ঝাঁকে ঝাঁকে গুলির সামনে তখন খুদে পড়ুয়ারা রীতিমতো অসহায়। এ দিকে সামনে শমন। ঝাঁপিয়ে পড়লেন শিক্ষিকা ভিক্টোরিয়া সোটো। নিজের শরীর দিয়ে শিশুদের গুলির আড়াল করতে চেয়েছিলেন। তাতেই বেঁচে গেল বহু শিশুর প্রাণ। আর কানেক্টিকাটের স্যান্ডি হুক স্কুলের ক্লাসঘরে পড়ে রইল তরুণী ভিক্টোরিয়ার নিথর দেহ। প্রায় একই ভাবে প্রাণ হারান আরও দুই শিক্ষিকা ডন হকস্প্রাঙ্গ ও মেরি শারল্যাক। শুক্রবারের তাণ্ডবের অন্যতম তিন
|
ডন হকস্প্রাঙ্গ |
শিকার বা বলা ভাল মানবিকতার নয়া তিন মুখ।
অথচ আর পাঁচটা দিনের মতো শুক্রবারও নির্ঝঞ্ঝাট সূর্যোদয় দেখেছিল কানেক্টিকাটের মফঃস্বল শহর নিউটাউন। সকাল সাড়ে ন’টা থেকেই হঠাৎ বদলে যায় গোটা ছবিটা। মায়ের বন্দুক আর পিস্তল নিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে চালাতে স্কুল চত্বরে ঢুকে পড়ে অ্যাডাম ল্যানজা। পুলিশে ফোন যায় তড়িঘড়ি। কয়েক মিনিটের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী হাজিরও হয় সেখানে। কিন্তু ততক্ষণে অন্তত জনা কুড়ি শিশুর প্রাণ গিয়েছে। মারা গিয়েছেন স্কুলের কমর্চারী ও শিক্ষিকা মিলিয়ে আরও সাত জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, গুলিবর্ষণ শুরুর আগে অধ্যক্ষা ডন হকস্প্রাঙ্গ ও মনোবিদ মেরি শারল্যাকের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন তাঁরা। এমন সময়ই বিকট আওয়াজ। সঙ্গে সঙ্গে হলের দিকে দৌড় লাগালেন ডন ও মেরি। স্কুলের পড়ুয়াদের সুরক্ষিত করতে বিপদের মুখোমুখি হন তাঁরা। বন্দুক আর পিস্তল হাতে অ্যাডাম তখন একদম সামনে। নিমেষে ছুটে এল গুলি। ঝাঁঝরা করে দিল তাঁদের দেহ।
স্কুলকেই আঁকড়ে ধরেছিলেন ডন। বিবাহ-বিচ্ছেদ হওয়ার পর দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছিলেন তিনি। সুখীও ছিলেন সেই সম্পর্কে। তবুও স্কুলই ছিল ধ্যান-জ্ঞান। মেরির গল্পও প্রায় একই রকম। সুখী বিবাহিত জীবন আর কুড়ির কোঠায় পা দেওয়া দুই মেয়েকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। খুদে পড়ুয়াদের মধ্যেই আনন্দ খুঁজে পেতেন হাসিখুশি মেরি। বছর সাতাশের ভিক্টোরিয়া পাঁচ বছর ধরে পড়াচ্ছিলেন ওই স্কুলে। খুদে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চূড়ান্ত জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
এই ত্রয়ীর মুত্যুতে কাঁদছে সবাই। কে বলতে পারে হয়তো শিখছেও। নিজের জীবন দিয়ে জীবন বাঁচানোর দুর্লভ শিক্ষা দিতে পেরেছেন যে ওঁরা। |