ছেলেকে তবু পড়াতে চান ইমানুয়েলের স্ত্রী
মাস ন’য়েক আগে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলি ও ধারালো অস্ত্রের কোপে মারা গিয়েছিলেন কান্দির মহালন্দি অঞ্চল কমিটির সভাপতি ইমানুয়েল হক। স্বামী মারা যাওয়ার পর দশ বাই বারোর এক চিলতে ঘরে তাহমিদা বেওয়া দুই ছেলে, এক মেয়ে ও প্রৌঢ়া মা-কে নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। স্বামীহত্যার বিচার মেলেনি এখনও।
চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পেশায় জনস্বাস্থ্য দফতরের অস্থায়ী কর্মী ইমানুয়েলবাবু দুষ্কৃতী হানায় প্রাণ হারান। পুলিশ-প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকের দাবি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে প্রান হারান ওই কংগ্রেসকর্মী। স্বামীর মৃত্যুর পর বেশ কয়েক মাস কেটে যাওয়ার পর কেমন আছেন তাহমিদা বেওয়ার পরিবার? মিলছে দল বা সরকার প্রতিশ্রুত সাহায্য?
তাহমিদার কথায়, স্বামী মারা গেলেও দল কিন্তু নিয়মিত খোজখবর নেয়। সাধ্যমতো সাহায্যও করে। দলীয় বদান্যতায় ইমানুুয়েলবাবুর ওই অস্থায়ী কাজটি পেয়েছেন তাহমিদা। মৃত ওই কংগ্রেসকর্মীর দাদা জমির হোসেন বলেন, “বিধায়ক অপূর্ব সরকার সব সময়ই খবর নেন। পড়শিরাও পাশে দাঁড়ান।” আর বিধায়ক অপূর্ব দত্তের বক্তব্য, “ইমানুয়েল হকের মতো প্রতিবাদী, জনদরদী মানুষের পরিবারের পাশে দাঁড়নো আমার কর্তব্য।”
দল পাশে দাঁড়ালেও সামান্য রোজগারে ৫ জনের পেট চালাতে হিমশিম অবস্থা তাহমিনা বেওয়ার। সংসারের আয় বলতে পাম্প চালিয়ে মাসান্তে ৫,৪০০ টাকা। আর একমাত্র সম্বল কাঠা দশেক জমি। ওই জমিতে বছরে যা ধান হয় তা দিয়ে সারা বছরের খোরাকি হয় না। তার উপর আবার বড় ছেলে সাজারুল শেখের পড়াশুোনার খরচ যোগাতে হয়। সাজারুল একটি আবাসিক স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। এই টানাটানির সংসারে ছেলের পড়াশুনার খরচ বাবদ মাসে তিন হাজার টাকা যোগাতে হয় তাহমিদাকে। হাজার কষ্ট সত্ত্বেও ছেলে পড়াশুনায় ছেদ ঘটাতে চান না তিনি। তাঁর কথায়, “ওর বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে শিক্ষিত করা। তাই ওর বাবার স্বপ্ন আমি ভাঙতে দেব না।” তিনি বলেন, “বিধায়ক সাহেব পাশে দাঁড়ান। খোঁজখবরও নেন। কিন্তু উনি যদি ছেলেটার পড়াশুনার ব্যবস্থা করে দিতেন, তা হলে ভাল হত। উনি বলেওছিলেন সে কথা। আসলে ব্যস্ত মানুষ তো, হয়তো বা খেয়াল নেই।” অপূর্ববাবু বলেন, “তাহমিদাদেবীর ছেলের পড়াশুনার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করব।” ইমানুয়েল হক হত্যা মামলায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত আট জনকে ধরেছে। সপ্তাহ দু’য়েক আগে মূল অভিযুক্ত আল্লারাখা শেখও এখন পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ইমানুয়েল হক খুন হওয়ার পর এখনও ওই এলাকায় পুলিশি ক্যাম্প রয়েছে। মূল অপরাধী আল্লারাখা ধরা পড়েছে। তবে নিহত ওই নেতার ছেলের পড়াশুনার জন্য কোনও সাহায্য করা যায় কি না সে ব্যাপারে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.