‘ওরা বলল তোরা চোর’
পঞ্চায়েতে তৃণমূলের হাতে ৭ ঘণ্টা বন্দি প্রাক্তন মন্ত্রী
‘কৃষকসভা’র সভা করতে দল পরিচালিত পঞ্চায়েতে গিয়ে পঞ্চায়েত ভবনেই তৃণমূলের হাতে দীর্ঘক্ষণ তালাবন্দি হয়ে থাকলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অচিন্ত্যকৃষ্ণ রায়। পরে সিপিএম প্রধানেরই করা অভিযোগের ভিত্তিতে অচিন্ত্যবাবু-সহ ৫২ জন দলীয় নেতা-কর্মীকে আটকও করে পুলিশ। রবিবার বাঁকুড়ার ইঁদপুর পঞ্চায়েতের ঘটনা।
তৃণমূলের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অন্যত্র সরানোর মতলবেই পঞ্চায়েত ভবনে জড়ো হয়েছিল সিপিএম। প্রশাসনের কাছে সিপিএম প্রধান জানিয়েছেন, এই সভার জন্য তাঁর অনুমতি নেওয়া হয়নি। প্রাক্তন বনমন্ত্রী অচিন্ত্যবাবু অবশ্য দাবি করেন, “প্রধানের অনুমতিতেই সভা হচ্ছিল। তৃণমূলের চাপে মিথ্যা অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছেন ওই মহিলা প্রধান।”
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “প্রাক্তন মন্ত্রী-সহ অন্য সিপিএম নেতা-কর্মীদের প্রথমে উদ্ধার করা হয়। পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগের ভিত্তিতে আপাতত ওঁদের আটক করা হয়েছে।”
মুক্তির পর অচিন্ত্যকৃষ্ণ রায়। —নিজস্ব চিত্র
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ অচিন্ত্যবাবু, কৃষকসভার বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি, সিপিএমের ইঁদপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক সুনীল গোস্বামী-সহ দলের নেতা-কর্মীরা পঞ্চায়েত ভবনে যান। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক পঞ্চায়েত ভবনের সদর দরজায় তালা দেন এবং সিপিএমের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
অচিন্ত্যবাবুর কথায়, “তৃণমূলের লোকেদের বললাম, ‘তালা দিলে কেন?’ ওরা বলল, ‘তোরা চোর।’ বললাম, ‘সকাল-সকাল ৫২ জন মিলে চুরি করব?’ জবাব এল, ‘চুপ থাক।’ আর কথা বাড়াইনি।”
ঘটনাস্থলে গিয়ে এ দিন দেখা যায়, পঞ্চায়েতের মূল দরজায় তালা ঝুলছে। দরজার সামনে পুলিশ। মূল দরজা থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামলী মণ্ডল। চারপাশ ঘিরে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে অন্তত একশো কর্মী-সমর্থক।
তৃণমূলের ইঁদপুর ব্লকের সভানেত্রী রিনা চৌধুরীর অভিযোগ, “দীর্ঘ দিন ধরে এই পঞ্চায়েতের টাকা নয়ছয় করছে সিপিএম। রবিবার এমনিতেই পঞ্চায়েত বন্ধ। সেই সুযোগে কোনও অনুমতি ছাড়াই সিপিএমের লোকেরা পঞ্চায়েতে এসে তথ্য লোপাটের চেষ্টা করছিল। আমরা হাতেনাতে ওদের ধরে ফেলেছি।” প্রথমে পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, তাঁর অনুমতি নিয়েই ওই সভা হচ্ছিল। পরে অবশ্য তিনিই বিডিও-র কাছে করা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, সভার জন্য তাঁর অনুমতি নেওয়া হয়নি। বক্তব্য বদলালেন কেন? জবাব দেননি শ্যামলীদেবী। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ কমব্যাট ফোর্স নামিয়ে অচিন্ত্যবাবুদের উদ্ধার করা হয়।
ইঁদপুর পঞ্চায়েতের ১৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিই সিপিএমের দখলে। দু’টি তৃণমূলের। ইঁদপুর থানায় গিয়ে তালড্যাংরার বিধায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোরঞ্জন পাত্র বলেন, “সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা রাজনৈতিক সভা করার জন্য পঞ্চায়েতের হলঘর ব্যবহার করা যেতেই পারে। এ দিন তৃণমূল চক্রান্ত করেই এই ঘটনা ঘটাল।” তবে তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা কো-চেয়ারম্যান অরূপ চক্রবর্তীর বক্তব্য, “তথ্য লোপাট করার মতলবেই পঞ্চায়েতে ঢুকেছিল সিপিএমের লোকজন। হাতেনাতে ধরা পড়ে ওরা নানা রকম কথা বলছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.