিজেদের শক্তি যতটা সম্ভব বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য।” জাতীয় স্তরে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতেই কেজরীবাল লাগাতার দুই দলের দুই প্রধান মুখকে আক্রমণ করে যাচ্ছেন। আজও তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে নরেন্দ্র মোদীকে লেখা চিঠি প্রকাশ করেন। যেখানে তিনি যেমন রাহুল গাঁধীর সমালোচনা করেছেন, তেমনই মোদীর কাছে জানতে চেয়েছেন রিলায়্যান্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানী সম্পর্কে তাঁর কী মতামত। কারা জোগাচ্ছে মোদীর জনসভার অর্থ?
কেজরীবালের এই ফাঁদে পা দিতে বিজেপি নারাজ। বেঙ্কাইয়া নায়ডু আজ বলেন, “যে দল দুর্নীতিগ্রস্ত কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়েছে, নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন করার কোনও নৈতিক অধিকারই নেই তাদের।” এর পাশাপাশি আপ শীর্ষনেতার উদ্দেশে পাল্টা প্রশ্নও ছুঁড়ে দেন বেঙ্কাইয়া, “কেজরীবাল শুধু নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখছেন, কিন্তু রাহুল গাঁধীকে লিখছেন না কেন? শুধু কি কংগ্রেসকে বাঁচানোর জন্য?” কেজরীবাল অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি রাহুলকেও চিঠি লিখবেন। ভোটে রাহুলের টক্কর নেওয়ার জন্য অনেক দিন আগেই তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠ সেনাপতি কুমার বিশ্বাসকে অমেঠী থেকে প্রার্থী করার ঘোষণা করেছেন।
কেজরীবাল যতই রাজধানীর বাইরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করুন, তাঁকে দিল্লি নিয়ে ক্রমাগত বিঁধতে চাইছে বিজেপি। তাদের মূল বক্তব্য, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্র ধরে ধরে ইস্তাহার প্রকাশ করেছিল আপ। সেই সব প্রতিশ্রুতির সিংহভাগই পালন করেননি কেজরীবাল। এমনকী, সামগ্রিক ভাবে দিল্লির জনতাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও রক্ষা না করেই তিনি ময়দান ছেড়ে পালিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় কেজরীবাল ঘোষণা করেছিলেন, ২০১২-র অক্টোবর থেকে ২০১৩-র এপ্রিল পর্যন্ত দিল্লিতে যাঁরা বিদ্যুৎ বিলের টাকা জমা দিতে পারেননি, তাঁদের অর্ধেক বকেয়া মেটাবে দিল্লি সরকার। ওই প্রস্তাবে শুক্রবার স্থগিতাদেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
|
আপে গাঁধী |
আম আদমি পার্টির সঙ্গে জুড়ল এক গাঁধীর নামও। আপ সদস্য হলেন গাঁধীজির নাতি রাজমোহন গাঁধী। তিনি বলেছেন,“এরা দুর্নীতির কট্টর বিরোধী। সেটাই আমার ভাল লেগেছে। যদি এক জন সাধারণ মানুষ রাজনীতিতে যোগ দিয়ে তার অংশ হয়ে ওঠেন, সেটা অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য।” দলে যোগদানের জন্য আপ-এর তরফে তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি দেবদাস গাঁধীর ৭৮ বছর বয়সী পুত্র রাজমোহনের। এ দিকে, শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি রাহুল সিংহ অণ্ণা হজারেকে খোলা চিঠি দিয়ে বলেছেন, তিনি যেন তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলানোর আগে ভাবেন। |
|
|
|
|
|