|
|
|
|
মিড ডে মিলে গাফিলতি, বিক্ষোভ বিনপুরের স্কুলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বিনপুর |
জানুয়ারি মাসে কাগজে কলমে ১৯দিন মিড ডে মিল খেয়েছে পড়ুয়ারা। বিডিও’র কাছে পাঠানো মাসিক রিপোর্টে এমনই তথ্য জানিয়েছিলেন বিনপুরের যশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃণালকান্তি পাত্র। সেখানে এক সহ শিক্ষকের স্বাক্ষর ও রান্নার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যার টিপ সই ছিল। সেই তথ্যের প্রতিলিপি জোগাড় করে পিলে চমকে গিয়েছে অভিভাবক ও স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যাদের। তাঁদের দাবি, জানুয়ারি মাসে মাত্র ৪দিন মিড ডে মিল রান্না হয়েছে স্কুলে। তাঁদের আরও অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে পাঠানো মিড ডে মিলের রিপোর্টে স্কুলের-সহ শিক্ষকের সই ও স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর টিপসইটি জাল। গ্রামবাসীর দাবি, চাপে পড়ে শনিবার স্কুল বন্ধ রাখেন প্রধান শিক্ষক। সোমবারও প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসেন নি। সোমবার গ্রামবাসীরা বিনপুর-১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক নীহাররঞ্জন ঘোষের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দিয়ে জানান এ বিষয়ে প্রতিকার না-হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল বন্ধ থাকবে। সোমবারই স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন গ্রামবাসী ও অভিভাবকদের একাংশ। |
|
মিড ডে মিল নিয়ে বিক্ষোভ বিনপুরের স্কুলে। |
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তদন্ত-সহ শাস্তি ও তাঁকে অপসারণের দাবিতে বিনপুরের পালইডাঙাচকে ঝাড়গ্রাম-বিনপুর রাজ্য সড়কে অবরোধ করেন গ্রামবাসী ও অবিভাবকদের একাংশ। এরপর বিনপুর থানার আইসি সুমন চট্টোপাধ্যায় যশপুর গ্রামে যান। গ্রামবাসী ও অভিভাবকেরা আইসিকে লিখিত অভিযোগপত্র দেন। এ দিন স্কুলের সহ শিক্ষক হরেকৃষ্ণ মাহাতো এসেছিলেন। দুপুরে বিনপুর-১ (লালগড়) ব্লকের মিড ডে মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুব্রত মণ্ডল স্কুলে পৌঁছন। স্ব-সহায়ক দলের সদস্যা, অভিভাবক ও গ্রামবাসীর অভিযোগ শোনেন তিনি। সহ শিক্ষক হরেকৃষ্ণবাবু বলেন, মিড ডে মিলের রিপোর্টে আমার স্বাক্ষরটি জাল। হরেকৃষ্ণবাবুর নমুনা স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন ব্লক মিড ডে মিল আধিকারিক সুব্রতবাবু। অভিভাবক বরুণ করণ, দুর্গাচরণ প্রতিহার, বোম্বাই মুর্মুরা বলেন, “চরম অরাজকতা চালাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। স্কুল উন্নয়নের টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে।” রান্নার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর দলনেত্রী গীতারানি ঘোষ বলেন, “মিড ডে মিলের রিপোর্টে যে টিপ সই রয়েছে, সেটি আমার নয়।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিপূর্বে একাধিক বার নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শো-কজ করেছিলেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক। প্রধান শিক্ষক মৃণালকান্তি পাত্র অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “গ্রামবাসী ও অভিভাবকেরা আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে চক্রান্ত করছেন। আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাই স্কুলে যাই নি।” কেন চক্রান্ত করা হচ্ছে সেই সদুত্তর অবশ্য দিতে পারেন নি প্রধান শিক্ষক। বিনপুর-১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, “ওই প্রধান শিক্ষককে কয়েক মাস আগে মিড ডে মিল নিয়ে শো-কজ করেছিলাম। তখন উনি মুচলেকা দিয়েছিলেন।” বিনপুর-১ (লালগড়) ব্লকের বিডিও অভিজিৎ সামন্ত বলেন, “গরমিলের অভিযোগ পেয়েছি। আজ, বুধবার বিনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও অভিযোগকারীদের হাজির থাকতে বলা হয়েছে। ওই বৈঠকে পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি, স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধি ও বিনপুর থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষ থাকবেন। সবার সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
|
|
|
|