এক দিকে স্ত্রীকে ধর্ষণ করছে দুষ্কৃতীরা, অন্য দিকে স্বামীকে মাটিতে ফেলে চেপে রেখেছে তিন জন। তাদের এক জনের হাতে অ্যাসিডের বোতল। জোর করে মুখ ফাঁক করিয়ে ওই অ্যাসিড খাইয়ে দেওয়া হয় ৫২ বছরের ওই ব্যক্তিকে। যার ফলে তাঁর খাদ্যনালী, পাকস্থলী এবং কিডনির একাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় রবিবার সকালে ওই ব্যক্তিকে আইটিইউ-এ স্থানান্তরিত করেছেন আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
শনিবার রাতে বারাসতে ধর্ষণকাণ্ডের পর সাড়ে ১০টা নাগাদ আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁকে প্রথমে আর জি করের ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। |
চিকিৎসকরা প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করার পর বুঝতে পারেন, তাঁকে অ্যাসিড খাওয়ানো হয়েছে। ফলে তাঁর গলা এবং বুকে জ্বালার অনুভূতি ছিল।
চিকিৎসকরা জানান, অ্যাসিড খাওয়ানোর ফলে ওই ব্যক্তির খাদ্যনালী, পাকস্থলী ও কিডনি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তৈরি হয়েছে ক্ষত। তাঁকে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করানো হয় পরবর্তী চিকিৎসার জন্য। সে সময় তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল ছিল বলে জানা গিয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রবিবার সকাল থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শুরু হয় রক্তবমি। শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে দেখে তাঁকে আইটিইউ-এ স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, অ্যাসিডের প্রতিক্রিয়ায় তাঁর গলা এবং বুকে জ্বালার অনুভূতি এতটাই তীব্র ছিল যে, তিনি যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন। যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে শনিবার রাত থেকেই চিকিৎসকরা তাঁকে বারবার ঘুমের ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখছেন।
এর মধ্যেই রবিবার দুপুর দু’টোর পরে বারাসত থানা ও সিআইডি-র তদন্তকারীরা হাসপাতালে এসে ওই ব্যক্তির বয়ান নিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ওই ব্যক্তির বয়ানের ভিডিও-ও তোলা হয়েছে। ওই ব্যক্তির খাদ্যনালী ও পাকস্থলী কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা পরীক্ষার জন্য এন্ডোস্কোপি করা প্রয়োজন। কিন্তু রোগীর অবস্থা এতই খারাপ যে এখনই তা করা সম্ভব নয়। কেন না অ্যাসিডের জন্য তাঁর খাদ্যনালী ও পাকস্থলী পুড়ে গিয়ে ক্ষত তৈরি হয়েছে।
চিকিৎসকরা এই মুহূর্তে ক্ষতগুলি সারাতে “সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট ফর হিলিং” শুরু করেছেন। আগে ওষুধ দিয়ে ক্ষতগুলি কিছুটা সারিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে পরবর্তী চিকিৎসার কথা ভাবা হবে বলে জানিয়েছেন আর জি কর হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সিদ্ধার্থ নিয়োগী। |