নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যের বহু এলাকা এখনও মোবাইল পরিষেবার আওতার বাইরে। সেই সব এলাকায় ওই পরিষেবা পৌঁছতে পরিকাঠামো নির্মাণ নিয়ে টেলিকম সংস্থাগুলির পরিকল্পনা জানতে চাইল রাজ্য। তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের আশা, চলতি সপ্তাহেই সংস্থাগুলির থেকে সেই তথ্য মিলবে।
দুর্গম জায়গার পাশাপাশি সন্ত্রাস প্রবণ এলাকায় জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে মোবাইল সংযোগ গড়তে আগ্রহী কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয়েই। রাজ্যের কোন কোন এলাকায় মোবাইল পরিষেবা পৌঁছয়নি, তা চিহ্নিত করতে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতরের রাজ্য শাখা টেলিকম এনফোর্সমেন্ট রিসোর্স অ্যান্ড মনিটরিং (টার্ম) সেল-কেও বিষয়টি জানানো হয়। টেলিকম দফতরের মতে, কোনও এলাকার তিন কিলোমিটারের মধ্যে টাওয়ার না-থাকলে তাকে পরিষেবার আওতার বাইরে ধরা হয়। শিল্পের পরিভাষায় এগুলি হল ‘শ্যাডো জোন’।
মঙ্গলবার বেঙ্গল চেম্বারের এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি সচিব সতীশ তিওয়ারি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের ‘শ্যাডো জোন’-এ দ্রুত মোবাইল পরিষেবা পৌঁছে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা শীঘ্রই ওই সব এলাকায় পরিষেবা পৌঁছতে টেলিকম সংস্থাগুলিকে বলেছি। বিএসএনএল জানিয়েছে, তারা প্রায় ৪০০ এলাকায় মোবাইল পরিষেবা দিতে টাওয়ার বসাচ্ছে। অন্য সংস্থাগুলিও এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছে।”
তথ্যপ্রযুক্তি দফতর সূত্রে খবর, খাস কলকাতায় মোবাইলের সিগন্যাল নিয়ে কোথাও কোথাও সমস্যা থাকলেও এ রকম কোনও শ্যাডো-জোন নেই। টার্ম সেল-এর তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্যের বাকি জেলাগুলিতে এখনও পর্যন্ত মোট ৮৯৩টি এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে মোবাইল পরিষেবা নেই। ওই তালিকা অনুযায়ী, কয়েকটি জেলায় এ ধরনের এলাকার সংখ্যা এই রকম: দার্জিলিং-১৮, জলপাইগুড়ি-২৭, উত্তর দিনাজপুর-২২, দক্ষিণ দিনাজপুর-৫৫, বাঁকুড়া-১০১, নদীয়া-৬, মালদহ-২৪, মুর্শিদাবাদ-১০, বীরভূম-১৩, বর্ধমান-১৪, উত্তর ২৪ পরগনা-৪, পুরুলিয়া-২৩৮, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর-৩০৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-৮।
ওই সব এলাকায় পরিষেবা চালু করতে গত মাসে টেলি সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের কর্তারা। শ্যাডো-জোনের তালিকা দিয়ে সেখানে পরিষেবা সম্প্রসারণ পরিকল্পনা জানতে চায় রাজ্য। দফতরের কর্তারা জানান, সেই রিপোর্ট পেলে তা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হবে।
বিএসএনএল-এর ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেলের সিজিএম এস কে ভাদুড়ি জানান, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ৪০০টি টাওয়ার বসানোর কাজ চলছে। এ বছরের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে তাঁদের আশা। এখন রাজ্যে তাঁদের টাওয়ারের সংখ্যা প্রায় ২৪০০। পাশাপাশি, মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা-সহ কিছু দুর্গম এলাকায় টাওয়ার বসাতে রাজ্যের আর্জি খতিয়ে দেখে তা অনুমোদনের জন্য সংস্থার সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। তবে টাওয়ার বসানোর পরে তা চালু রাখতে সরকার ও পুলিশের সহায়তা জরুরি বলে দাবি তাঁর। প্রয়োজনে থানাতেই টাওয়ার বসানোর জায়গা চাওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।
|