দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
খন্দে প্রতিশ্রুতি
সড়ক কয় যাহারে
হাল্কা বৃষ্টি হলেই গোড়ালি পর্যন্ত জল জমে যায়। আর ভারী বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। তখন যাতায়াত চলে প্রায় কোমর সমান জল ঠেলে। প্রতি বর্ষায় এই দুর্ভোগ পোহাতে হয় বেহালার ইসলামিয়া মাঠ সংলগ্ন বিবেকানন্দ পল্লি, রামকৃষ্ণ সরণি, গোয়ালপাড়া রোড, ঢালিপাড়ার বাসিন্দাদের। অভিযোগ, আজ পর্যন্ত এলাকায় কোনও নিকাশি ব্যবস্থা কার্যত গড়ে ওঠেনি। পুর কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।
কেন এই হাল?
বাসিন্দারা জানান, এই সব এলাকা ১২৯ এবং ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে রয়েছে। তাই দুই ওয়ার্ডের সীমানা এলাকার কোন অংশে কোন ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি কাজ করবেন তা নিয়ে একটা সমস্যা দীর্ঘ দিন ধরেই রয়ে গিয়েছে। বহু বার আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কিছু হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা রাজারাম দেবনাথের কথায়: “এই এলাকার উপর দিয়েই স্থানীয় দু’টি স্কুলের পড়ুয়ারা যাতায়াত করে। রাস্তা সারাইয়ের কাজও দীর্ঘ দিন হয়নি। তাই বর্ষায় দিনের পর দিন বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে পড়ুয়ারা।”
এলাকায় পা দিতেই বোঝা গেল বাসিন্দাদের ক্ষোভের কারণ। এই এলাকায় এমন অনেক রাস্তা রয়েছে যেগুলি দেখে বোঝার উপায় নেই সেগুলি কোনও দিন পিচের ছিল। সমস্ত আস্তরণ উঠে গিয়ে মাটির রাস্তা বেরিয়ে পড়েছে। কোনও রাস্তায় আবার এক হাত অন্তর খানাখন্দ। তার মধ্যে জমে রয়েছে বৃষ্টির জল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাদা, খন্দপথ দিয়ে চলাচল করাটাই এখানে দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁরা জানান, রাতে রাস্তাগুলো আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। একটু অসতর্ক হলেই হোঁচট খেতে হয়।
১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সংহিতা দাসের কথায়: ‘‘দুই ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী এলাকায় একটু সমস্যা রয়েছে। আমরা নিজেদের মধ্যে তা নিয়ে আলোচনাও করেছি। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” পাশাপাশি, ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার জল এই সব রাস্তার উপর দিয়ে গিয়ে সংলগ্ন একটি খালে পড়ে। তাই একটা সমস্যা রয়েছে। আমরা স্থানীয় পাম্পিং স্টেশনের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’’
শেষ কবে রাস্তা সারাইয়ের কাজ হয়েছিল তা মনে করতে পারেন না এলাকার বাসিন্দারা। তারা জানান, জমা জলের সমস্যা দূর না করে রাস্তা সারিয়ে কোনও লাভ নেই। কারণ রাস্তা সারাইয়ের পরে জল জমলে, কয়েক মাসের মধ্যে সেই রাস্তা আবার খারাপ হয়ে যাবে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বার বর্ষা এলেই শোনা যায়, এ বার রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু হবে। অথচ কোনও কাজই হয় না।
১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের মানিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওখানকার সমস্যা আমাদের নজরে রয়েছে। আমরা আলোচনাও করেছি। টাকা এলেই কাজ শুরু হবে।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.