আহতদের চিকিৎসা নিয়েও রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ
ভাঙড়ে গুলিবিদ্ধদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপরে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা প্রহৃত হওয়ার পরেও একই অভিযোগ সরব হয়েছিল সিপিএম।
মঙ্গলবার ভাঙড়ে তৃণমূলের আক্রমণে ছ’জন সিপিএম কর্মী জখম হন বলে অভিযোগ। তাঁদের তিন জনের গুলি লেগেছে। পুলিশই এ দিন দুপুরের দিকে সকলকে গাড়িতে করে নিয়ে যায় ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। প্রাথমিক ভাবে জরুরি বিভাগে সকলকে পরীক্ষা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এক জন বাদে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু পরে তিন জনের সম্পর্কে ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসকেরা লিখিত রিপোর্টে জানান, প্রত্যেককেই ভর্তি রেখে চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য বদলকে কটাক্ষ করে সিপিএমের প্রশ্ন, শাসক দলের ‘চাপ’ না থাকলে কেন এমন আচরণ করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগ মানতে চাননি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
রেজ্জাক মোল্লার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপরে শাসকদলের তরফে রাজনৈতিক চাপ দেওয়ার অভিযোগে এ দিনও সরব ছিল সিপিএম। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “সরকার যে কত জঘন্য, অমানবিক আচরণ করতে পারে রেজ্জাক মোল্লার ঘটনাই তার প্রমাণ। ডাক্তারের দু’পাশ থেকে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা হচ্ছে, তাঁকে কী বলতে হবে...!” ভাঙড়ে এ দিনের গুলিবিদ্ধদের চিকিৎসা নিয়েও একই রকম অভিযোগ তুলেছেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “আমরা জানতে পেরেছি, শাসক দলের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপরে প্রাথমিক ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। তৃণমূল শুরু থেকেই ঘটনাটি লঘু করে দেখাতে চাইছে।”

রেজ্জাক মোল্লার চিকিৎসা-বিভ্রাট

আরাবুলের হাসপাতাল-পর্ব
সোমবার কেমন ছিলেন
• ঠোঁট ফেটে তিনটে সেলাই • দাঁত ভাঙা
• কথা বলায় সমস্যা
• শিরদাঁড়া• পাঁজরে ব্যথা
চিকিৎসক সঞ্জয় দুবে কী বলেছিলেন
• ফিট ফর ডিসচার্জ •
মঙ্গলবার কেমন আছেন?
• এমআরআই পরীক্ষা • কোমরে শিরদাঁড়ার ১ ও ৩
নম্বর হাড়ে চিড় • জিএম সুজয়রঞ্জন দেব বলছেন,
তিন সপ্তাহ থাকতে হবে। অভিযোগ, চাপের
মুখে ছাড়তে চাইছিল হাসপাতাল
সুপার জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা
• সোমবার এক্স-রে তে চিড় মেলেনি
• সোমবার তো ওঁকে
ছাড়া হয়নি। • বলা হয়, বাড়ি গিয়েও
বিশ্রাম নিতে পারেন।
চিকিৎসক সঞ্জয় দুবের ব্যাখ্যা
• অর্থোপেডিক সার্জনকে রেফার করি
• উনি বলেন, সব ঠিক আছে।
এমআরআই না করে যদি ফিট বলেন, আমার কী দোষ?অর্থোপেডিক সার্জন মন্তব্য করেননি

কেন ভর্তি
• কিল-চড়-ঘুষি মেরেছে সিপিএম
• কথা আটকে যাচ্ছে
• জ্ঞান হারিয়েছেন
• ছেলের দাবি, শ্বাসকষ্ট
কখন, কোথায় ভর্তি
• মঙ্গলবার দুপুরে
• চিনার পার্কের নার্সিংহোমে
• দাবি, ভাঙড় থেকে দূরত্ব ২০-২৫ মিনিটের
কখন, কেমন আছেন
বিকেল তিনটেয় নার্সিংহোমের এমডি সুভাষ
ঘোষের বক্তব্য: ‘অ্যাংজাইটি’ থেকে রক্তচাপ
একটু বেড়েছে। সিরিয়াস নয়।
শরীরের বাইরে আঘাতের চিহ্ন, কাটা, ফোলা নেই।
একটু পরেই ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
কখন, কেমন আছেন
বিকেল সওয়া চারটেয় নার্সিংহোমের
এমডি সুভাষ ঘোষের বক্তব্য:
ওঁর অক্সিজেন চলছে। এক্স-রে করতে
হবে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।
ছাড়তে সময় লাগবে

সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ইএম বাইপাসের ধারে এই হাসপাতালটির জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে নামডাক আছে। সে কারণেই ভাঙড় থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের এই হাসপাতাল থেকে আহতদের প্রাথমিক ভাবে অন্যত্র নিয়ে যেতে চাননি তারা। হারুণ ঘোষ মল্লিক ও হাসেম আলি মোল্লা নামে দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সুজিত দাস নামে গুলিবিদ্ধ এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর চিকিৎসা চলছে আইসিসিইউ-তে। পেটে ও পায়ে গুলি লেগেছে তাঁর।
রহিম মোল্লা, কুতুব আলি মিস্ত্রি ও মঈদুল মোল্লাকে পরে সিপিএম নেতারা বাইপাসের উপরেই অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হন। তিন জনের চিকিৎসা চলছে সেখানেই। প্রথমে তাঁদের যেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের লিখিত রিপোর্ট অবশ্য বলছে, জখম ওই তিন জনকেই কোনও হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ বা অন্যত্র ভর্তি রেখে চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।
তা হলে কেন প্রথম অবস্থায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বেড না থাকায় সবাইকে ভর্তি নেওয়া যাচ্ছে না। যদিও সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, এ দিন বিকেলের পর থেকে নানা কারণে ওই হাসপাতাল আরও কয়েকজন রোগীকে ভর্তি নিয়েছে।
তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ভাইস চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডল অবশ্য বলেন, “সিপিএমের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আহতদের চিকিৎসায় নাক গলানোর রাজনীতি আমরা করি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.