উত্তরপ্রদেশের চরথৌলের ছায়া পড়ল নদিয়ার নবদ্বীপে।
নবদ্বীপের মণিপুর এলাকার সদ্য-ত্রিশ এক মহিলা, শুক্রবার স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেছেন, গত কয়েক মাস ধরেই প্রায় নিয়মিত তাঁকে ধর্ষণ করছেন তাঁর সত্তরোর্ধ্ব শ্বশুর। এ ব্যাপারে মহিলার স্বামী কিংবা শাশুড়ির কাছে নালিশ করলে তাঁকে শুনতে হয়েছে, ‘পরিবারে থাকলে কিছু জিনিস মেনে নিতে হয়।’ মহিলার স্বামী পঙ্গু। বিশেষ আয় নেই তাঁর। শ্বশুরের রোজগারেই চলত তাঁদের সংসার।
“সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই দিদির উপরে অত্যাচার করে আসছিল ওর শ্বশুর”, এমনই দাবি করেছেন ওই মহিলার দাদা। চোদ্দ বছর বিয়ে হয়েছে তাঁর। দুই সন্তানকে নিয়ে এ দিন থানায় এসে ভেঙে পড়েন ওই মহিলা। লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তখনই গিয়েছিল মণিপুর এলাকায় তাঁদের বাড়িতে।
কিন্তু পুলিশ গিয়ে দেখে বাড়িতে তালা। বেগতিক দেখে মহিলার স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ি পলাতক। নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “ওই মহিলার শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে বাড়ির সকলেই পলাতক।”
শ্বশুর আলি মহম্মদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ধর্ষণের অভিযোগ তোলায় ২০০৫ সালে উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরের প্রান্তিক গ্রাম চরথৌলের মাতব্বরেরা সালিশি ডেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলএর মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। শুধু তাই নয়, তাদের রায় ছিল, ইমরানাকে শ্বশুরের সঙ্গেই বিবাহিত জীবনযাপন করতে হবে। স্বামী নুর লাহিকে ভাবতে হবে ‘সন্তান’।
তবে ইমরানা সে কথা শোনেননি। স্বামীকেও পাশে পেয়েছিলেন তিনি। এখনও সেই স্বামীর সঙ্গেই বিবাহিত জীবনযাপন করছেন ইমরানা। নবদ্বীপের ওই মহিলা স্বামীকে পাশে না পেলেও পড়শিরা তাঁর পাশে রয়েছেন। তাঁরাও জানান, মহিলার শ্বশুরের ‘স্বভাব’ সুবিধার নয়। ওই মহিলার দাবি, “স্বামী ও শাশুড়ি দু’জনেই সব ঘটনা জানেন। তাঁরা অবশ্য শ্বশুরকে কোনও বাধা দেননি। বরং আমাকেই বাধ্য করেছেন শ্বশুরের ইচ্ছা মেনে নিতে।” তিনি জানান, প্রতিবাদ করায় মুখে বালিশ চাপা দিয়ে খুনের চেষ্টাও করা হয়েছিল তাঁকে। |