সীমান্ত এলাকায় একই সঙ্গে নারী পাচার ও ধর্ষণের ঘটনা যে বাড়ছে ফের তার প্রমাণ পাওয়া গেল। কাজের লোভ দেখিয়ে এক বাংলাদেশি কিশোরীকে তার দুই পরিচিত মহিলা চোরাপথে এ পারে এনেছিল। বছর পনেরোর ওই মেয়েটিকে গাড়িতে করে কাজের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পথে তাকে এক দালাল ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে বাগদার আমডোব এলাকায় ওই ঘটনায় ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে ফারুখ মণ্ডল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বাড়ি বাগদার নওদাপাড়া এলাকায়। মঙ্গলবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তার ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেন। ওই কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষার পরে তাকে হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ১০ নভেম্বর বসিরহাটের মাটিয়ায় ভাদুড়িয়া গ্রামে এ ভাবেই চোরাপথে এ পারে আসা এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার মনিরুল মোল্লা নামে একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এই নিয়ে ওই ঘটনায় ৫ জন গ্রেফতার হল।
বাগদার ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশের চুয়াডাঙা জেলার জীবননগর থানা এলাকায় বাড়ি ওই কিশোরীর। তার বিয়েও হয়ে গিয়েছে। স্বামীর সঙ্গে ঝামেলা হওয়ায় সে বাপের বাড়িতে থাকত। তার বাব নেই। পরিবারে চরম আর্থিক সঙ্কটে প্রতিবেশীদেরই কয়েকজন তাকে ভারতে মোটা মাইনের কাজ পাইয়ে দেবে বলে। তাতে সে রাজি হয়ে যায়। সেই মতো সোমবার তার পরিচিত দুই মহিলার সঙ্গে দালালের মাধ্যমে বাগদার গাঙ্গুলিয়া সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢোকে। এর পর অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে গাড়িতে তোলা হয়। যদিও ওই দুই মহিলা গাড়িতে ওঠেনি। কিশোরীর অভিযোগ, গাড়িতে কিছুটা যাওয়ার পরে গাড়ি থামিয়ে তাকে রাস্তার ধারে ঝোপে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে ফারুখ নামে ওই দালাল। তার চিৎকারে ছুটে আসেন আশপাশের লোকজন। তাঁরাই ফারুখকে ধরে ফেলেন। মেয়েটিকেও উদ্ধার করেন তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ফারুখকে গ্রেফতার করে ও মেয়েটিকে থানা নিয়ে আসা হয়। মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ অনুমান, আন্তর্জাতিক নারী চক্রের সঙ্গে জড়িত ফারুখ। তাকে জেরা করছে পুলিশ। এ দিন আদালতে ওই কিশোরী জানায়, মোটা মাইনের কাজের লোভ দেখিয়েই তাকে এ দেশে আনা হয়েছিল। পরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। পুলিশ তার সঙ্গে আসা দুই মহিলার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বাংলাদেশি মেয়েদের কাজের লোভ দেখিয়ে এ দেশে এনে পাচার করার কাজে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সীমান্তে কড়া নজরদারির অভাবে শুধু নারী পাচারই নয়, বাড়ছে ডাকাতিও। |