অপেক্ষা সুদ কমার
সেনসেক্স নজির গড়তে পারে ২০১৩ সালে
গের ২০১১টি বছরের মতোই আজ বিদায় নেবে ২০১২। স্বাগত ২০১৩। সবাই চাইছেন, তেরো যেন শুভ হয়।
অর্থনীতি অনেকটা ঝিমিয়ে পড়লেও শেয়ার বাজারের দিক থেকে ২০১২ সালটি খুব একটা মন্দ ছিল না। বছরের প্রথম কাজের দিন (২ জানুয়ারি) সেনসেক্স বন্ধ হয়েছিল ১৫,৩৫৮ অঙ্কে। বছরের শেষ বেলায় গত শুক্রবার সূচকের অবস্থান ছিল ১৯,৪৪৫ পয়েন্টে। অর্থাৎ এই হিসেবে বাজার উঠেছে ৪,০৮৭ পয়েন্ট বা ২৬.৬১ শতাংশ। সেনসেক্সের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৯,৬১২ (১১ ডিসেম্বর)। বছরের শেষ দিনে এই রেকর্ড ভাঙে কি না, তাই এখন দেখার।
বিভিন্ন শিল্পের মধ্যে ভোগ্যপণ্য বা এফএমসিজি ছিল কয়েক কদম এগিয়ে। কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে তথ্যপ্রযুক্তি। বরাবর ভাল যায়নি গাড়ি শিল্পের অবস্থা। সুদের হার চড়া থাকায় সুদিন নেই গৃহনির্মাণ শিল্পেও। এই দুই শিল্প ঝিমিয়ে পড়লে চাঙ্গা থাকতে পারে না ইস্পাত, সিমেন্ট, টায়ার এবং যন্ত্রাংশ শিল্প।
গত এক বছরে বেশ কয়েক বার সুযোগ এসেছিল কম দামে শেয়ার কেনার এবং উঁচু দামে তা বিক্রি করে লাভ ঘরে তোলার। সাধারণ লগ্নিকারীদের বেশির ভাগই অবশ্য বাজার থেকে একটু দূরে সরে ছিলেন এ বছর। বছরের শেষ দিকে এসে বাজার আবার ভাল উচ্চতা পেয়েছে। খুচরোয় এফডিআই, ব্যাঙ্ক, বিমা, পেনশন এবং কোম্পানি বিল লোকসভায় উতরে যাওয়ায় বিদেশি লগ্নিকারীরা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে ভারতীয় বাজারে।
নতুন বছরের শুরু থেকেই পরিবেশ বাজারের অনুকূলে থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর্থিক সংস্কারের পথ এখন উন্মুক্ত। সুদ কমার আশা প্রবল। জানুয়ারির বৈঠকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদি সত্যিই সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় তবে সূচক যে সর্বকালীন রেকর্ড গড়ার পথে এগোবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বাজার আরও উঠলে কোন কোন শেয়ার বিক্রি করতে হবে, তার তালিকা এখন থেকেই তৈরি রাখতে হবে। একই কথা প্রযোজ্য অনেক দিন যাবৎ ধরে রাখা মিউচুয়াল ইউনিটের ক্ষেত্রেও। সুদ কমলে যে-সব শিল্প বেশি উপকৃত হবে, তার মধ্যে থাকবে ব্যাঙ্কিং, গাড়ি, গৃহনির্মাণ এবং গৃহঋণ সংস্থা।
এক এক করে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাজারে আনছে করমুক্ত বন্ড। শেয়ার বাজার তেজী হয়ে ওঠায় অল্প হলেও চাঙ্গা হয়েছে নতুন ইস্যুর বাজার। লগ্নিকারীদের ভাল লাভের সন্ধান দিয়েছে কেয়ার-এর নতুন ইস্যু। ভারতী ইনফ্রাটেল-এর বাজার দর অবশ্য হতাশ করেছে এই ইস্যুর সফল আবেদনকারীদের। কেয়ার শেয়ার নথিবদ্ধ হয়েছে ২৬.৫ শতাংশ প্রিমিয়ামে। অন্য দিকে খুচরো লগ্নিকারীদের ২১০ টাকায় ইস্যু করা ভারতী ইনফ্রাটেল শেয়ার প্রথম দিন বাজারে কেনাবেচা হয় কমবেশি ১৯০ টাকায়। এই ইস্যুর মাধ্যমে ভারতী সংগ্রহ করে ৪,১১৮ কোটি টাকা।
জানুয়ারির মাঝামাঝি শুরু হয়ে যাবে তৃতীয় ত্রৈমাসিকের কোম্পানি ফলাফল প্রকাশের পালা। পুজো, দেওয়ালি এই পর্বে পড়ায় অনেক কোম্পানি উৎসবের মরসুমে ভাল ব্যবসা করে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। গড় ফলাফল ভাল হলে তা শেয়ার বাজারকে শক্তি জোগাবে। এর পরেই এসে যাবে বাজেটের মাস। শুরু হবে নানা জল্পনা-কল্পনা। যার প্রভাবও থাকবে শেয়ার বাজারে।
বছরের শেষ দিকে থমকে গিয়েছে সোনার দাম। বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষণের খাতিরে সোনা আমদানির উপর নিয়ন্ত্রণ আনার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমদানি কমলে আবার দাম বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে। বছরের শেষে সেনসেক্সের পি ই রেশিও (দাম ও আয়ের অনুপাত) ১৭.৪০, নিফটির ১৮.৫৭। এই অনুপাত খুব কম নয়। আবার বাড়ার জায়গা নেই, তাও বলা যায় না। অর্থনীতি একটু শোধরালে এবং সুদ নিম্নমুখী হলে ছাইচাপা আগুন থেকে যে স্ফুলিঙ্গ বেরোতে শুরু করবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সেনসেক্স এবং নিফটির প্রাথমিক লক্ষ্য হবে যথাক্রমে ২০ হাজার এবং ৬ হাজার পার করা। সবাই চাইছেন, নতুন বছরের গোড়াতেই ঘটুক এই ঘটনা। প্রমাণ হোক, ১৩ অশুভ নয়। স্বাগত ২০১৩। শুভেচ্ছা সবার জন্য।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.