ধান কেনার চেক ‘বাউন্স’ বড়ঞায়
ন্তেশ্বরের পরে বড়ঞা। ধান বিক্রির টাকা না পেয়ে আবার আতান্তরে চাষিরা।
খোদ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আদি বাড়ি বর্ধমানের মন্তেশ্বরের কাছেই জামনার ১৬৬ জন চাষি প্রায় বছর খানেক ধরে চালকলের কাছ থেকে ধান বিক্রির টাকা পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত এ মাসের গোড়ায় তাঁদের কলকাতায় ডেকে এনে টাউন হলে সেই টাকা হাতে তুলে দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ৪৫ লক্ষ টাকা আবার তাঁদের দেওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে। কিন্তু তার পরেও যে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি, তা বোঝা যাচ্ছে কান্দির বড়ঞা ২ ব্লকের জনা পঁচিশ চাষির অভিজ্ঞতা থেকে। মাস খানেক আগে তাঁরা সহায়ক মূল্যেই ধান বেচেছিলেন একটি চালকলের কাছে। তাঁদের সে বাবদ যে চেক দেওয়া হয়েছিল তা ব্যাঙ্কে ‘বাউন্স’ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই চাষিরা। খাদ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ওই চাষিদের দ্রুত টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।
বড়ঞা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের হুমায়ুন কবীর জানান, ১৯ ফেব্রুয়ারি এই এলাকার পছিপাড়াতে ধান কেনার শিবির করেছিল সালারের একটি চালকল। সেই সময়ে এলাকার মোট ৪৪ জন চাষির কাছ থেকে মাথা পিছু গড়পড়তা ৬ কুইন্টাল করে ধান কেনেন ওই চালকল কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, “সেই দিনই চাষিদের হাতে ব্যাঙ্কের চেক তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু তার কয়েক দিন পরেই ওই চাষিদের কয়েকজন আমার কাছে এসে অভিযোগ করেন, সেই চেক বাউন্স করেছে।” তাঁর কথায়, “ঠিক কত জন চাষির চেক বাউন্স করেছে, তা অবশ্য জানি না। পঁচিশ জন অভিযোগ করেছেন, তাই তাঁদের সঙ্গে কী ঘটেছে, তা বুঝতে পেরেছি। এই চাষিদের বাউন্স করা চেকের মোট অর্থমূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা।”
ক্ষুব্ধ চাষিরা এর পরেই পঞ্চায়েত প্রধানের শরণাপন্ন হন। প্রধান চালকল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঠিক হয় ১০ মার্চ ব্লক অফিসে চাষীদের নতুন চেক দেওয়া হবে। কিন্তু ওই দিন বিডিও অফিসে চালকল মালিকের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ। চালকল কর্তৃপক্ষ অঞ্চল অফিসে চলতি মাসের ১৫ তারিখে নতুন চেক দেবেন বলেন। কিন্তু এ দিনও চাষীরা হাজির হলেও পাত্তা পাওয়া যায়নি মালিকপক্ষের। এই হয়রানিতে সমস্যায় পড়েছেন কৃষকেরা। টাকা না পেয়ে বরো চাষের এই মরসুমে সার, জল কিনতে নাজেহাল অবস্থা চাষীদের। বাধ্য হয়ে কম দামে ফড়েদের আলু বিক্রি করে কোনও ক্রমে
অবস্থা সামাল দিতে হচ্ছে। এলাকার চাষি নবকুমার ঘোষ, স্বপন ঘোষেরা বলেন, “ব্যাঙ্কে চেক ভাঙাতে যাই। কিন্তু বলা হয় চেক বাউন্স করেছে। ধান বিক্রির এক মাস পরেও টাকা পেলাম না।”
নবকুমারবাবু বলেন, “চেক বাউন্স করেছে বলার পরে ওই চালকল কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছিল ১৫ মার্চ, শুক্রবার তাঁদের কাছে গিয়ে টাকা নিয়ে আসতে। কিন্তু গিয়ে বসে থাকাই সার হয়েছে। টাকা পাইনি।” সালারের যে চালকল মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের তির, তার ম্যানেজার তন্ময় চৌধুরী অবশ্য বলেন, “১০ মার্চ ব্লক অফিসে আমাদের লোক গেলেও চাষীরা যাননি। আর ১৫ তারিখে অঞ্চল অফিসে যাওয়া হয়নি। তবে সোমবার নতুন চেক দেওয়া হবে।” বড়ঞার বিডিও বাদশা গোস্বামী বলেন, “বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। চাষীরা তাঁদের যোগাযোগ করলে সমস্যা মিটে যাবে।” খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও এই দিন কৃষ্ণনগরে বলেছেন, “ওই চালকল কর্তৃপক্ষকে সোমবারই সব চাষির বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই চালকলের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মুর্শিদাবাদ জেলার খাদ্য নিয়ামক সমীরকুমার দে’র বক্তব্য, “জেলায় অনেকগুলিই ধান কেনার শিবির হয়েছে। এই প্রথম এমন অভিযোগ উঠল। সোমবার সকালেই তাদের টাকা মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.