ইস্টবেঙ্গলের ‘ডায়মন্ড’ ভাঙতে চান এলকো • ‘নতুন ডার্বি’ ঘিরেও গণ্ডগোলের আশঙ্কা
র‌্যান্টিকে অচল করতেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন মর্গ্যান
ধুনিকতম, ঝকঝকে সাজানো ড্রেসিংরুম থেকে সাত সকালে ভেসে আসছে হিন্দি গান, হইচই, আড্ডার শব্দ। মনোবিদরা বলছেন, এটা ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের ড্রেসিংরুম স্ট্র্যাটেজি। চাপ-মুক্ত থাকার কৌশল।
ঠিক আধ ঘণ্টা পর সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে শুরু হল শ্যাডো বক্সিং। র্যান্টি মার্টিন্সের সঙ্গে বেলো রাজ্জাক, লালকমল ভৌমিকের বিরুদ্ধে শঙ্কর ওঁরাও! প্রয়াগ ইউনাইটেড তো কাল ফুটবল খেলতে নামছে, তা হলে ঘুষি পাকিয়ে একে অন্যকে তেড়ে যাওয়া কেন? প্রশ্ন করুন কোচ এলকো সতৌরিকে। ‘‘এটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে মনস্থির করার অনুশীলন। আমার প্রিয় কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার ট্রেনিং শিডিউলে থাকে।”
আজকের আই লিগ ম্যাচকে বলা হচ্ছে কলকাতার ‘নব্য ডার্বি।’ সাতাশি বছর ধরে চলা বাঙালির আদি লড়াই ঘিরে গত রবিবারই নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বাংলা। কলঙ্কিত হয়েছে ভারতীয় ফুটবল। মোহনবাগানের সঙ্গে তুলনা চলে না প্রয়াগের। কিন্তু দেশের সবথেকে হইচই ফেলা দামি টিমে (প্রায় কুড়ি কোটি) র্যান্টি, কার্লোস, গৌরমাঙ্গি, সুব্রত পালদের মতো তারকার ভিড়। আর সে জন্যই ব্রিটিশ বনাম ডাচ কোচের ট্যাকটিক্সের ঝনঝনানির দিকে নজর সবার। লড়াই আরও আছে। র্যান্টি বনাম চিডি, কার্লোস হার্নান্ডেজ বনাম পেন ওরজিঅসংখ্য লড়াই!

র‌্যান্টি জায়গা পাবে তো?
“আপনাদের এই সমস্যা। গত শনিবার প্রশ্ন করেছিলেন, এক স্ট্রাইকারকে (পড়ুন ওডাফা) কী ভাবে আটকাব? তাকে তো নড়তেই দিইনি। র্যান্টি ভাল ফুটবলার। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে গোল করার জায়গা পাবে না।” শনিবার অনুশীলন শুরুর আগে নিজস্ব স্টাইলে বললেন আত্মবিশ্বাসী মর্গ্যান। শুনে গোলমেশিন র্যান্টির ভ্রু কুঁচকে পাল্টা হুঙ্কার, “মর্গ্যান এসব বলেছে না কি? কাল ম্যাচের পর যা বলার বলব। আমার গোলের চেয়েও দলের জেতাটা বেশি দরকার।”
অনুশীলনে গত দু’বারের সর্বোচ্চ গোলদাতার জন্য মর্গ্যানের ছকজোনাল মার্কিং। দায়িত্বে উগা ওপারা।
দ্যাখো এ ভাবেই বোকা বানাতে হবে ডিফেন্ডারকে।
মর্গ্যানের ক্লাসে গোলমেশিন চিডি। শনিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
লং বল না-পসন্দ
“ইস্টবেঙ্গলের বহু দিন একসঙ্গে খেলাটা বিরাট প্লাস পয়েন্ট মর্গ্যানের। টানা ৩২ ম্যাচ না হারা বড় ব্যাপার। তবে ওদের লং বল স্টাইল আমার পছন্দ নয়। এতে স্ট্রাইকাররা ধরা পড়ে যায়। এটা বিশ্ব ফুটবলে পিছনের দিকে চলে গেছে। এখন মাটিতে বল রেখে বার্সেলোনা স্টাইলে খেলার যুগ,” একটু থেমে এলকোর সংযোজন, “আমার ফুটবলাররা সত্তর শতাংশ ফিট। তাতে ভয় পাই না। এক গোলে এগিয়েও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলব। দশ জনে রক্ষণ করব না।”
দুই কোচের পরিসংখ্যান: এ বারের আই লিগে শেষ তিন ম্যাচের তিনটেই জিতেছে মর্গ্যানের ইস্টবেঙ্গল। এলকোর প্রয়াগের পারফরম্যান্সহার, হার এবং হার।

