নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করেও পুরসভা পিছু হটছে কেন, সেই প্রশ্নে এবার পুরসভার অন্দরেই চাপানউতোর শুরু হয়ে গেল। পুরসভা সূত্রের খবর, জনমানসে একশ্রেণির ইঞ্জিনিয়র ও কর্তারা বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে উদ্যোগী হচ্ছেন না বলে মেয়র পারিষদের একাংশ অভিযোগ তুলেছেন। সে জন্য পুরসভার একাধিক অফিসার ও ইঞ্জিনিয়র অন্যত্র বদলির চেষ্টা শুরু করেছেন। ক্ষুব্ধ ইঞ্জিনিয়র ও অফিসারদের একাংশের অভিযোগ, অন্তত ১০টি বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে গত ২১ নভেম্বর নোটিশ পাঠিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ, বুধবার সেই সময়সীমা শেষ হবে। পুরসভার একজন পদস্থ অফিসার জানান, বেআইনি নির্মাণ ভাঙা নিয়ে টালবাহানা চলছে দেখেই তাঁরা অন্যত্র বদলির চেষ্টা করছেন। পক্ষান্তরে, পুরসভার কাউন্সিলরদের একাংশ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত ও মেয়র পারিষদ সীমা সাহাকে অপসারণের দাবি তুলেছেন। প্রসঙ্গত, পুরসভার তৃণমূলের পরিষদীয় দলের নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও একাধিকবার বলেছেন, “মেয়র বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে না-পারলে দায়িত্বে রয়েছেন কেন?” পাশাপাশি, কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের একাংশ পক্ষ থেকে মেয়র পারিষদ সীমা দেবীর ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২১ নভেম্বর বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ব্যাপারে কমিশনারের কাছে তালিকা দেন সীমা দেবী। সেই তালিকা অনুযায়ী নোটিশও পাঠানো হয়। কিন্তু, নির্দেশ কার্যকর হয়নি। তাই সীমা দেবীও ভীষণ বিরক্ত। তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কংগ্রেসের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছ্,ে প্রয়োজনে সাংবাদিক সম্মেলন করে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে কী ভাবে, কোথা থেকে বাধা আসছে তা জানিয়ে দেবে বিল্ডিং বিভাগ। যেখানে পুরসভা ঘোষণা করেছে, বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হবে, সেখানে এত চাপানউতোর, বিতর্কের প্রশ্ন আসছে কেন সেটাই বুঝতে পারছেন না মেয়র। তিনি বলেন, “সোমবার বিধান মার্কেটে রাস্তা দখলমুক্ত করতে কর্মীরা কাজ করেছেন। মঙ্গলবার মহানন্দা নদীর চর থেকে দখলদার উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ ছাড়া সামনে বোর্ড মিটিং রয়েছে। সে সংক্রান্ত কাজ ইঞ্জিনিয়ারদের করতে হয়। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিদিন বেআইনি নির্মাণ ভাঙা যাচ্ছে না। আমরা সমস্ত বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তবুও বিশেষ উদ্দেশ্যে অহেতুক কিছু অভিযোগ তুলে পুরসভার উন্নয়ন মূলক কাজকর্মকে খাটো করার চেষ্টা চলছে।” গত সপ্তাহে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার অভিযানে নামে পুরসভা। প্রথম দিন ৩টি নির্মাণ ভাঙা হয়। পর দিন একটি নির্মাণ ভেঙে অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। তা নিয়ে শহরের নানা মহলে শুরু হয় জল্পনা। প্রায় সব দলের নেতা-মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার পক্ষে সওয়াল করা সত্ত্বেও তা হচ্ছে না কেন সে প্রশ্ন ওঠে কংগ্রেস-তৃণমূলের অন্দরেও। তা ফের কবে শুরু হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। |