পূর্ব কলকাতা
নেই পরিকাঠামো
নিভেছে আলো
তুন আলো বসল। কিন্তু পরিকাঠামো পাল্টানো না। ফলে অধিকাংশ আলোই ঠিকমতো জ্বলে না। আঁধারে ডুবে যায় সল্টলেকের একাধিক রাস্তা। সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। যদিও বিধাননগর পুরসভার আশ্বাস, পুজোর আগেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এমনিতেই রাত বাড়লে সল্টলেক শুনসান হয়ে যায়। তার উপরে বেশ কিছু রাস্তায় কয়েক মাস আলো জ্বলছে না। ফলে সন্ধ্যার পরে চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। এফডি, এফই ব্লক থেকে ৮ নম্বর ওয়ার্ড সমস্যা একই। বাসিন্দারা বার বার প্রশাসনকে জানিয়েছেন। অভিযোগ, প্রশাসন নির্বিকার। স্থানীয় বাসিন্দা গীতা মহাপাত্র বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে রাস্তায় লোক কমে যায়। তার উপরে বেশ কয়েক মাস ধরে রাস্তার আলো জ্বলছে না।
রাতে বেরোতে ভয় করে।’’ পুরসভা সূত্রে খবর, রাস্তার আলোর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে পুরসভা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি লিমিটেডের (ডব্লিউবিএসইডিসিএল) মধ্যে মতভেদ হয়েছিল। তবে সম্প্রতি এ নিয়ে বণ্টন কোম্পানি ও পুরসভার অলোচনা হয়েছে। পুরসভার আশ্বাস, পুজোর আগেই সমস্যার সমাধান হবে। কেন এই সমস্যা? পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ জানান, আগে সল্টলেকের রাস্তায় বাল্ব বা টিউবলাইট ব্যবহার করা হত। কিন্তু তাতে পর্যাপ্ত আলো হত না। তার পরিবর্তে সোডিয়াম ভেপার ল্যাম্প বসানো হয়। কিন্তু নতুন আলোর ব্যবহারের জন্য কেব্ল পরিবর্তনের দরকার ছিল। কারণ, সোডিয়াম ভেপার ল্যাম্পের জন্য বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। সাধারণ কেব্ল তা বহন করতে পারে না। ফলে মাঝেমধ্যেই কেব্ল ফল্ট হচ্ছে। আলো নিভে যাচ্ছে।
সল্টলেক পুরসভা সূত্রে খবর, আলো বসানোর জন্য এককালীন খরচ বহন করে পুরপ্রশাসন। মেরামতি কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের ভার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির। কেব্ল পাল্টাতে যা খরচ তা বহন করার ক্ষমতা পুরসভার নেই। তা ছাড়া পুরপ্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, সল্টলেকে ত্রিফলা বসানোয় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। এতেও বিদ্যুতের ঘাটতি হচ্ছে।


প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ সিপিএমের নন্দগোপাল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর পরিবর্তন না করে বেশি বিদ্যুৎবাহী আলো লাগানোর দায় প্রশাসনেরই। তা ছাড়া সারা সল্টলেক জুড়ে ত্রিফলা আলো লাগানো হয়েছে। এতেও বেশি বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। আমাদের সময়ে এমন সমস্যা হয়নি।’’ সমস্যার কথা স্বীকার করে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন পারিষদ অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেশি আলোর জন্য সোডিয়াম ভেপার আলোর ব্যবহার করা হল। এর জন্য অধিক বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু কেব্ল পরিবর্তন করা হয়নি। আগের কেব্ল বেশি বিদ্যুৎ বহন করতে পারছে না। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির সঙ্গে কথা হয়েছে। যৌথ ভাবে কাজ করে পুজোর আগেই সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে বলে আশা করছি।’’
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির এক আধিকারিক বলেন, “বিদ্যুৎ পরিকাঠামোয় সমস্যা নেই। রাস্তায় বাল্ব বা টিউবলাইট বদলে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী সোডিয়াম ভেপার ল্যাম্প লাগানোর বিষয়ে পুরসভা আমাদের আগে থেকে জানায়নি। ফলে কয়েকটি জায়গায় বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। তবে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।”

ছবি: শৌভিক দে




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.