বিশ্বকাপার বনাম মেহতাব
চোট থাকায় আই লিগের একমাত্র বিশ্বকাপার কোস্তারিকার কার্লোস হার্নান্ডেজ শনিবার অনুশীলনে নামেননি। প্রয়াগ কোচ অবশ্য জানাচ্ছেন, খেলবেন। মর্গ্যানের সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ এশিয়ার অন্যতম সেরা ফ্রি কিক জাদুকরের। ইউ টিউবে কার্লোসের সেরা ছ’টি ফ্রিকিক দেখে মুগ্ধ লাল-হলুদ কোচের মনের ডায়েরিতে লেখা, র্যান্টিকে বল জোগানোর লাইফলাইন কার্লোস। বলেও ফেললেন সেটা। কার্লোসকে থামাতে লাগাচ্ছেন মিডিও মেহতাব হোসেনকে। পারবেন? “বিশ্বকাপার বলে ভয় পাচ্ছি না। ডেম্পো ম্যাচে দেখলাম। গোলের সামনে পাসটা খুব ভাল বাড়ায়। তবে একটু শ্লথ। ওকে থামানোর চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছি।”

ফিরে এলেন অমল দত্ত!
মর্গ্যানের টিম ফর্মেশন না কি ৪-১-২-১-১। মাঝের ১-২-১ আসলে ম্যাচে ডায়মন্ডের ফর্মেশন নেয়। দুই কোণে পেন আর মেহতাব। অন্তত এলকোর তাই মত। ছবি এঁকে বললেন, “ডায়মন্ড আটকাতে রক্ষণ আর মাঝমাঠের ফাঁকটা কমানোর অনুশীলন করাচ্ছি।” সবে এসেছেন। চেনেন না অমল দত্তকে। কলকাতা ফুটবলে ডায়মন্ড এনেছিলেন তো জ্যাংড়ার ভদ্রলোকই। আর এলকোর মন্তব্য শুনে হেসে লুটোপুটি লাল-হলুদ কোচ। “ডায়মন্ড! সে তো অনেক দাম।”

সেটের আমি, সেটের......
দু’দলের অনুশীলনেই সেট পিসের জন্য ব্যয় হল কুড়ি মিনিট করে। কারণ ভিন্ন। মর্গ্যানের সেট পিসের কলাকৌশল ধরে ফেলছে বিপক্ষ। তাই নতুন স্ট্র্যাটেজি তৈরি করলেন মর্গ্যান। আর এলকো! “সেট পিসে গোল পাচ্ছি। কালও পেতে চাই।”

পরিবর্তন নয়, জিততে চাই
ইস্টবেঙ্গলে কোনও পরিবর্তন নেই। প্রয়াগে দীপক মণ্ডল ঢুকছেন দলে। লাল-হলুদে চোটের জন্য সঞ্জু নেই। প্রয়াগে নেই তুলুঙ্গা। চিডি বলছেন, “পায়ে বল পড়লেই গোল করতে হবে। শুরুতেই গোল পেতে চাই।” আর র্যান্টি মার্টিন্সের মন্তব্য, “তিনটে ম্যাচ হারার পরও ডেম্পোকে চ্যাম্পিয়ন করেছি। কাল জিতলেই দেখবেন সব পরিবর্তন হয়েছে।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.