গাজনের মেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি ডায়মন্ড হারবারের হরিণডাঙার পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা মানসী পুরকাইত (২৩)। রবিবার সকালে গলায় মাফলারের ফাঁস লাগানো অবস্থায় বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে, রামরামপুর এলাকার একটি গ্যাস সিলিন্ডারের গুদামের কাছ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করল পুলিশ।
তদন্তকারীদের অনুমান, ত্রিকোণ প্রেমের জেরে ওই যুবতীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। মানসীর মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। মানিব্যাগে টাকা ও কয়েকটি ছেলের ছবি ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। রবিবার দুপুরে ডায়মন্ড হারাবার হাসপাতালে মৃতদেহের ময়না-তদন্ত হয়। গলায় ফাঁসের দাগ ছাড়া শরীরে আর কোনও আঘাত বা ধর্ষণের চিহ্ন ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মেলেনি বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, “ওই যুবতীর পরিজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভিসেরা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।”
দিন কয়েক ধরেই ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে গাজনের মেলা হচ্ছে। বাড়িতে সেখানে যাওয়ার কথা বলে শনিবার সন্ধ্যার পর পায়েল মণ্ডল নামে প্রতিবেশী এক কিশোরী ও তার মাসির সঙ্গে বেরিয়েছিলেন মানসী। রাতে না ফেরায় বাড়ির লোকজন খোঁজও করেন। সকালে মানসীর ভাই মানস এক বন্ধুর ফোনে তাঁর দিদির দেহ ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে আনার কথা জানতে পারেন। তিনিই সেখানে গিয়ে দেহটি শনাক্ত করেন বলে মানস জানিয়েছেন। মানসীর বাবা মন্টু পুরকাইত দিনমজুর। মা উজ্জ্বলাদেবী মূক-বধির। মেয়ের মৃত্যুসংবাদে দিশাহারা হয়ে পড়েন মন্টুবাবু।
শনিবার রাতের কথা বলতে গিয়ে পায়েল এ দিন বলে, “দিদি আমাদের সঙ্গে যাওয়ার সময়ে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। তারপর ডায়মন্ড হারবার রোডে এসে এক জনের মোটরবাইকে উঠে চলে যায়। আমরা মেলায় পৌঁছে দিদিকে কয়েক বার ফোন করি। কিন্তু দিদির মোবাইল বন্ধ ছিল। সাড়ে ন’টা নাগাদ দিদি ফোন করে বলে, আমি বাড়ি চলে যাচ্ছি।” কিন্তু মানসী বাড়ি ফেরেননি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পায়েল ও তার মাসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই মোটরবাইক আরোহীর ছবি আঁকানো হচ্ছে। মানসীর মোবাইলের কল-লিস্ট পরীক্ষা করা হচ্ছে। আততায়ী মানসীর পরিচিত বলেই তদন্তকারীদের ধারণা। যে জায়গা থেকে দেহটি উদ্ধার করা হয়, সেখানেই মানসীকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। |