বৃষ্টি কম, পাট পচানো নিয়ে সমস্যায় চাষিরা
য়মিত মেঘের দেখা পাওয়া গেলেও বৃষ্টি অনিয়মিত। জল কমছে খালবিলে। যেটুকু জল থাকছে তার বেশির ভাগ ব্যবহার হচ্ছে আমন চাষে। ফলে, পাট পচানোর জল পেতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বলে দাবি চাষিদের। পাট কাটার সময় পেরিয়ে গেলেও জলের অভাবে অনেক পাট থেকে যাচ্ছে জমিতেই, জানিয়েছেন তাঁরা।
কালনা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত জুলাইয়ের প্রথমেই পাট কাটা শুরু হয়। তার পরে সেই জমিতেই শুরু হয় আমন ধান রোপণের কাজ। কিন্তু আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় বদলে গিয়েছে পুরো চিত্রটা। পাট না কাটতে পারায় আমন রোপণের কাজও পিছিয়ে যাচ্ছে অনেক জমিতে। কালনা মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় পাট চাষ হয়। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার এই মহকুমায় ৮০৫৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকে প্রায় ৪১৯০ হেক্টর জমিতে এই চাষ হয়েছে। পিছিয়ে নেই পূর্বস্থলী ১ ব্লকও। সেখানে চাষ হয়েছে ২৪৪৫ হেক্টর জমিতে। এ ছাড়া কালনা ১ ব্লকে ৮৫০ হেক্টর, কালনা ২-এ ৫৫০ হেক্টর ও মন্তেশ্বরে ২০ হেক্টর জমিতে এ বার পাট চাষ হয়েছে। চাষিরা জানান, শুরুর দিকে আর্দ্র আবহাওয়ার জন্য পাট গাছে পোকার সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল। তবে পরে ভাল বৃষ্টি হওয়ায় পাটের ফলন ভাল হয়। কিন্তু এখন সমস্যা তৈরি করেছে পরিমাণ মতো জলের অভাব, অভিযোগ তাঁদের।
কাদা চাপিয়ে পাট পচানো ভুল পদ্ধতি, মত বিশেষজ্ঞদের। —নিজস্ব চিত্র।
পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটুলি এলাকার চাষি খোকন ঘোষ বলেন, “প্রতি দিনই আকাশ কালো হয়ে যাচ্ছে মেঘে। কিন্তু সেই তুলনায় বৃষ্টি হচ্ছে কোথায়? আশপাশের খাল, বিল, পুকুরে যেটুকু জল রয়েছে তা নিয়ে পাট পচানোর জন্য চাষিদের মধ্যে লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে।” আর এক চাষি সহিদুল শেখের আক্ষেপ, “ছোট পুকুর থেকে যেটুকু জল পাওয়া যাচ্ছে তাতে পুরো পাটগাছ পচানো মুশকিল। পাটের গুণগত মান খারাপ হচ্ছে।”
জলের সমস্যার কথা মানছেন কৃষি কর্তারাও। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তাঁরা ‘জুট রিবোনার’ যন্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। এই যন্ত্রের সাহায্যে পাট গাছের আঁশ ছাড়িয়ে সেটি ছোট চৌবাচ্চার জলে পচিয়ে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু গোটা কালনা মহকুমায় ওই যন্ত্রের সংখ্যা হাতেগোনা। তাছাড়া এই পদ্ধতিতে শ্রমিকের সংখ্যাও লাগে বেশি।
মহকুমার সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “এই সময়ে চাষিদের সহনশীল হতে হবে। তাড়াতাড়ি পাট পচিয়ে অন্য চাষিকে সুযোগ দিতে হবে।” কৃষি দফতরের কর্তারা জানান, বহু জায়গায় পাট গাছকে জলে চুবিয়ে রাখার জন্য চাষিরা পাটের আঁটির উপরে কাদা বা কলার ভেলা চাপিয়ে রাখেন। ফলে, পাটের স্বাভাবিক রঙ নষ্ট হয়ে যায়। বাজারে দামও কম পাওয়া যায়। কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, পলিথিনের বস্তায় ভারি কোনও জিনিস পুড়ে কাদা অথবা কলার ভেলার বদলে পাটের আঁটির উপরে ব্যবহার করা হোক।
মহকুমার আর এক কৃষি বিশেষজ্ঞ নিলয় করের কথায়, “অনেক সময়ে পাট ছাড়ানোর পরেও আঁশ লেগে থাকে পাটের গায়ে।” ঝকঝকে পাট পেতে নিলয়বাবুর পরামর্শ, “দু’কেজি রাসায়নিক সারের সঙ্গে (ডিএপি সার) দু’কেজি চিটে গুড় মিলিয়ে সেটি একশো লিটার জলে গুলে একটি দ্রবণ তৈরি করতে হবে। জল থেকে পাট তুলে কোনও জায়গায় বিছিয়ে রাখার পরে ওই দ্রবণটি পাটের উপরে ছড়িয়ে দিতে হবে। ১০০ লিটারের দ্রবণ অন্তত ৩০০ কেজি ভেজা পাটে ব্যবহার করা সম্ভব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.