গ্ল্যাডিওলাস ও গাঁদা চাষের পরে কোচবিহারে গোলাপ চাষে উৎসাহ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা উদ্যান পালন দফতর। গত মরসুমে জেলায় গ্ল্যাডিওলাস ফুল চাষের এলাকা ছিল ১৮ হেক্টর। এ বছরে বেড়ে হয়েছে ৩৫ হেক্টর। গাঁদা চাষের জমির পরিমাণ ৩২ হেক্টর থেকে ৪০ হেক্টরে। জেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে গোলাপ চাষ সফল হওয়ায় তিন হেক্টর এলাকায় গোলাপ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন দফতরের আধিকারিকরা। জেলা উদ্যানপালন দফতরের সহকারী আধিকারিক দীপক সরকার বলেন, “গ্ল্যাডিওলাস ও গাঁদা ফুল লাগোয়া জেলা তো বটেই অসমে বিক্রি হচ্ছে। পরীক্ষামূলক গোলাপ চাষ সফল হওয়ায় এবার আমরা গোলাপ নিয়ে চাষিদের উৎসাহ দিচ্ছি।”
জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে গোলাপ চাষ হলেও পরিকল্পিত ভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুলের চাষ শুরু হয়নি। আবহাওয়া গোলাপ চাষের পক্ষে কতটা অনুকূল তা নিয়ে সংশয় থাকায়, পুন্ডিবাড়ি ও শীতলখুচির দুই চাষিকে পরীক্ষামূলক গোলাপ চাষে নামার পরামর্শ দেওয়া হয়। বছর ঘুরতেই দেখা গিয়েছে, ‘মিনিকুইন’ জাতের গোলাপে দু’জনের চার বিঘার বাগান ভরে উঠেছে। বিয়ের মরসুমে তাঁরা কিছু গোলাপ বিক্রিও করেছেন।
ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছর বিশেষ বিশেষ দিনে কোচবিহারে ফুল বাজারের দখল নেয় বেঙ্গালুরুর ‘ডাচ’ ও দক্ষিণবঙ্গের ‘মিনিকুইন’ গোলাপ। আগামী মরসুমে যাতে কোচবিহারের উৎপাদিত গোলাপ এতে সামিল হতে পারে তা নিয়ে পরিকল্পনা হয়েছে। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “আমরা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ফুল উৎপাদনের উপরে বিশেষ ভাবে জোর দিচ্ছি।” সরকারি নিয়ম মেনে সর্বাধিক সাড়ে সাত বিঘা জমিতে গোলাপ চাষের জন্য ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান ও অন্তত ৭০ জনকে ভর্তুকির হিসাব দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। ঝাউকুঠির এক বাসিন্দা ময়নাল শেখ বলেন, “ছয় বিঘাতে গ্ল্যাডিওলাস চাষ করে ভালই সাফল্য পেয়েছি। গুয়াহাটিতেও ফুল পাঠাচ্ছি। সরকারি সাহায্য পেলে এ বারই গোলাপ চাষে নামব।” জেলা ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নীরেন দেব বলেন, “বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মরসুমে বাইরে থেকে প্রচুর গোলাপ আনতে হয় বলে বাড়তি পরিবহণ খরচ লাগে। জেলায় চাষ হলে ক্রেতাদের কম দামে ফুল বিক্রি করলেও লাভের অঙ্ক বাড়বে। চাষিরাও নিশ্চিত ভাল দাম পাবেন।” |