নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
সর্বভারতীয় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতার পুল ডি-এর ম্যাচে বৃহস্পতিবার মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়কে ১-০ গোলে হারাল কলকাতা। আজ, শুক্রবার পশ্চিমাঞ্চলের শিবাজি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে বর্ধমান। আগের ম্যাচের মতো বড় ব্যবধানে জয় পাওয়া নিয়ে আত্মবিশ্বাসী আগের ম্যাচের নায়ক অনিল কিস্কু।
এ দিন খেলা শুরুর ১০ মিনিটের মাথায় অমিত চক্রবর্তীর ফ্রি-কিক থেকে ব্যাক হেডে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন কলকাতার স্বপন ওরফে হেনরি ওঁরাও। তবে এর পরে প্রচুর সুযোগ পেলেও আর গোল করতে পারেনি কলকাতা। দ্বিতীয়ার্ধে মুম্বই চেষ্টা করেও সমতা ফেরাতে পারেনি। কলকাতার কোচ গৌরাঙ্গ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, মাঝমাঠের দখল নিয়ে দাপুটে ফুটবল খেলা। এই ম্যাচ ১-৩-৩-১ ছকে খেললেও পরের দিকে ছক পাল্টাব।” মুম্বইয়ের কোচ জেমিল খান ও অধিনায়ক সাজ্জাদ আলমের দাবি, “আমরা মোটেই খারাপ খেলিনি। শুধু গোল করতে না পারায় জেতা ম্যাচ মাঠে ফেলে রেখে আসতে হল।” তবে কলকাতার গতিময় ফুটবল যে তাদের বেকায়দায় ফেলেছে, স্বীকার করেছেন তাঁরা। এ দিন মুম্বইয়ের এক খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখায় দ্বিতীয়ার্ধে তাদের ১০ জনে খেলতে হয়। বৃহস্পতিবার কলকাতার খেলা দেখতে স্পন্দন মাঠে ছিলেন বর্ধমান দলের টিডি রথীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। |
মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়কে বৃহস্পতিবার হারিয়ে দিল কলকাতা। |
বৃহস্পতিবার এই প্রতিযোগিতার মোট ৬টি খেলা হয়েছে। পুল এ-তে পঞ্জাবি ও শিবাজি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলা শেষ হয় ২-২ গোলে। পুলি বি-তে লক্ষ্মীবাই ও ডিব্রুগড়ের খেলাও গোলশূন্য শেষ হয়। একই ফল হয় গুরুনানক দেব ও কেরলের ম্যাচেরও। পুল সি-তে আন্নামালাই ৬-০ গোলে হারায় লাভলি বিশ্ববিদ্যালয়কে। পঞ্জাব ৩-২ গোলে হারিয়েছে মাদ্রাজকে।
আজ, শুক্রবার মোহনবাগান মাঠে খেলতে নামবে বর্ধমান। এ দিন অনিল বলেন, “প্রতি ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও গোল করতে মাঠে নামব। দলকে প্রতিযোগিতার সেরা করতে পারলেই একটা স্বপ্নপূরণ হবে।” লেফট উইংয়ের খেলোয়াড় অনিলের মতে, “খেলার সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল গোল। গোল না করতে পারলে কেউ মনে
|
ভরসা
অনিল কিস্কু। |
রাখবে না।” ঝাড়খণ্ডের দুমকার বাঁশবরওয়া গ্রামের বাসিন্দা অনিলের বাবা লক্ষ্মণ ও মা ঊর্মিলা পেশায় খেতমজুর। বোন এমিলি বোকারো পলিটিকনিকের ছাত্রী। অনিল নিজে হুগলির চাঁপাডাঙা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি জানান, দেওঘরের একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেনিতে পড়ার সময়ে এক শিক্ষক তাঁকে ফুটবলের ব্যাপারে উৎসাহ দেন। তাতেই অনিলের ফুটবলার হয়ে ওঠা।
পরে সাইয়ের কলকাতা কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছে অনিল। তার ফুটবলার হওয়ার পিছনে বড় অবদান সাইয়ের কোচ জওহরলাল বিশ্বাসের, দাবি অনিলের। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলে এ বার ইতিমধ্যে ১০টি গোল করে ফেলেছেন রোনাল্ডো ও ভাইচুংয়ের ভক্ত অনিল। কলকাতার প্রথম ডিভিশন ফুটবল লিগে ৬টি গোল করার সুবাদে সামান্য পরিচিতিও হয়েছে অনিলের। এখন তাঁর স্বপ্ন, মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলা। তাঁর খেলা দেখে প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসুর মন্তব্য, “ঠিক মতো প্রশিক্ষণ পেলে অনিল এক দিন দেশের হয়েও খেলবে।”
|