বাড়ছে আঞ্চলিক জোটের সম্ভাবনা
অন্য রাজ্যেরও পাশে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী
পিছিয়ে থাকা রাজ্য হিসেবে শুধু বিহার নয়, পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যগুলিরও কেন্দ্রের বিশেষ সাহায্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলে আজ দিল্লির অধিকার র্যালিতে সরব হলেন নীতীশ কুমার। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর ওই পদক্ষেপ উস্কে দিল আঞ্চলিক জোটের সম্ভাবনাকেও।
রাজ্যের স্বার্থে ইউপিএ-তে থাকাকালীনই কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াতে আঞ্চলিক দলগুলির জোটের পক্ষে তৎপর ছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকার থেকে বেরিয়ে এসেও সেই লক্ষ্যে সক্রিয় রয়েছেন তিনি। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করেন, লোকসভা ভোটে সরকার গড়ার চাবিকাঠি অনেকটাই থাকবে ধর্মনিরপেক্ষ আঞ্চলিক দলগুলির হাতে। আজ আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে সংহতি আনতে দিল্লির বুকে দাঁড়িয়ে সক্রিয় হলেন নীতীশও। যদিও জেডি(ইউ) নেতৃত্ব সলতে পাকানোর কাজ শুরু করেছিলেন বেশ কিছু দিন আগেই। মাস কয়েক আগে রাজ্যের আর্থিক সাহায্যের প্রশ্নে মমতা দিল্লিতে যে সমাবেশ করেছিলেন তাতে যোগ দিয়েছিলেন জেডি(ইউ) সভাপতি শরদ যাদব। তিনিও ওই সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। আর আজ নীতীশ নিজের বক্তব্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন, “শুধু বিহার নয়। পিছিয়ে পড়া রাজ্যের চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্র নীতি পরিবর্তন করলে অন্য রাজ্যগুলিও উপকৃত হবে।” বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর মতে, অন্য রাজ্যের সাহায্য প্রাপ্তির সঙ্গে বিহারের কোনও বিরোধ নেই। রাজ্যগুলি সাহায্য পেলে দেশেরই শ্রীবৃদ্ধি হবে।
তৃণমূলের ধাঁচেই জেডি(ইউ) শিবিরও মনে করে, তারা ছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীন পট্টনায়ক, মুলায়ম সিংহ যাদব ও জয়ললিতা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন। তাঁদের চার দলের সম্মিলিত আসন সংখ্যা যা হবে তাতে তারা দিল্লিতে সরকার গড়ার ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে চলেছেন। তাই এই দলগুলির পরস্পরের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে আরও নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানো উচিত। তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে, মমতা ওই দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত ভিত্তিতে যোগাযোগ রেখে চলছেন। আর আজ নীতীশ পূর্বের রাজ্যগুলির আর্থিক সাহায্যের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে আঞ্চলিক জোট গড়ার রাস্তাও মসৃণ করার প্রচেষ্টা শুরু করলেন।
নীতীশ এনডিএর শরিক হলেও যে ভাবে নিজের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজায় রেখে চলতে পেরেছেন তাতে তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের জোট গড়ায় কোনও সমস্যাও নেই বলেই জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
ইউপিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর থেকেই বিকল্প ভাবনা শুরু করেছিলেন মমতা। যদিও তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের ক্রমবর্ধমান বিবাদের ফায়দা নিতে তৎপর রয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বও। দলীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ সম্প্রতি কলকাতা গিয়ে মমতার আর্থিক প্যাকেজের দাবিকে সমর্থন জানান। শুধু তাই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও যে ভাবে বামেরা কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে, সেই অবস্থায় সংসদে বিজেপিও তৃণমূলের সঙ্গে আরও সমন্বয় বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে। সম্প্রতি কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে সরকারের যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের প্রতিবাদে তৃণমূলের সঙ্গেই সভাকক্ষ ত্যাগ করেছিল বিজেপি।
কালই দিল্লিতে একটি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সেই দায়িত্ব গ্রহণ করতে প্রস্তুত বলে জানান। মোদীর আগামী এপ্রিল মাসে কলকাতা যাওয়ার কথা। বিজেপি সূত্রের খবর, কলকাতায় শিল্প ও বণিক মহলের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মোদী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও একটি বৈঠক করতে চাইছেন।
তবে মমতার পক্ষে এখন সরাসরি বিজেপির হাত ধরা কঠিন বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে তাঁর অন্যতম ভরসা মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক।
সেই কারণেই মোদীর সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। বরং তৃণমূল আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট গড়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছন্দ। আবার নরেন্দ্র মোদী বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হলে এনডিএ ছাড়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন নীতীশ। আজ নীতীশের পদক্ষেপ আঞ্চলিক জোটের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দিল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.