নানা উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ সহ অনৈতিক কাজের অভিযোগে সিপিএম পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মুকে রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূল যুব কংগ্রেস। মঙ্গলবার বিকেল ৩ টে থেকে বালুরঘাটে জেলা পরিষদ ভবনের সামনে জমায়েতের মাধ্যমে ঘেরাও বিক্ষোভ শুরু হয়। বিপ্লব খাঁ, শুভাশিস পাল, মাহমুদা বেগমের উপস্থিতিতে ঘরাও-বিক্ষোভ হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, জেলা পরিষদে গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনিয়ম, কালদিঘি লিজ, গঙ্গারামপুরে রবীন্দ্র ভবন তৈরি, হিলিতে ট্রাক টার্মিনাসে পার্কিং ফি সংগ্রহে দুর্নীতি সহ নানা অভিযোগ তোলা হয়। দুপুর থেকে জেলা জুড়ে বাস ও ছোট গাড়ি নিয়ে দলে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা বালুরঘাটে সমবেত হয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল গিয়ে জেলা পরিষদ ভবন ঘিরে ফেলে নেতৃবৃন্দ। জেলা পরিষদের নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতি কাজের ফিরিস্তি টেনে ভাষণ দিতে থাকেন তাঁরা। বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে এক প্রতিনিধি দল ১৭ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি নিয়ে সিপিএম নেত্রী সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মুকে ঘরের মধ্যে ঘেরাও করেন। সহকারী সভাধিপতি তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অমিত সরকার ছিলেন। অভিযোগ ধরে ধরে বিক্ষোভকারীরা সভাধিপতির জবাব চান। সভাধিপতি কোনও অভিযোগের সদুত্তর দিতে পারেননি বলে যুব তৃণমূলের দাবি। এ নিয়ে তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেস কার্যকরী সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “জেলা সভাধিপতির নামে সিপিএম জেলা পরিষদ চালাচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের দিকে লক্ষ রেখে তারা প্রকল্প রূপায়ণের নামে নয়ছয় ও স্বজনপোষণ করছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী বলেন, “সভাধিপতিকে দীর্ঘসময় ধরে ঘেরাও আন্দোলনের নামে অসভ্যতা হয়েছে। সর্বত্র স্বৈরতন্ত্র চলছে মানুষ সব দেখছেন। যথাযথ সময় তাঁরা রায় দেবেন।” সভাধিপতি বলেন, “আন্দোলনকারীরা যে সমস্ত অভিযোগ করেছেন, তার বেশির ভাগই ঠিক নয়। জেলা পরিষদের বাস্তুকার, আধিকারিক এবং কর্মাধ্যক্ষরা প্রকল্প পরিদর্শনের কাজে প্রয়োজ ভিত্তিক ভাড়া গাড়ি ব্যবহার করেন। নিজস্ব গাড়ি ৩টি রয়েছে। কালদিঘি লিজ সংক্রান্ত পুরনো বিষয়টি ইতিমধ্যে সংশোধন করে লিজ মানি বাড়ানো হয়েছে। গঙ্গারামপুরে রবীন্দ্র ভবন উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে।” জেলা পরিষদের বিরোধী তৃণমূল সদস্য অখিল বর্মন অভিযোগ করেন, “বংশীহারীর সরাইহাট এবং তপনের সাহানালি এলাকায় দুটি সেতুর ধার্যকৃত অর্থের প্রায় ৫২ শতাংশ টাকা উদ্বৃত্ত টেন্ডার দিয়ে তৈরি করা হয়, যেখানে ছাড় দিয়ে কাজ করানো হয়। কোন কারণে সেতু দুটি উদ্বৃত্ত টেন্ডারে কাজ করানো হল, তার সদুত্তর সভাধিপতি দিতে পারেননি। জেলা পরিষদের ইটভাঁটা, মার্কেট কমপ্লেক্সে চলছে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি আমরা ১৭ দফা অভিযোগ পেশ করে বিষয় গুলির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি।” |