|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
চাইবাসা থেকে ছয়-সাত কিলোমিটার দূরে লুপুংঘুটু। লুপুংঘুটু-তে একটা ছোট ইস্কুল ছিল। প্রাইমারি স্কুল। আদিবাসী ছেলেমেয়েরা পড়ত। একটাই বড় ঘর। সেখানেই ওয়ান-টু-থ্রি-ফোর। একটা ব্ল্যাকবোর্ড, এক জনই মাস্টারমশাই। সাইকেলে চড়ে মাস্টারমশাই আসতেন। ইস্কুলঘরের তালা খুলতেন। একটা কুসুম সরষের তেলের টিনে বাঁশের কঞ্চি পিটিয়ে জানাতেন ক্লাস শুরু হচ্ছে।
পড়ুয়ারা অধিকাংশই ‘হো’ জাতির। অল্প কিছু মুন্ডা ছেলেপিলেও ছিল। সবে ঝাড়খণ্ড হয়েছে। হো’দের নিজস্ব লিপি ‘ওরাংচিতি’ও শেখানো হত। ওই স্কুলের মাস্টারমশাইকে বলেছিলাম, আপনি একাই তো সব করেন। শিক্ষায় নিবেদিতপ্রাণ। উনি বলেছিলেন, আমি আর কী করি। ইস্কুলটা তো বেঁচে আছে রেডিয়ো মাহাতো-র জন্য।
রেডিয়ো মাহাতো কে?
সাড়ে দশটা নাগাদ নদীর ধারে যাবেন, দেখতে পাবেন।
গিয়েছিলাম। একটা মানুষকে দেখেছিলাম এক পাল ছাগল-ভেড়ার মাঝখানে। লোকটার গায়ে অদ্ভুত জামা। জামা মানে হাওয়াই শার্টই। বড় বড় কয়েকটা পকেট অন্য ছিটের কাপড় দিয়ে বাইরে থেকে সেলাই করা। হাতে একটা বাঁশের লাঠি, লাঠির মাথায় একটা ত্রিশূল ধরনের লোহা ফিট করা। পকেট থেকে একটা তার চলে গেছে ত্রিশূল পর্যন্ত। তারটা ত্রিশূলে প্যাঁচানো। লোকটার শরীর থেকে বেরিয়ে আসছে গান। ওর একটা ফোলা পকেট থেকেও একটা তার বেরিয়ে শেষ হয়েছে আর একটা পকেটে। ওর শরীর থেকে বেরিয়ে এল ‘ইয়ে আকাশবাণী রাঁচি হ্যায়।’ বুঝলাম, ওর পকেটে রেডিয়ো রয়েছে।
আলাপ করলাম। ও কুর্মি মাহাতো। এ দিকে যখন জঙ্গল কেটে গ্রাম পত্তন হয়, তখন গ্রামে কামার-কুমোর নিয়ে আসতে হত। নইলে চাষের জন্য লাঙল-কোদাল-কাস্তে বানাবে কারা? হাঁড়ি-কলসি বানাবে কারা? ওরা আগে কামার ছিল, এখন বাগাল। লোকের ছাগল-ভেড়া চরায়। ওর ভালনাম, ডাকনাম দুটোই রেডিয়ো। বাবার রেডিয়োর শখ ছিল, কিনতে পারেনি। ছেলের নাম রেখেছে রেডিয়ো। ও দিকে অনেক নাম দেখেছি কেক হেমব্রম, কিসমিস মাহাতো, পুলিশ মুর্মু, বিডো মুন্ডা....। বিডো বোধ হয় বিডিও বোঝাতে চাওয়া।
রেডিয়ো মাহাতো রেডিয়ো কিনতে পেরেছিল। রেডিয়োটা দেখাল। চাইনিজ। বলল, টাটানগর থেকে কিনেছিল। পেন্সিল ব্যাটারিতে চলে। পেন্সিল ব্যাটারির দাম বেশি, বেশি দিন চলেও না। তাই একটা বাক্সে পর পর কয়েকটা বড় ব্যাটারি জুড়ে সেই তার অন্য পকেটের রেডিয়োর মধ্যে জুড়ে দিয়েছে, আর রেডিয়ো থেকে একটা তার বের করে লাঠির ত্রিশূলে জড়িয়েছে। ও