ভোগান্তি বালুরঘাটে
রাতবিরেতে ওষুধ অমিল
ডায়াবেটিস রোগী মেয়ের ওষুধ কিনতে রাত ১১টায় শহরের কংগ্রেস পাড়ার বাড়ি থেকে বার হন শুভ্র ঘোষ। শহর ঘুরে দেখেন সমস্ত ওষুধের দোকানে তালা। বিপাকে পড়েন শুভ্রবাবু। রাত ১২টা নাগাদ বালুরঘাট থানায় যান। ৪ কিমি দূরে রঘুনাথপুর হাসপাতালের সামনে ওষুধের দোকান থেকে মেয়ের ‘ইনসুলিন’ পাওয়ার আশায় ডিউটি অফিসার প্রবীর রাহার সাহায্য চান।
ভ্যান দূরে থাকায় প্রবীরবাবু তাঁর বাইকের চাবি শুভ্রবাবুকে দেন। তবে রঘুনাথপুরে দোকানটি খোলা থাকলেও ওষুধ পাননি তিনি। মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সদর শহর বালুরঘাটের ঘটনা। রাত প্রায় তিনটে পর্যন্ত ঘুরে ইনসুলিন না পেয়ে দুশ্চিন্তায় রাত কাটান প্রাথমিক শিক্ষক শুভ্রবাবু।
তাঁর কথায়, “শহরের পরিচিত একাধিক ওষুধের দোকানে মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। তাঁদের পাইনি। হাসপাতালের নায্য মূল্যের দোকানেও ওই ওষুধ মেলেনি।” তিনি জানান, ৯ বছরের মেয়ে সুমেতা জুভেনিয়াল ডায়াবেটিসের রোগী। রাতে শোওয়ার সময় ওই ইনসুলিনের ১২ ইউনিট চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া ওই মেয়েকে দিতে হয়। পাশাপাশি দিনে তিন বার আরেকটি ওষুধ তিন ভাগ করে ইনজেকশন দিতে হয়।
মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে মজুত থাকা ইনসুলিনের ইনজেকশন ভেঙে গিয়ে বিপত্তি বাড়ে। বুধবার সকালে ওষুধ এনে অবস্থা সামলাই। রাতে শহরবাসীর ওষুধ ছাড়া কী অবস্থা হয় তা দেখলাম। প্রশাসনের বিষয়টি ভাবা দরকার। শুভ্রবাবুর ওই ঘটনা নতুন নয়, বালুরঘাটে রাতে ওষুধ মেলে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। কেননা, শহরে ওষুধের দোকান খোলা থাকে না। বছরের পর বছর বাসিন্দারা দুর্ভোগের মধ্যে পড়লেও পুর কর্তৃপক্ষ থেকে প্রশাসন কিংবা স্বাস্থ্য দফতর কারও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। অথচ বালুরঘাট শহরের মধ্যে ৭৮টি ওষুধের দোকান রয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্হ্য আধিকারিক কাজল মন্ডল বলেন, “হাসপাতালের নায্য মূল্যের দোকানে ১৪২ রকমের ওষুধ থাকার কথা। তারমধ্যে এধরণের জীবনদায়ী ওষুধ আছে কি না, তা সুপারকে খোঁজ নিতে বলব। রাতের বেলা ওষুধের দোকান খোলার বিষয়টি ড্রাগ কন্ট্রোল দফতর দেখে।” আর বালুরঘাটের ড্রাগ কন্ট্রোল দফতরের এক ইন্সপেক্টার বলেন, “রাতে ওষুধের দোকান খোলা রাখতে কাউকে আমরা বাধ্য করতে পারি না। আমাদের আইনও নেই।”
বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের বালুরঘাট ইউনিটের সম্পাদক দেবব্রত কুন্ডু বলেন, “বিষয়টি নিয়ে এর আগে আমরা ভেবে দেখিনি। সংগঠনের আগামী সভায় বিষয়টি আলোচনা করব।” শহরের প্রবীণ নাগরিক দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল বাগচী, পীযূষ দেব বলেন, “বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের জীবনের প্রশ্ন এতে জড়িয়ে রয়েছে। প্রশাসনের এখনই তা দেখা দরকার। নইলে যে কোনওদিন কোনও ঘটনা ঘটে যাবে।”
এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেনস, “ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটি দেখা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.