ফুল চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত ফুল এ বার থেকে হিমঘরে সংরক্ষণ করতে পারবেন। হাওড়ার বাগনানের খালোড়ে বৃহস্পতিবার একটি বহুমুখী হিমঘরের উদ্বোধন করেন রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায়। রাজ্য কৃষি বিপণন পর্ষদ এবং হাওড়া জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির যৌথ উদ্যোগে হিমঘরটি তৈরি হয়েছে। খরচ হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা।
১৯৮৪ সালে কৃষি বিপণন দফতর ২১ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সেই জমিতেই তৈরি হয়েছে হিমঘরটি। ফুল বাজারটিও তৈরি হচ্ছে এই জমির একটি অংশে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৃণমূলের দুই বিধায়ক অরুণাভ সেন এবং নির্মল মাজি, জেলাশাসক শান্তনু বসু প্রমুখ।
জেলাশাসক বলেন, “হিমঘরটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। ১০ দিনের মধ্যে ওই কাজ শেষ হয়ে যাবে। তারপরেই চাষিরা এখানে তাঁদের পণ্য রাখতে পারবেন।” হিমঘরটিতে ৫০ মেট্রিক টন পণ্য রাখা যাবে। মূলত ফুল রাখার ব্যবস্থা হলেও পান-সহ অন্যান্য সব্জিও এখানে রাখা যাবে বলে কৃষি বিপণন দফতরের কর্তারা জানান। |
হিমঘরের উদ্বোধনে কৃষি বিপণন মন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র। |
বাগনান ২ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ফুল চাষ হয়। বিশেষ করে শরৎ এবং ওড়ফুলি এই দুই পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক হাজার পরিবার ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত। ফুপলর সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় চাষিদের জগন্নাথঘাট এবং কোলাঘাটে ফুল বিক্রি করতে হয়। বাগনানে একটি ফুল সংরক্ষণকেন্দ্র এবং বাজার তৈরির জন্য দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই দাবির ভিত্তিতেই কৃষি বিপণন দফতর এবং হাওড়া জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি ২০১০ সালে হিমঘর তৈরির কাজ শুরু করে। ওড়ফুলি পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীকান্ত সরকার বলেন, “হিমঘরটি তৈরি হওয়ায় ফুল চাষিদের অনেক উপকার হবে। তাঁরা কী ভাবে এখানে ফুল সংরক্ষণ করতে পারবেন এবং এখানে ফুল রাখলে তাঁরা কী ভাবে উপকৃত হবেন, সেই সব খুঁটিনাটি জানিয়ে আমরা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এলাকায় ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছি।”
হিমঘরের পাশেই তৈরি হচ্ছে আধুনিক ফুল বাজারও। ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে বাজারটি তৈরি করছে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতর। তাদের সঙ্গে রয়েছে হর্টিকালচার বিভাগ। সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “ফুলের বাজারটি চালু না-হলে শুধু হিমঘর দিয়ে চাষিদের সব সমস্যা মিটবে না।” এ বিষয়ে কৃষিবিপণন মন্ত্রী বলেন, “ফুলের বাজারটিও খুব শীঘ্র চালু হয়ে যাবে।” |