বলল, ইটা ‘আড়িয়াল’ বটে। পষ্ট শুনা যায় স্যর। কলিকাতাও বাইর করে দিতে পারি এই রেডিয়ো থিক্যা। এমনি হবে না। এই লাঠির লহাটা পাহাড়ে ঢুুক্যে দিয়ে কলিকাতা শুনা যায়। এটা ওর আবিষ্কার। পেটেন্টহীন। ও তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ জানে না। এই সব পাহাড়গুলোয় লোহা আকরিক ভরা। কলকাতা বেতারের ক্ষীণ তরঙ্গ ও নিজস্ব আবিষ্কারে শিকার করে।
ও খুব রেডিয়ো শোনে। সারা দিন। রাঁচির ‘আপ কি ফরমাইস’ শেষ হলে ‘সাতরং’, তারপর জামশেদপুরের ‘গীত সুধা’ টিউন করে। ‘গীত সুধা’ শেষ হলে রাঁচির ‘জেনানা মহল’। তার পর ‘মনপসন্দ’। বিকেল পাঁচটা বাজলে চাইবাসার রেডিয়ো চালু হয়ে যায়।
ওর বাড়ি এই গ্রামেই। এই নদী থেকে হেঁটে গেলে চার গানের পথ। দুপুরবেলা ও ছাগল-ভেড়ার পাল নিয়ে চলে যায় ওই দূরে। পুরো সাতরং-এর পথ। এক ঘণ্টার অনুষ্ঠান। ওখানে জঙ্গল। কিন্তু ১১টা পর্যন্ত ওখানেই থাকতে হয়। ছেলেপুলেরা আসে যে নদীর ও-পার থেকে। নদীর ও-পারে যে গ্রামগুলি দেখা যায়, ওখানে কোনও ইস্কুল নেই। ও-দিকের পড়ুয়ারা নদীর এ-পারে আসে। তখন ভাদ্র মাস ছিল। ভরা নদী ছলছল। রেডিয়ো মাহাতো বলল, ইবার আমার ইসটুডেনরা এস্যে পড়বে। ওই দেখেন কেনে।
ও-পারে দুটো-চারটে করে ছেলেমেয়ে জড়ো হল। কিছু ক্ষণ পর কুড়ি-পঁচিশ জন হয়ে গেল। রেডিয়ো মাহাতো এ বার ওর সেই বিচিত্র পোশাক খুলে ফেলল। কৌপীন রইল। গাছের মাথায় একটা ঝুড়ি ছিল বাঁধা। ঝুড়িটা নিয়ে ও-পারে গেল। ওর প্রায় গলা-জল। পড়ুয়াদের ব্যাগগুলি ঝুড়িতে ভরে, সেই ঝুড়ি মাথায় নিয়ে এ-পারে এল। যেন বাসুদেব। বাচ্চারা সাঁতরে এল। ঝুড়িতে বই এবং পোশাক। ছেলেরা শুকনো পোশাক পরে নিল প্রকৃতিতে দাঁড়িয়ে। কয়েকটা বালিকাও ছিল। ওদের জন্য মোটা গাছের আড়াল ছিল। ওখানে জংলা ডালপালা ফেলা। এই মোহিনী আড়ালটিও হয়তো ওই লোকটিই রচনা করেছিল।
টিনের বাদ্যি শোনা গেল। মাস্টার এসে গেছে। রেডিয়ো মাহাতো বলল আবার হাজির হয়ে যাব কেনে ঠিক চারটের আগে। রেডিয়োতে ‘জেনানা মহল’ শুরু হলেই গাঁ-মুখে রওয়ানা দেব। জঙ্গলে যাওয়ার আগে আরও বলল ছ’টা মাস বড় ফুর্তি লাগে স্যর। আষাঢ় থিকা অঘ্রান। তার পর তো জল থাকে না। বৈশাখ মাসে তো খালি হাঁটুজল, আইজ্ঞা। |
|
সুমিত্র বসাক |
|
• বন্ধুর সঙ্গে বসলেন থ্রিলার দেখতে, ডিভিডি এনে। তার হঠাৎ পেট খারাপ, বারে বারে
বাথরুম ধায়। আর আপনাকে টানটান টুইস্টের জায়গায়, আধ ঘণ্টা পজ করে বসে থাকতে হয়। |
|
|
• এক দিন ভাবলেন, আমারও তো কিছু
