|
|
|
|
ব্যাঙ্কহীন পঞ্চায়েতে মার্চের মধ্যে শাখা খোলার নির্দেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও ব্যাঙ্কই নেই। ফলে, সমস্যায় পড়েন ওই সব এলাকার মানুষ। পাশের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে তাঁরা কোনও না- কোনও ব্যাঙ্কের গ্রাহক হন। পরিস্থিতি দেখে আগামী মার্চের মধ্যে ওই ৭৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্ক চালু করতে উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের নিয়ে মেদিনীপুরে এক বৈঠক হয়। ছিলেন জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ প্রমুখ। ওই বৈঠকেই আগামী মার্চের মধ্যে সমস্ত ব্যাঙ্কহীন গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্যাঙ্ক খোলার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়। |
|
পশ্চিমে ব্যাঙ্ক নেই ৭৩টি পঞ্চায়েতে |
• মেদিনীপুর সদর (৫) • শালবনি (১) • গড়বেতা ১ (৪) • গড়বেতা ২ (৩) • খড়্গপুর ১ (৫) • সবং (১) • পিংলা (৪)
• গোপীবল্লভপুর ১ (১) • নয়াগ্রাম (৩) • দাসপুর ১ (১) • দাসপুর ২ (৫) • বিনপুর ১ (২) • বিনপুর ২ (১)
• মোহনপুর (২) • ঝাড়গ্রাম (২) • নারায়ণগড় (৩) • কেশিয়াড়ি (৩) • দাঁতন ১ (৪) • ঘাটাল (৫) • খড়্গপুর ২ (৩) • ডেবরা (৩)
• চন্দ্রকোনা ১ (২) • চন্দ্রকোনা ২ (৩) • সাঁকরাইল (৩) • জামবনি (৪)। |
• বন্ধনীর মধ্যে পঞ্চায়েতের সংখ্যা, বন্ধনীর বাইরে ব্লকের নাম |
|
বৈঠক শেষে জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “যে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্যাঙ্ক নেই, সেই সব গ্রাম পঞ্চায়েতে আগামী মার্চের মধ্যে ব্যাঙ্ক খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, ওই সব গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের সুবিধে হবে।” নির্দেশ মতো মার্চের মধ্যে কী ব্যাঙ্ক খোলা সম্ভব? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আধিকারিক বলেন, “আমরা সব রকম চেষ্টা করব। তবে শাখা খুললেই তো হল না। শাখাটি চালু রাখতে হবে। সেই ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী প্রয়োজন।” পশ্চিম মেদিনীপুরে সবমিলিয়ে ২৯টি ব্লক রয়েছে। ৮টি পুরসভা এলাকা রয়েছে। ২৯টি ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ২৯০টি। এরমধ্যে ৭৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও ব্যাঙ্কেরই শাখা নেই। না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, না সমবায় ব্যাঙ্ক। ফলে, সমস্যায় পড়েন ওই সব এলাকার মানুষ। পাশের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে তাঁরা কোনও ব্যাঙ্কের গ্রাহক হন। সেখানেই অ্যাকাউন্ট খোলেন। টাকা জমা রাখেন, তোলেন। অথচ, এক সময় জেলাস্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও না- কোনও ব্যাঙ্কের শাখা থাকবে। সেটা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক হতে পারে অথবা সমবায় ব্যাঙ্ক। সিদ্ধান্ত অবশ্য এখনও কার্যকর হয়নি। অন্যদিকে, এখন গ্রামের মানুষও ব্যাঙ্কের উপর অনেকটা নির্ভরশীল। কারণ, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা উপভোক্তাদের কাছে ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই পৌঁছয়। আবার, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মজুরিও ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মেলে। মজুরির টাকা শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
মঙ্গলবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী মার্চের মধ্যেই ওই ৭৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্ক খোলা হবে। শহর এলাকাগুলোয় প্রায় প্রতিটি ব্যাঙ্কেরই শাখা রয়েছে। একটি ব্যাঙ্কের একাধিক এটিএমও রয়েছে। তবে, গ্রামে শাখা খোলার ক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্যাঙ্ক তেমন আগ্রহ দেখায় না। পশ্চিম মেদিনীপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত এবং সমবায় মিলে ৩১টি ব্যাঙ্ক কাজ করে। এই ৩১টি ব্যাঙ্কের সবমিলিয়ে ৩৮৬টি শাখা রয়েছে। ৯৫টি এটিএম রয়েছে। জেলা পরিষদের এক সদস্য বলছিলেন, “জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ২৯০টি। এরমধ্যে আবার ৭৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্ক নেই। অন্যদিকে, জেলায় বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ৩৮৬টি শাখা রয়েছে। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, গ্রামে শাখা খোলার ক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্যাঙ্ক তেমন আগ্রহ দেখায় না।” গ্রামাঞ্চলে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দিতে ইতিমধ্যে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এ জেলাতেও ‘ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশেন প্রোগ্রাম’ কর্মসূচি চলছে। আগে স্টেট ব্যাঙ্ক, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক প্রভৃতি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছিল।
কোন ব্লকের কোন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্ক নেই, তালিকায় তার উল্লেখ ছিল। বলা হয়েছিল, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কোথায় কোথায় ব্যাঙ্কের শাখা খুলতে ইচ্ছুক, তার একটি তালিকা দিতে। ওই তালিকা জেলায় জমাও পড়ে। পরে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে কোন ব্যাঙ্কহীন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোন ব্যাঙ্ক শাখা খুলবে, তা ঠিক করা হয়েছে। ওই তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সমস্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে। নির্দেশ মতো আগামী মার্চের মধ্যে ওই ৭৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্কের শাখা খোলা হয় কি না, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|