হাতের কাছে সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া হয়েছে! পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাই এখন আফশোস দেখা দিচ্ছে গনি পরিবারে! কংগ্রেসেও।
ইংরেজবাজার হাতছাড়া হওয়ার পরে পঞ্চায়েত ভোটে যে তাঁদের সামনে ‘কঠিন লড়াই’, বুঝতে পারছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। ঠিক তার আগে সনিয়া গাঁধী এসে দলের প্রচারের মূল মন্ত্র বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁকে বা প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে পেয়েও রাজনৈতিক ভাবে তার সদ্ব্যবহার করতে পারলেন না জেলা নেতৃত্বকে। সে কথা মেনে নিয়ে আফশোসের সুরেই জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী বললেন, “সনিয়াজি ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মালদহে একটা জনসভা করা উচিত ছিল। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। এখন আফশোস হচ্ছে!” তিনি আরও বলেন, “সনিয়াজি’ও মালদহে জনসভা করতে আগ্রহী ছিলেন। উনি বিষয়টি জানতেও চেয়েছিলেন। এখন বুঝতে পারছি, জনসভা করলে পঞ্চায়েত নিবার্চনের আগে মালদহে কংগ্রেসের ভিত আরও বেশি শক্তিশালী হত।” |
শনিবার সনিয়া-মনমোহনকে নিয়ে মালদহ শহরের অদূরে নারায়ণপুরে সরকারি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিশেষ ভিড় হয়নি। ফলে তৃণমূল ডালুবাবুদের কটাক্ষ করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস প্রদেশ নেতৃত্বও এখন বলছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলে কংগ্রেস সংগঠিত ভাবে আসরে নামতে পারত এবং পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংগঠনকে চাঙ্গাও করতে পারত।
কেন জনসভা হল না? ডালুবাবুর বক্তব্য, “ইংরেজবাজার উপনিবার্চনে হেরে যাওয়ায় খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। তাই উৎসাহ পাইনি। তা ছাড়া, দু’বার কথা দিয়েও মালদহে আসতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। এ বারেও সেই দোটানা ছিল। জেলা নেতাদের একাংশের পক্ষ থেকেও সায় পাইনি। তাই সাহস হয়নি জনসভা করার।” প্রদেশ নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, সনিয়া-মনমোহনের ওই সফরে রাজ্য কংগ্রেসকে সে ভাবে সামিল করা হয়নি। গোটা বিষয়টা মূলত ডালুবাবু এবং তাঁর বিধায়ক তথা প্রাক্তন অধ্যাপক দাদা আবু নাসের (লেবু) খান চৌধুরীর তত্ত্বাবধানেই ছিল। মুর্শিদাবাদের অধীর চৌধুরী-ঘনিষ্ঠ এক নেতাও আক্ষেপ করেন, “দলকে সে ভাবে পাশে ডেকে নেওয়া হলে পাশের জেলা থেকে আমরাও সহযোগিতা করতে পারতাম!”
আফশোস এ দিন কিছুটা ভুলিয়েছেন গনি অনুগামীরা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েকশো কংগ্রেস কর্মী আসেন কোতুয়ালিতে। কোথায় কোথায় সনিয়া-মনমোহন গিয়েছিলেন, দেখতে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা। তাঁদের উৎসাহ দেখে ডালুবাবুর মন্তব্য, “ইংরেজবাজারে শোচনীয় পরাজয়ে কর্মীরা ভেঙে পড়েন। সনিয়াজি ও মনমোহন সিংহ মালদহে আসায় কর্মী-সমর্থকেরা উজ্জীবিত হয়েছেন।” তা ধরে রেখে প্রচার শুরু করতে মৌসম নূরের নেতৃত্বে ১৬ জনের পঞ্চায়েত নজরদারি কমিটি গড়া হয়েছে। সোমবার থেকেই তাঁরা ব্লকে ব্লকে গিয়ে প্রার্থী বাছাই শুরু করবেন। |