রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও পাল্টা সম্মেলন এড়াতে পারল না ফরওয়ার্ড ব্লক! উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় রবিবার লোকাল কমিটি স্তরের শেষ সম্মেলনের দিন দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নাকের ডগায় পাল্টা সম্মেলন করল বিক্ষুব্ধ নেতা সরল দেবের গোষ্ঠী! বিক্ষুব্ধদের কর্মসূচি থেকে তাদের মিছিলের উদ্দেশে পাল্টা স্লোগানও দেওয়া হয়েছে বলে ক্ষমতাসীনদের অভিযোগ। গোটা ঘটনায় এই বাম শরিক দলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে। সরলবাবুদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত দলবিরোধী কাজের অভিযোগ জানিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন ফ ব-র জেলা সম্পাদক হরিপদ বিশ্বাস।
গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে জর্জরিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় পাল্টা সম্মেলনের হুমকির জন্যই লোকাল সম্মেলন-পর্ব এক বার স্থগিত করে দিয়েছিলেন ফ ব রাজ্য নেতৃত্ব। তার পরে সদস্যপদ নবীকরণের পুরনো সূত্র মেনেই সম্মেলন শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয় ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে। জেলার ২৬টি লোকাল কমিটির বাকিগুলির সম্মেলন মিটে গিয়েছে সরলবাবুর অনুগামীদের অংশগ্রহণ ছাড়াই। কিন্তু প্রাক্তন মন্ত্রীর নিজের এলাকা মধ্যমগ্রাম লোকাল কমিটির সম্মেলন ঘিরে এ দিন দলের কাজিয়া জমসমক্ষে প্রকট হয়ে গিয়েছে। জেলা সম্পাদক হরিপদবাবু যেখানে মধ্যমগ্রামের সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন, তার কয়েক গজের মধ্যে বহিষ্কৃত নেতা রঞ্জিত চৌধুরীকে নিয়ে পাল্টা সম্মেলন হয়েছে! উপস্থিত ছিলেন সরলবাবু।
বারাসতে ধর্ষণের প্রতিবাদে ফ ব-র পথ অবরোধের কর্মসূচি ছিল মধ্যমগ্রাম চৌমাথায়। সেখানে
মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে বিক্ষুব্ধ সম্মেলনকারীদের পাল্টা স্লোগানও শুনতে হয়েছে বলে ফ ব-র জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, “সরলবাবু নিজে দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। রঞ্জিতবাবু দল থেকে বহিষ্কৃত। বাকি অনুগামীরাও কেউ সদস্যপদ নবীকরণ করাননি। তাই ওই পাল্টা সম্মেলন হয়
কীসের ভিত্তিতে?”
ফ ব-র জেলা সম্পাদক হরিপদবাবুর প্রতিক্রিয়া, “এই ঘটনায় দলটাই হাস্যকর জায়গায় নেমে এল! রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হাফিজ আলম সৈরানির নেতৃত্বে জেলায় বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, জেলার সম্মেলন-পর্ব পুরনো সূত্র মেনেই শেষ করা হবে। সরলবাবু সেই বৈঠকে ছিলেন। তার পরেও এমন ঘটনা ঘটল!” দলের কাজে সৈরানি এ দিন ছিলেন মালদহে। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সম্মেলন ৩০ তারিখের মধ্যে সুষ্ঠু ভাবে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও পাল্টা সম্মেলন হয়েছে বলে শুনছি। কলকাতায় ফিরে এ ব্যাপারে রিপোর্ট নিয়ে মতামত জানাব।” তবে দলেরই একাংশের মতে, পাল্টা সম্মেলনের মতো ঘোরতর দল-বিরোধী কাজের পরেও সরলবাবুর বিষয়ে ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত না-নিলে জেলায় দল চালানোই মুশকিল হয়ে পড়বে। চলতি সপ্তাহেই ২-৩ জানুয়ারি রাজ্য কমিটির
বৈঠকে (রাজ্য সম্মেলনের আগে শেষ বার) সরল-পর্ব নিয়ে সরব হতে চায় দলের একাংশ। |