শখ-আহ্লাদ আছে,
ওই লজেন্সটা কিনি, ছোটবেলায় খুব
প্রিয় ছিল। তার পর
পাগলের মতো দাঁত দিয়ে
টেনেও, পাউচটা খুলতেই পারলেন না। |
• একটা লোফারের মোবাইল বেজে উঠতেই শোনা গেল সেই হিন্দি
গানটা, যেটা আপনি একেবারে সহ্য করতে পারেন না। কিন্তু সেই
যে গানটা ঢুকে গেল কানে, যেখানেই যান, সর্ব ক্ষণ আপনার
মাথায় ঘোরে, আপনি দেখেন ওটাই গুনগুন করছেন! |
|
|
|
|
• ক্ষমতার কুর্সিটি পাওয়া ইস্তক লাভের গুড় নির্লজ্জ খাওয়াটাই যে দেশের নেতাদের রীতি, সেই ভারতে ব্যতিক্রমী নজির গড়লেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ, ‘সমাজের নিচু তলার মানুষের নিজেদের হাতে মল-নোংরা তুলে পরিষ্কার করার কাজ’ শীর্ষক এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে। মন্ত্রী জানালেন, এ দেশে আছে অন্তত ছাব্বিশ লাখ খাটা পায়খানা, তা ছাড়াও ডেলি ট্রেনে চাপেন দু’কোটি লোক, চব্বিশ ঘন্টায় ট্রেনের একটা কামরার শৌচাগার (যেগুলো আদতে খোলা গর্ত) ব্যবহৃত হয় আড়াইশো বার, লোকের যত প্রাকৃতিক কর্মফল সব পড়ে রেলের ট্র্যাকেই, আর রেলের ইমেজ সাফসুতরো রাখতে সেই ট্র্যাক পরিষ্কারও করাতে হয়। করে কারা? দু’লাখ তিরিশ হাজার মেথর-ভাঙ্গি-পারিয়া-দলিত, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে মানুষ হয়ে জন্মে যাঁদের বংশগত কাজই হল অন্যের গু-মুত ঘাঁটা। রমেশ ক’দিন আগেও শোরগোল ফেলেছিলেন এই বলে যে দেশে ‘টেম্পল’ যত, ‘টয়লেট’সংখ্যা তত নয়, ভারতবাসীর বরং উচিত শৌচাগারগুলোকে পুজো করা, তাতে যদি অস্বাস্থ্য-অপুষ্টি দূর করা যায়। নিজে নিষ্কম্মা হয়ে অন্যকে দুষবার বেহায়া ট্র্যাডিশনের ভূত ঘাড়ে না বওয়ার, ঝুঁকি নিয়েও অপ্রিয় সত্যিটা সহজে বলতে পারার এই সৎ সাহস বাহবাযোগ্য।
• আমেরিকার জর্জিয়ায় মারা গেলেন বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ বেসি কুপার, ১১৬ বছর বয়সে। সুদীর্ঘ জীবনটি ছড়িয়ে ছিল উনিশ-কুড়ি-একুশ তিনটি শতাব্দী ধরে। জন্ম ১৮৯৬ সালে, তখনও আসেনি উড়োজাহাজ-রেডিয়ো-টিভি, সিনেমার বয়স মোটে এক, লোকের ঘরে ঘরে টেলিফোন নেই, মোটরগাড়ি আসছে সবে। সেই মানুষটিই দেখে গেলেন এক্স-রে থেকে আইফোন। মোট তেতাল্লিশ জন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে তাঁর জীবনকালেই দেশ চালিয়েছেন কুড়ি জন। জীবনভর ছিলেন সুস্থ, এক বার নিউমোনিয়া ছাড়া কখনও হয়নি কোনও অসুখবিসুখ, বা অপারেশন। স্মৃতিশক্তি দুর্দান্ত। খাওয়া