নার্সিংহোমে আগুন লাগানোর চেষ্টা
গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ, ভাঙচুর
চিকিৎসা শুরু করতে টালবাহানায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে এই অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করল মৃতের বাড়ির লোকজন। সোমবার রাতে কোচবিহার শহরের মদনমোহন বাড়ি লাগোয়া এলাকার একটি নার্সিংহোমে ওই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।
পুলিশ জানা গিয়েছে, মৃতের নাম নয়ন দাশগুপ্ত (৫৫)। বাড়ি কোচবিহারের ম্যাগাজিন রোড এলাকায়। কোচবিহার পুরসভার কর্মী নয়নবাবুর মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের দাবিতে মঙ্গলবার কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে স্মারকলিপি দেয় তৃণমূল। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানিকলাল দাস শাসকদলের তোলা অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও বিষয়টিকে গুরুত্বই দিতে চাননি। তিনি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তবে এস ব নিয়ে বিশদে এখনই কিছু বলার নেই। এমনকী, অভিযোগের তদন্ত করা হবে কি না, সেই প্রশ্নেও কোন মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
নার্সিংহোমে ভাঙচুর কোচবিহারে। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় পরিবারের লোকেরা নয়নবাবুকে ওই নার্সিংহোমে নিয়ে যান। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ নয়নবাবুকে ভর্তি করানো নিয়ে টালবাহানা করেন। রোগীর পরিজনদের সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের এক চিকিৎসকের চেম্বারে দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। রোগী নিজে শ্বাসকষ্টের জেরে অক্সিজেন দেওয়ার আর্জি জানালেও কর্তৃপক্ষ গরজ দেখাননি।
এ নিয়ে দু’পক্ষে বাদানুবাদ হয়। বাধ্য হয়েই পরিবারের লোকেরা নয়নবাবুকে ওই চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়ে যান। সেখান থেকে ফিরিয়ে ফের নার্সিংহোমে ভর্তির করানোর পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই জনতা নার্সিংহোমে বিক্ষোভ দেখায়। ডিজেল ঢেলে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা হয়। জনতা ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ।
কোচবিহার শহর কমিটির তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রঞ্জিত গুপ্তচৌধুরী বলেন, “প্রায় আধ ঘণ্টা বাদানুবাদে সময় নষ্ট হয়েছে। প্রথমেই নয়নবাবুর চিকিৎসা শুরু হলে হয়তো ওই ঘটনা এড়ানো যেত। রোগী বারবার অক্সিজেন দেওয়ার আর্জি করছিলেন। সেই জন্যই মৃত্যুর ঘটনা বাসিন্দারা মেনে নিতে না পেরে বিক্ষোভ দেখান। কোচবিহার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা আহমেদও ঘটনায় উদ্বিগ্ন। তিনি জানান, নয়নবাবু ভাল মানুষ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর কথায়, “এমন মানুষের মৃত্যুর পরে গাফিলতির অভিযোগ শুনে বাসিন্দারা খেপে যান। ক্ষোভ চরমে পৌঁছয়।”
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর অবস্থা ‘অত্যন্ত সঙ্কটজনক’ বুঝেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মত ছাড়া তাঁকে ভর্তি নেওয়ার ঝুঁকি নিতে চাননি ভারপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার। চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া মাত্র তিনি রোগী দেখেন। ভর্তি করিয়ে দরকারি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। রাস্তায় দুর্ভাগ্যজনক ভাবে নয়নবাবুর মৃত্যু হয়।” ওই রোগীর ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যাপারে নার্সিংহোম আপত্তি জানানোয় একদল জনতা নার্সিংহোমের কম্পিউটার, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন ধরানোর চেষ্টা চালায় বলে কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
ওই নার্সিং হোমের কর্ণধার সুভাষ সাহা বলেন, “যে রোগী ভর্তি হননি, তাঁর চিকিৎসায় গাফিলতির প্রশ্নই নেই। অথচ তাও নার্সিংহোমে ভাঙচুর করে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরানোর চেষ্টাও হয়েছে। পুলিশ সময় মতো পৌঁছনোয় বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। তদন্ত হলেই সব স্পষ্ট হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.