কোপ গঙ্গাসাগরেও, প্রতিবাদে সরব রাজ্য
দুর্যোগ ও মেলার কেরোসিনে ভর্তুকি রদ
পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের পরে এ বার কেরোসিন। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ‘রাজ্য-ভিত্তিক কোটা’য় যে-কেরোসিন পাওয়া যায়, তার উপর থেকে ভর্তুকি তুলে নিল কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। এখন থেকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, মাছ চাষ, মেলা, যাত্রা ইত্যাদির জন্য রাজ্যগুলিকে ভর্তুকিতে কেরোসিন দেওয়া হবে না। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে গঙ্গাসাগর মেলার জন্যও ভর্তুকিতে কেরোসিন পাওয়া যাবে না।
এত দিন ডিজেল, পেট্রোল, রান্নার গ্যাসের উপর থেকে ধাপে ধাপে ভর্তুকি ছাঁটাই শুরু করেছিল কেন্দ্র। গরিবদের নিত্যব্যবহারের কেরোসিনে ভর্তুকি দেওয়ার নীতিই বহাল রাখা হয়েছিল। এ বার রেশন ব্যবস্থার বাইরে ব্যবহার্য (আপৎকালীন পরিস্থিতিতেও) কেরোসিনের উপরে ভর্তুকি তুলে দেওয়ার ফলে বিভিন্ন রাজ্য প্রতিবাদে সরব হতে শুরু করেছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মঙ্গলবার বলেন, “কেন্দ্র গরিব মানুষের পেটে লাথি মারতে শুরু করেছে। কোথাও বন্যা হলে ত্রাণের জন্য যে-কেরোসিন দেওয়া হয়, তার উপর থেকেও ভর্তুকি তুলে নেওয়া হল।” তিনি জানান, প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলার জন্য বিশেষ কোটায় এক লক্ষ লিটার কেরোসিন তোলা হয়। এত দিন প্রতি লিটার ১২ টাকা ৮৯ পয়সা দরে পাওয়া যেত সেই কেরোসিন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “এখন সেই কেরোসিন কিনতে হবে প্রতি লিটার ৩৪ টাকা ৮৯ পয়সা দরে।”
এ বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন কি?
খাদ্যমন্ত্রীর জবাব, বারবার কথা বলেছি। ওরা জানিয়ে দিয়েছে, আপৎকালীন অবস্থার জন্যও ভর্তুকিতে কেরোসিন দেওয়া হবে না। নিতে হলে পুরো টাকা দিয়েই নিতে হবে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, গঙ্গাসাগর মেলায় কেরোসিনের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ দফতরেও তো টানাটানি। তারা কোথা থেকে টাকা দেবে? ফলে গঙ্গাসাগর মেলায় এ বার কেরোসিন দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, যে-কেরোসিনের উপরে ভর্তুকি দেওয়া হয়, সেটাও সরাসরি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে। রেশন ব্যবস্থার বাইরে আর কোনও ক্ষেত্রেই কেরোসিনে ভর্তুকি দেওয়া হবে না। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। বিশেষ কোটার কেরোসিনও সরকার যত খুশি চাইলে পাবে না। এক মাসে রেশনে বণ্টনের জন্য যে-পরিমাণ কেরোসিন দেওয়া হয়, বিশেষ কোটায় সেটুকুুই পাওয়া যাবে। এর বেশি চাইলে কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র নিতে হবে।
রেশনের কেরোসিন এবং অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। উত্তরবঙ্গে বুন্দাপানি, ডালমোড়, ঢেকলাপাড়া এবং রিংটং এই চারটি বন্ধ চা-বাগানে সাড়ে ১৭ হাজার শ্রমিক আছেন বলে খাদ্য দফতরকে রিপোর্ট দিয়েছে শ্রম দফতর। অথচ খাদ্য দফতর পাঁচ বছর ধরে ৯২ হাজার শ্রমিককে রেশন দিচ্ছে। বাড়তি রেশন-সামগ্রী পাচ্ছে কে? খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “আজব কাণ্ড! শ্রমিক ১৭ হাজার, অথচ রেশন উঠছে ৯২ হাজার জনের। খাদ্য কমিশনারকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।”
কেন্দ্র কি এই কারণেই ভর্তুকি ছাঁটাই করছে? খাদ্যমন্ত্রীর জবাব, “দুর্নীতি ঠেকাতে গিয়ে গঙ্গাসাগর মেলার কেরোসিন বন্ধ হবে কেন? শেষ পর্যন্ত ওই ভর্তুকির ভার রাজ্যের ঘাড়েই চাপবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.