কাটোয়া শহরের পাঁচটি স্কুলের ভোটে কোনও প্রার্থীই দিতে পারল না তৃণমূল। কাল, রবিবার কাটোয়া শহরের সাতটি স্কুলের মধ্যে পাঁচটিতেই অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন। এই স্কুলগুলিতে কংগ্রেস এবং সিপিএম লড়াইয়ে নামলেও ভোটের ময়দানে তৃণমূল নেই। এর মধ্যে দুর্গাদাসী চৌধুরানি (ডিডিসি) স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধির দু’টি মহিলা আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা।
রাজ্যে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মুর্শিদাবাদের বহরমপুর বা নদিয়ার শান্তিপুরেও নানা স্কুলের ভোটে তৃণমূলকে লড়াইয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। সেখানে কাটোয়ার স্কুলগুলিতে তৃণমূল কোনও প্রার্থী দিতে পারল না কেন, সে প্রসঙ্গে দলের বর্ধমান জেলার যুব সংগঠনের কোর কমিটির সদস্য অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “দলের মূল সংগঠনের যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের ব্যর্থতার জন্য কাটোয়ার স্কুলগুলিতে আমরা প্রার্থী দিতে পারিনি।” তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া শহরে তাদের সংগঠন দুর্বল। তার মধ্যে আবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও রয়েছে। কয়েক মাস আগে কাটোয়া মহকুমা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছিল। দু’টি গোষ্ঠীর এক দিকে রয়েছেন দলের জেলার অন্যতম সহ-সভাপতি কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়। অন্য গোষ্ঠীতে আছেন জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক মণ্ডল আজিজুল।
মণ্ডল আজিজুলের অভিযোগ, “কাটোয়া শহরে প্রার্থী দেওয়ার যথেষ্ট ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস এবং সিপিএমের যৌথ সন্ত্রাসে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি।” এই অভিযোগ অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন দলের উচ্চ নেতৃত্ব। তৃণমূলের বর্ধমানের অন্যতম পর্যবেক্ষক অলোক দাসের কথায়, “কাটোয়ার স্কুলগুলিতে কেন প্রার্থী দিতে পারা গেল না, সে নিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, ওখানে তৃণমূল স্কুল নির্বাচন নিয়ে কোনও প্রস্তুতি নিতে পারেনি। কেন এ রকম হল তা খতিয়ে দেখতে হবে।”
সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক, দু’দিক থেকেই তৃণমূল দেউলিয়া। তাই তারা কোনও স্কুলেই প্রার্থী দিতে পারেনি।” কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের আবার দাবি, “কাটোয়ার মানুষ কংগ্রেসকে ভালবাসেন। আমাদের উপরে তাঁদের আস্থা রয়েছে।”
রবিবার শহরের কাশীরাম দাস বিদ্যায়তন (কেডিআই), ডিডিসি, রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ, ভারতীভবন ও কাশীশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট হবে। এর মধ্যে ভারতীভবন ও কাশীশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতি সিপিএমের দখলে রয়েছে। স্কুল ভোট শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারতীভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে রয়েছে সিপিএম। গত বার ওই স্কুলে ভোট চলাকালীল সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ বার ওই স্কুলে ১৪৪৫ জন অভিভাবক ভোট দেবেন। কাশীশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়েও শুরু থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন বামপন্থীরা। এখানে এ বার ভোটদাতার সংখ্যা ১৩৫৪ জন। কেডিআই-তে ২৫০০ জন, ডিডিসি-তে ২৫০০ জন ও রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠে ১৪০০ জন ভোটার রয়েছেন। পাঁচ স্কুলের পরিচালন সমিতি এ বার কার হাতে যায়, রবিবার সে দিকেই নজর থাকবে কাটোয়াবাসীর। |