|
|
|
|
মুজফ্ফরপুরে মোদীর পাল্টা লালুর চায় পে চর্চা |
স্বপন সরকার • পটনা
২১ ফেব্রুয়ারি |
ভোটের বাজারে ‘চা’-এর জনপ্রিয়তা ক্রমশই বেড়ে চলেছে।
বিজেপির পর এবার আরজেডি ‘চায়ে পে চর্চা’ অর্থাৎ চায়ের কাপে তুফান তুলে আলোচনার উপর ভরসা করতে শুরু করল। চা’কে ঘিরে আরজেডির প্রথম রাজনীতি-চর্চা শুরু হল আজ মুজফ্ফরপুর জেলায়। নরেন্দ্র মোদী আগামী ৩ মার্চ এই জেলায় সভা করতে আসছেন। সেই উপলক্ষ্যে গত এক মাস ধরে শহরে চায়ের দোকান খুলে প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। এ বার তাকে ঠেকাতে লালুর দল ওই একই পথে হেটে বিজেপিকে ঠেকানোর জন্য বেছে নিয়েছে চা’কেই।
আজ মুজফ্ফরপুরে ১৭টি চায়ের দোকান খুলে রীতিমতো প্রচারে নেমে গেল আরজেডি। যেখানে চা এবং বিস্কুট মিলবে বিনে পয়সায়। দুই দলের নেতারাই নরেন্দ্র মোদীর সভাকে পাখির চোখ করেছেন। আরজেডি বলছে, নরেন্দ্র মোদী চা বিক্রি করতেন বলে প্রচার করে বিজেপি পিছিয়ে পড়া গরিব মানুষের ভোট টানতে চাইছে। মিথ্যে প্রচারের মধ্যে দিয়ে বিজেপি ভোটারকে বিভ্রান্ত করছে। ৩ মার্চ পর্যন্ত আরজেডিও চায়ের দোকানের সাহায্যে সেই প্রচারকে ঠেকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরেই আরজেডি অন্য জেলাগুলিতেও একই কায়দায় চায়ের দোকান খুলে ভোটের প্রচারে যাবে বলে দল থেকে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে বিজেপি বলছে, আমরা সব জায়গায় ‘নমো’ নামে চায়ের দোকান করে নরেন্দ্র মোদীর উপর প্রচার চালাচ্ছি। পটনার সভাতেও তাই হয়েছে। সুতরাং এটা নতুন না। আরজেডি বিজেপিকে অনুসরণ করে চায়ের দোকান খুলে প্রচারে যেতে চাইছে।
নেতারা যাই বলুন, বিহার রাজনীতির পরম্পরা বলছে, উত্তর বিহারের প্রাণকেন্দ্র এই মুজফ্ফরপুর জেলা। রাজ্যের উত্তর অংশের প্রায় ১৮টি জেলার অনেকটাই জাতপাতের ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রিত হয় এখান থেকে। মূলত পিছিয়ে পড়া জাতি এবং ভূমিহারের আধিপত্য এখানে। এখান থেকে জর্জ ফার্নান্ডেজ চার বার লোকসভায় গিয়েছেন। রাজনীতিকরা বলছেন, এই জেলার ভোটাররা এতটাই আবেগপ্রবণ যে তাদের সিদ্ধান্ত বা প্রচার উত্তর বিহারের বিভিন্ন অংশকে প্রভাবিত করে। মুজফ্ফরপুর কী করছে, তার দিকে তাকিয়ে থাকে সীতামঢ়ী, শিওহর, মোতিহারি, দ্বারভাঙার মতো জেলাগুলি। ফলে রাজনীতিকরা এই জেলাটিকে ভোটের বিচারে উত্তর বিহারের রাজধানী মানে।
সেখানে এবার পিছিয়ে পড়া জাতির একজন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ভোট চাইতে আসছেন। মনে করা হচ্ছে, তাতে শঙ্কিত লালু প্রসাদের দল। বিজেপির মুজফ্ফরপুর জেলার নেতা রবীন্দ্র প্রসাদ সিংহের কথায়, “আরজেডি ভয় পেয়েছে। তাই বিজেপিকে অনুসরণ করে চায়ের আশ্রয় নিয়েছে আরজেডি। তাতে যে মানুষ বিভ্রান্ত হবেন না সেটাও বুঝতে পারছেন ওই নেতারা। এর প্রমাণ পাওয়া যাবে নরেন্দ্র মোদীর সভাতেই।”
আরজেডির রাজ্য মুখপাত্র এবং মুজফফ্রপুরের নেতা ইকবাল আহমেদ শামী বলেন, “আরজেডি গরিবদের দল। লালু প্রসাদ যাদবের নিজের চায়ের দোকান ছিল পটনায়। প্রকৃত অর্থে লালুজি এবং তার পরিবার এক সময়ে চা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। তাঁর বাবা এই কাজ শুরু করেছিলেন।” তাঁর অভিযোগ, “নরেন্দ্র মোদীর রেলে চায়ের ক্যাটারিং ব্যবসা ছিল। মিথ্যে প্রচার করে গরিবদের বিভ্রান্ত করছে বিজেপি। মানুষকে সত্যটা জানাতেই আমরাও চায়ের মাধ্যমে মানুষের কাছে যেতে চাইছি।” |
|
|
|
|
|