সম্প্রতি জিডি বিড়লা সভাঘরে অনুষ্ঠিত হল ‘প্রাণসখা’। ছিল গান ও পাঠের অনুষ্ঠান। অংশ নিয়েছিলেন মোহন সিংহ, লোপামুদ্রা মিত্র, সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। ১৮৬৩-র ১২ জানুয়ারি, সোমবার সমস্ত আকাশ বাতাস যেন মুখরিত হল। তিনি আসছেন। সপ্ত ঋষির তিনি একজন...তাই সুরলোকে শঙ্খ...আর নরলোকে প্রাণে প্রাণে তারই আগমনী। এ ভাবেই শুরু হল সে দিনের অনুষ্ঠান। লোপামুদ্রা মিত্রের কণ্ঠে ‘ওই মহামানব আসে’ গানটি যেন পূর্ণতার অনুভব আনে মনেপ্রাণে। |
পরের শিল্পী মোহন সিংহ গাইলেন ‘তোমারি তরে মা’। মানুষের মধ্যে যে নরশ্রেষ্ঠ, সেই তো নরেন্দ্র। লোপামুদ্রা গাইলেন ‘আলোকের এই ঝরনাধারায়।’ রামকৃষ্ণদেব একবার বলেছিলেন ‘নরেন তো হোমাপাখি, চোখ ফুটছে, ডানা মেলছে।’ মোহন সিংহের পরিণত কণ্ঠে ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’। এক সময়ে নরেনের মনে প্রশ্ন জেগেছিল ‘ঈশ্বর কি সত্যিই আছে?’ লোপামুদ্রা মিত্র গাইলেন ‘পিনাকেতে লাগে টঙ্কার’। কিন্তু কে দেবে তাকে ঈশ্বরের সন্ধান? মোহন সিংহ গাইলেন ‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে’। আকর্ষণ ছিল পাঠও। সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুললিত কণ্ঠে বিশেষ করে ‘অপূর্ব সেই মৃত্যু মুহূর্ত’ শুনে অনেক শ্রোতার চোখেই জল চলে আসে।
|
সম্প্রতি চৈতালী দাশগুপ্ত উপস্থাপনা করলেন তাঁর ভাবনা, লেখা এবং পরিচালনায় একটি গীতিআলেখ্য ‘আমার যাবার বেলাতে (হে মহাজীবন)। রবীন্দ্রনাথের গানে ও ব্যাখ্যায় ব্যক্ত করেছেন রবীন্দ্রনাথের শেষের ক’টা দিন। তাঁর মৃত্যুকে জীবনের অন্য রূপে দেখা, মরণকে দোসর মনে করা-- সবই আছে এই কাহিনিতে। শান্তিনিকেতন থেকে মৃত্যুর কিছু দিন আগে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়, বিভিন্ন চিকিত্সক তাঁর চিকিত্সা করেন। |
রবীন্দ্রনাথ সাহসী ছিলেন। সব রকম বাধা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে বলতেন। যিনি বলতেন, মৃত্যু জীবনেরই একটা অঙ্গ। অত শারীরিক কষ্টের মাঝেও চেষ্টা করতেন নতুন সৃষ্টির। নানা ঘটনায় ভরা নানা কাহিনি নিয়ে লেখা এই আলেখ্যটির পাঠে ছিলেন চৈতালী দাশগুপ্ত এবং অগ্নিমিত্র ঘোষ। গানে ছিলেন দেবাশিস রায়চৌধুরী এবং রোহিণী রায়চৌধুরী।
|
সম্প্রতি রবীন্দ্র সদনে অনুষ্ঠিত হল ‘সুরঙ্গমা কলা কেন্দ্র’র ‘শাওন গগনে’। সুরঙ্গমার ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায় শুরুতেই ছিল সম্মেলক গান। পরে বনশ্রী সেনগুপ্ত গাইলেন ‘আজি ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে’। গৌতম মিত্রের নিবেদনে ছিল ‘কে দিল আবার আঘাত’। সুছন্দা ঘোষ গাইলেন ‘শাওন গগনে’। সুচিন সিংহের ‘কিছু বলব বলে’। অনুষ্ঠানে প্রতিটি গানই ছিল সুনির্বাচিত। চন্দ্রাবলী দত্ত রুদ্রর ‘পাগলা হাওয়ার বাদল’, বাসবী বাগচির ‘জানি জানি তুমি এসেছ’, শান্তিপ্রিয় সেনগুপ্তের ‘এ পারে মুখর হল’, মধুছন্দা ঘটকের ‘নীল অঞ্জন ঘন’, অরুন্ধতী চট্টোপাধ্যায়ের ‘ওগো আমার শ্রাবণ’ সেই সুনির্বাচনের দাবি রাখে। এ ছাড়াও কারও কারও আরও অনুশীলনের প্রয়োজন। আবৃত্তিতে ছিলেন মৌ গুহ, ঊষসী সেনগুপ্ত, তাপস নাগ প্রমুখ।
|
কাব্যলোক আয়োজিত ‘আলো অমল কমলখানি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের শিল্পীরা ছিলেন সৈকত মিত্র, সুস্মিতা দত্ত, মনোশ্রী লাহিড়ি, মালবিকা ভট্টাচার্য প্রমুখ। পাঠে ছিলেন সুজিত দত্ত, রবীন্দ্রনাথ গৌতম প্রমুখ। সৈকত মিত্র তাঁর নিজের সুরের একটি গান প্রথমে ও পরে গাইলেন ‘যা যা উড়ে যা পাখি’ গানটি। সুস্মিতা দত্ত শোনালেন ‘মাতলো রে ভুবন’। পাঠে সুজিত দত্তের কণ্ঠে তবলা ও অক্টোপ্যাড সহযোগে শোনা গেল ‘দুগ্গা পুজোর প্যান্ডেলেতে’। শেষে ‘নটরাজ ডান্স অ্যাকাডেমি’র নৃত্যানুষ্ঠানটি ছিল মনে রাখার মতো। |