বলতে শাকসবজি, বেকন-এগ-ফ্রায়েড চিকেন গোনাগুনতি, সময় কাটত বাগান করে, টিভিতে খবর দেখে আর হ্যাঁ, এই বয়সেও বই পড়ে! স্কুলে পড়িয়েছেন, ১৯৬৩-তে স্বামী মারা যাওয়ার পর চল্লিশ বছরেরও বেশি দিব্যি একা থেকেছেন। রাজনীতির খবর রাখতেন, ১৯২০ সালে মার্কিন মেয়েদের ভোটাধিকার প্রাপ্তির পর থেকে শুধু দু’বার ছাড়া ফি-নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। নিজেই জানিয়ে গেছেন দীর্ঘ জীবনের রহস্য: অন্যের ব্যাপারে নো নাক গলানো, আর নো জাঙ্ক ফুড। |
|
|
|
৫৪৫০০০০
এ বছর প্রাথমিক শিক্ষকের পদে পরীক্ষার জন্য যত সংখ্যক
অ্যাডমিট কার্ড ইস্যু করতে
হবে রাজ্য সরকারকে |
৮০০০০০০
পোষা কুকুরদের
দেখভালে
প্রতি বছর
যত পাউন্ড খরচা
করছেন জাপানিরা |
২
নকল গোঁফের সরবরাহে
গোটা বিশ্বে ভারত
যত নম্বরে। এক
নম্বরে আছে চিন |
১৩২
নকল জিনিসপত্র বিক্রি
করার অপরাধে যতগুলো
ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ ঘোষণা
করল মার্কিন সরকার |
২৫
পেশাদার বক্সিংয়ে নামছেন
বলে যত কেজি ওজন ঝরালেন প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটার
অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ |
৩০০০০০০
জন্মদিনের পার্টিতে শ্যাম্পেনের
পেছনে যত ডলার খরচ করলেন
হলিউডের অভিনেতা
লিওনার্দো দিক্যাপ্রিয়ো
|
৫১৪০
যত টাকা মাসিক
বেতন পূর্ব রেল ও
মেট্রোর পুলিশ কুকুরদের
|
২০০০০০০
বাথরুমের তুলনায়
যত গুণ
বেশি জীবাণু
রান্নাঘরে বাসন মাজার স্ক্রাবারে
থাকে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের |
|
|
|
|
|
অ
সী
ম
রা
য় |
|
নাক ডাকিয়েও জাগ্রত খুব, যখন যে কেউ
দোষ করে
ক্যাঁক করে তার ধরছি গলা। ওঠাই
ফণা ফোঁস করে।
টিভির ফ্রেমে বাগাই ঘুঁষি, বাপ
রে করি কী তর্কই!
শুধোই না কেউ স্পষ্ট
গলায়... শাহেনশাহ-র কাপড় কই! |
তুমি প্রসন্ন থাকলেই কাফি। তোলা তুলে টিঁকে রব।
হরেক শেডের সবুজ এঁকেছ... অতিপুরাতন... নব।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অশেষ করেছ। এই ছবি লীলা তব।
যদিও চালাই গোলাগুলি, প্রাণে ভয় করি অনুভবও।
বোকা জনগণ যদি বলে ফ্যালে ‘পুনর্মূষিকো ভব!’ |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
গ্রহের ফের |
|
|
|
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন জয়িতা চৌধুরী, কাঁকুড়গাছি |
ডান দিকে ছবির দু’জন কী বলছে?
সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|
|
|